ETV Bharat / state

ব্রাউন সুগার পাচার রুখতে রায়গঞ্জের টার্গেট মাঝারি মাপের ডিলাররা

author img

By

Published : Jun 5, 2020, 10:48 AM IST

আন্তর্জাতিক মাদক পাচার রুখতে মরিয়া পুলিশরা ৷ রায়গঞ্জ পুলিশের বর্তমানে টার্গেট হল মাঝারি মাপের ডিলাররা ৷ মূল পাণ্ডাদের কোমর ভাঙতে হাতিয়ার ক্যারিয়াররা ৷

Raiganj police targets medium dealers to curb international brown sugar smuggling
ব্রাউন সুগার পাচার রুখতে রায়গঞ্জের টার্গেট মাঝারি মাপের ডিলাররা

রায়গঞ্জ, 5 জুন : জেলায় বসে আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের পাণ্ডাদের নাগাল পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর । তাই জেলা থেকে ব্রাউন সুগার পাচার পুরোপুরি রুখতে রায়গঞ্জ পুলিশের টার্গেট মাঝারি মাপের ডিলাররা । পুলিশের বক্তব্য, মাঝারি মাপের ডিলার ও তাদের অধঃস্তন ক্যারিয়ারদের শেষ করতে পারলেই আন্তর্জাতিক সীমানার ওপারে পাচার চক্রের মূল পাণ্ডাদের কোমর ভেঙে যাবে । নতুন করে একটি চেন তৈরি করতে তাদের যথেষ্ট সময় লাগবে । যার ফলে অনেক তাড়াতাড়ি ব্রাউন সুগার নেশাসক্তদের হাতে পৌঁছনোর ট্রেন্ডকে নষ্ট করা যেতে পারে । তাই এই মুহূর্তে জেলায় কত মাঝারি মাপের ডিলার সক্রিয় আছে তা যাচাই করতে নেমেছে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও বিভিন্ন থানার তদন্তকারী অফিসারেরা ।

সম্প্রতি, রায়গঞ্জ পুলিশ জেলা থেকে প্রায় 17 লাখ টাকার নিষিদ্ধ ব্রাউন সুগারসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তাদের সাতদিন ধরে পুলিশি হেপাজতে রেখে জেরা করার পর নানান ধরনের তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে । মূলত আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে ওই 2 ব্যক্তির যোগাযোগের বিষয়টি অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে । পুলিশ জানতে পেরেছে মায়ানমার - বাংলাদেশ হয়ে ড্রাগস মুর্শিদাবাদ পৌঁছায় । সেখান থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলাকে করিডোর করে উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই ব্রাউন সুগার পৌঁছায় । পুলিশ জানতে পারে, এই ব্রাউন সুগারকে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য একদম মাদকাসক্ত ক্যারিয়ার ও মাঝারি মাপের ডিলাররা সবথেকে বড় ভূমিকা নেয় । পুলিশের তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, এই ডিলারদের তৈরি করতে অত্যন্ত সংযমী পদক্ষেপ নেয় আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের মূল পাণ্ডারা । যাতে কোনওভাবেই তারা পুলিশ বা দেশের অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার হাতে না পড়ে সে বিষয়টি খেয়াল রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করে । কাকে ডিলার বানানো হচ্ছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তাদের কাছে থাকে । মূলত যাদের অপরাধ জগতের অভিজ্ঞতা থাকে তাদেরকেই মাঝারি মাপের ডিলার হিসেবে তৈরি করা হয় । অনেক সময় আর্থিক সচ্ছলতা বিষয়টিকেও মাথায় রাখা হয় ।

পুলিশের তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, ধৃত 2 মাদক পাচারকারীর মধ্যে একজন হল খুরশেদ আলম ৷ দীর্ঘদিন ধরে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল সে । মূলত যে কোনও ধরনের চোরাই সামগ্রী কেনাবেচা তার প্রথম অপরাধ জগতে ঢোকার রাস্তা হয় । সেখান থেকে পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহার ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকার দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ শুরু হয় । খুব বেশিদিন না হলেও কয়েক বছর ধরে খুরশেদ পুরোপুরিভাবে মাদক ব্যবসায় ঢুকেছে । সে ও তার সহযোগী পুলিশের জেরায় জানায়, ছোট ছোট ক্যারিয়ারের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন এলাকায় ব্রাউন সুগার পৌঁছে দেয় । ব্রাউন সুগার যে সীমান্তের ওপার থেকে আসে সেই বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে দুষ্কৃতীরা । পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের দাবি, ব্রাউন সুগার পাচারকে পুরোপুরিভাবে রুখে দেওয়ার জন্য অবশ্যই এই জেলার মাঝারি মাপের ডিলার ও ক্যারিয়ারদের শেষ করতে হবে । একবার এই চেইন ব্রেক করা গেলেই চেনে নতুন ডিলার ও ক্যারিয়ার তৈরি করতে অনেক সময় লেগে যায় । এবিষয়টি মাথায় রেখেই বর্তমানে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার তদন্তকারীরা কোমর বেঁধেছে । জেলার কোন কোন এলাকায় মাঝারি মাপের ডিলার আছে তা চিহ্নিত করতে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও বিভিন্ন থানার তদন্তকারী অফিসার দিনরাত কাজ করে চলেছেন । যে কোনওভাবে ব্রাউন সুগার পাচারের চেক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা ।

এই বিষয়ে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার বলেন, " বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধভাবে ব্রাউন সুগার আমাদের দেশে পৌঁছায় । মূলত মুর্শিদাবাদ এলাকা থেকে সেই ব্রাউন সুগার উত্তর দিনাজপুর জেলাকে করিডর করে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছায় । এই ব্রাউন সুগার বিভিন্ন জায়গায় পাচারের জন্য মাঝারি মাপের ডিলার ও ক্যারিয়ার ব্যবহার করা হয় । আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের কোমর ভাঙার জন্য অবশ্যই এই মাঝারি মাপের ডিলারদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন । আমরা মূলত এই কাজটি বর্তমানে করছি । বিভিন্ন শহর এলাকায় ক্যারিয়ার ও ডিলারদের খোঁজ আমরা পেয়েছি । তাদের ওপর নজরদারি চলছে । মাদকের বিরুদ্ধে আমরা পুরোপুরিভাবে অভিযান চালাচ্ছি । "

TAGGED:

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.