রায়গঞ্জ, 18 জুলাই: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল-কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপির মধ্যে বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৷ মৃত্যুও হয়েছে ৷ এদিকে সেই ঘটনার রেশ থাকতে থাকতেই বেঙ্গালুরুতে গিয়ে বিজেপিকে পরাজিত করতে জোট বাঁধছে বিভিন্ন বিরোধী দল ৷ এ নিয়ে ইতিমধ্যে কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ রাজ্যের নিচুতলার তৃণমূল ও অন্য দলগুলির কর্মী-সমর্থকরা এই বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন ? বিশেষত, সেই পরিবারগুলি, যাঁদের স্বজন পঞ্চায়েত ভোটের হিংসার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৷ তা জানতে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহের সঞ্চার হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সিপিএম কর্মী মনসুর আলমের ৷ তিনি পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন ৷ সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে গুলি করে ৷ বামেদের অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের আশ্রিত ৷ 21 জুন গুলিতে মৃত্যু হয়েছে মনসুরের ৷ সেই ঘা দগদগে হয়ে রয়েছে পরিবারের সদস্যদের কাছে ৷
আরও পড়ুন: বাংলায় প্রশ্নের মুখে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ঐক্য
এমনই আবহে বেঙ্গালুরুতে এক টেবিলে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে দেখে মর্মাহত মনসুরের পরিবার ৷ যে দলের 'দুষ্কৃতীদের হাতে তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে', তাদের সঙ্গে এই দহরমহরম কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছে না মনসুরের পরিবার ৷ একে ঘৃণার চোখে দেখছেন বলে জানিয়েছেন মনসুরের পরিবারের সদস্যরা ৷
মনসুরের দাদু মহম্মদ গিয়াসুদ্দিন বলেন, "এই বৈঠক আমি মানি না ৷ তৃণমূলের সঙ্গে বৈঠক করাটা এই মুহূর্তে ঠিক নয় ৷ সারা রাজ্যে মানুষ খুন হয়েছে । তাঁদের সম্পত্তি লুট হয়েছে । ভোট করতে দেয়নি ৷ আমি এই বৈঠককে ঘৃণার চোখে দেখছি ৷" তিনি আরও জানান, মনসুর খুনের তদন্তই শুরু হয়নি এখনও ৷ পুলিশ আধিকারিক তদন্ত করতে আসবেন কথা দিলেও আসেননি ৷
বেঙ্গালুরুতে 26টি দলের বৈঠক নিয়ে প্রবীণ সিপিএম কর্মী মহম্মদ গিয়াসুদ্দিনের মত, "প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কোনও মুখ তুলে ধরা হয়নি ৷ মানুষকে ভাওতা দেওয়ার জন্য এই বৈঠক হচ্ছে ৷" তিনি বরং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যকেই সমর্থন করেছেন ৷ গতকাল প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের হামলায় সিপিএম এবং কংগ্রেসের কর্মীদের মৃত্যু হচ্ছে ৷ আর সেই তৃণমূলের নেত্রীর সঙ্গে সিপিএম এবং কংগ্রেসের নেতারা বৈঠক করছেন ৷ কার্যত একই মত মনসুরের পরিবারের।
আরও পড়ুন: 'বিরোধী জোট ক্ষমতালোভী, এনডিএ রামধনু'; এনডিএ বৈঠকে মন্তব্য মোদির
উল্লেখ্য, গত 15 জুন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় চোপড়া ব্লকের কাঠালবাড়ি গ্রামে মনসুর আলমকে লক্ষ্য করে গুলি করে কয়েকজন দুষ্কৃতী ৷ এরপর 21 জুন শিলিগুড়িতে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ শাসকদলের নেতারা এই ঘটনায় যুক্ত থাকায় পুলিশ ঘটনার তদন্তে অনীহা দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবারের ৷
