মায়ের শরীর থেকে ভিটামিন D জরায়ুতে থাকা শিশুর মধ্যে সংবাহিত হয় । এর ফলে সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা হয় । জার্নাল অফ নিউট্রিশনে এই সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ।
গবেষকদের মতে, সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে এবং বিশেষ করে অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলাদের মধ্যে ভিটামিন D-র ঘাটতি দেখাই যায় । তবে কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের ক্ষেত্রে বিপদের ঝুঁকি বেশি ।
সমীক্ষার প্রধান গবেষক, সিয়াটেল চিলড্রেনস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মেলিসা মেলোর মতে, “সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির হাত থেকে ত্বককে বাঁচায় মেলানিন রঞ্জক । কিন্তু UB রশ্মিকে আটকে দিলে মেলানিন ত্বকে ভিটামিন D-এর সংশ্লেষের হারও কমিয়ে দেয় ।”
মেলো আরও জানিয়েছেন, “আমাদের গবেষণা এই সমস্যা সম্পর্কে আরও বেশি সচেতনতার প্রসার ঘটায়, এমনকী শিশুর জন্য এবং তার ‘নিউরো কগনিটি’ বিকাশের জন্য জন্য প্রাক জন্মকালীন ভিটামিন D-র কার্যকারিতার কথাও সামনে এসেছে ।”
সমীক্ষা অনুসারে, আমেরিকায় অন্তত 80 শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলারা সম্ভবত ভিটামিন D-র ঘাটতিতে আক্রান্ত ৷
সমীক্ষায় যে সব মহিলারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের মধ্যে অন্তত 46 শতাংশই নিজেদের গর্ভাবস্থায় ভিটামিন D-র ঘাটতিতে ভুগেছিলেন । শ্বেতাঙ্গ মহিলাদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের ক্ষেত্রে শরীরে ভিটামিন D-র মাত্রা কম ।
গবেষকরা এই সমীক্ষায় অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলাদের নিয়োগ করেছিলেন, যা শুরু হয়েছিল 2006 সালে এবং সময়ে সময়ে তাদের শিশুদের স্বাস্থ্য এবং বিকাশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন ।
IQ-র সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য নিয়ামক খতিয়ে দেখার পর অন্তঃস্বত্ত্বাকালে, মহিলাদের শরীরে ভিটামিন D-র উচ্চমাত্রায় থাকার সঙ্গে পরবর্তীকালে তাদের 4 থেকে 6 বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের উচ্চ IQ-র যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে ।
যদিও এ ধরনের পর্যবেক্ষণজনিত সমীক্ষায় কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না, তবুও গবেষকদের দল মনে করে, সমীক্ষার ফলাফলের বৃহত্তর কার্যকারিতা অবশ্যই রয়েছে এবং এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা মনে করেন ।
সমীক্ষার গবেষক লিখেছেন, “মানুষ সূর্যরশ্মি থেকে কিংবা সাপলিমেন্ট গ্রহণ করে শরীরে ভিটামিন D-র ঘাটতি পূরণ করছেন না । বরং তাদের শরীরে ভিটামিন D-র ঘাটতি সম্ভবত থেকেই যাচ্ছে ।”
যে সব খাবারে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন D রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফ্যাট জাতীয় মাছ, ডিম এবং শক্তিবর্ধক উৎস যেমন গরুর দুধ ও ব্রেকফাস্টের দানাশস্য ।
অন্তঃস্বত্ত্বা থাকাকালীন শরীরে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় ভিটামিন D রয়েছে কি না, তা জানতে আরও বেশি গবেষণা প্রয়োজন কিন্তু মেলো মনে করেন, এই সমীক্ষার ফলে অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলাদের খাদ্য তালিকাগত পুষ্টির সুপারিশ করতে সুবিধা হবে ।