ETV Bharat / state

Illegal Construction: তৃণমূল নেতার দাদার বাড়ি নির্মাণ বৈধ, দাবি বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যানের

author img

By

Published : Nov 20, 2022, 8:43 PM IST

সরকারি নথিতে পুকুর ! অথচ চেয়ারম্যানের দাবি, শালী জমিতেই নিয়ম মেনে সরকারি প্রকল্পের বাড়ি তৈরি হচ্ছে । আজব দাবি ঘিরে নতুন করে বিতর্ক (Controversy over illegal construction on Barasat) । অবাস্তব দাবি বলে উড়িয়ে দিল স্থানীয়রা ।

Illegal Construction
Illegal Construction

বারাসত, 20 নভেম্বর: অবৈধভাবে নয়, বৈধভাবেই তৃণমূল নেতার দাদার (TMC leader brother house) সরকারি প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে পুকুরের ধারে শালী জমিতে । পুলিশের তদন্তের আগেই ইটিভি ভারতের সামনে এমন দাবি করে কার্যত তাতে বৈধতার সিলমোহর দিয়ে দিলেন বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যান (Barasat Municipality Chairman) তথা তৃণমূল নেতা অশনি মুখোপাধ্যায় । দাবির সময় জমির যাবতীয় নথিপত্রও তিনি তুলে ধরেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির সামনে । যা ঘিরে নতুন করে দেখা দিয়েছে বিতর্ক ।

যদিও চেয়ারম্যানের দাবিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পৌরসভার 13 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ । সরকারি নথিতে জমির চরিত্র শ্রেণি পুকুর হিসেবে দেখানো রয়েছে বলে দাবি তাঁদের । সেই নথি সমেত অবৈধ নির্মাণ হওয়ার যাবতীয় কাগজপত্র ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জমাও দিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা । অভিযোগও দায়ের হয়েছে বারাসত থানায় । পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে । কিন্তু, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই বৈধ নির্মাণ বলে চেয়ারম্যান সিলমোহর দিয়ে দেওয়ায় হতবাক সকলে (Controversy over illegal construction on Barasat) ।

Illegal Construction
সরকারি নথিতে পুকুর

প্রসঙ্গত, পৌরসভার 13 নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপুর এলাকায় পুকুরের মধ্যে সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি তৈরি করছেন ওখানকারই যুব তৃণমূল সভাপতির দাদা জয়দীপ পাল । যা ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক । কীভাবে পুকুরের মধ্যেই সরকারি প্রকল্পের বসতবাড়ি নির্মিত হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যেমন সরব হয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ (Illegal Construction) । তেমনই পৌরসভা এবং শাসকদলের স্থানীয় চিকিৎসক কাউন্সিলরের ভূমিকাও সন্দেহের উর্ধ্বে রাখছেন না তাঁরা ।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, "কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠ ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল সভাপতি প্রদীপ পাল ক্ষমতার জোরে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে নিজের দাদাকে সরকারি বাড়ি পাইয়ে দিয়েছেন । আর সেই বাড়িই নির্মাণ করা হচ্ছে পুকুরের একধারে । কোনওরকম আইন না মেনে ।" যার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা । অবৈধ নির্মাণে মদত দেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি কাউন্সিলর সুমিত সাহার নামে পোস্টারও পড়ে ওয়ার্ডে । এসবের মধ্যেই এবার কাউন্সিলরের পাশে দাঁড়িয়ে ওই বাড়ি নির্মাণের স্বপক্ষে তথ্য দিয়ে যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করলেন বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় ।

এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের সামনে তিনি দাবি করে বলেন, "2018-19 আর্থিক বর্ষে ওই সরকারি প্রকল্পের বাড়িটি অনুমোদন পেয়েছিল । বাড়িটি তৃণমূল নেতা প্রদীপ পালের নয় । নির্মিত হচ্ছে তাঁর দাদা জয়দীপ পালের নামে । পুকুরের মধ্যে অবৈধ নির্মাণের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ঠিক নয় । আমাদের কাছে যে নথিপত্র রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে পুকুরের ধারে 0.01 একর শালী জমির মধ্যেই সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে সরকারি প্রকল্পের বাড়িটি নির্মিত হচ্ছে । সেই জমির অংশ হস্তান্তর হয়েছিল 2008 সালে । তখন নবনীল বন্দোপাধ্যায় নামে এক ব‍্যাক্তির কাছ থেকে তা কিনেছিলেন প্রদীপ পাল-সহ তাঁর চার ভাই । ব্লু প্রিন্ট, জমির দলিল, প্লট নম্বর সবকিছুতেই তা শালী জমি হিসেবে রয়েছে ।"

বাড়ি নির্মাণ বৈধতার সিলমোহর বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যানের

এরপরও কীভাবে তা নিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন পৌরসভার চেয়ারম্যান । যদিও, তাঁর দাবির সঙ্গে সহমত নন রামকৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ । এই বিষয়ে বিশ্বজিৎ চৌধুরী নামে এক বাসিন্দা বলেন, "অসত্য দাবি করছেন চেয়ারম্যান । বিপদে পড়ে উনি এখন ওঁনার দলের নেতাকে বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছেন‌ । আমাদের কাছে সমস্ত কাগজপত্র রয়েছে । সবচেয়ে বড় কথা,সরকারি নথিতেই সেটি শ্রেণি পুকুর হিসেবে দেখানো রয়েছে । এরপরও তিনি কি করে দাবি করেন, সেটি শালী জমি ! আমরা চাই পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করে এই অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করার ব্যবস্থা করুক ।"

আরও পড়ুন: ইটিভি ভারতের খবরের জের, অবৈধ নির্মাণে তৃণমূল নেতাকে থানায় তলব

এদিকে, চেয়ারম্যানের দাবির পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে বলে মনে করছেন গেরুয়া শিবিরও । এই বিষয়ে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র বলেন, "উনি কোথা থেকে কি তথ্য পেলেন তা আমরা জানি না । এটুকু জানি, ওখানকার বাসিন্দারাই এই অবৈধ নির্মাণ নিয়ে আন্দোলন করছে । তাঁদের কাছে তার প্রমানপত্রও রয়েছে । এখন রাতারাতি সেটি শালি জমি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চলছে । বোঝাই যাচ্ছে ডাল মে কুছ কালা হ‍্যায় ! সঠিকভাবে তদন্ত করলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.