ETV Bharat / state

School Closed: 2 বছর ধরে নেই শিক্ষক, তালা ঝুলছে জুনিয়র হাইস্কুলে

author img

By

Published : Apr 4, 2023, 7:50 PM IST

Etv Bharat
দু'বছর ধরে বন্ধ স্কুল

শিক্ষকের অভাবে বন্ধ গোবিন্দপুর পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় । স্কুল খোলার জন্য বারবার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের । এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ।

শিক্ষকের অভাবে দু'বছর ধরে বন্ধ স্কুল

পুরুলিয়া, 4 এপ্রিল: আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে তৎকালীন বাম আমলে শুরু হয়েছিল গোবিন্দপুর পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় । তারপর নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে পড়ায় শিক্ষক শূন্য অবস্থায় বিগত দু'বছর থেকে তালা ঝুলছে আদিবাসী এলাকার এই স্বপ্নের বিদ্যালয়ে । খোদমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর বিধানসভা এলাকায় গড়ে ওঠা সেই বিদ্যালয় বর্তমানে আগাছায় পরিণত হয়েছে । বিদ্যালয়কে বাঁচাতে এলাকার মানুষ মন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ । নীরব মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুও । বর্তমান সরকার শিক্ষা চায় না, তাই একের পর এক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে পড়ছে, অভিযোগ জেলা সিপিআইএম নেতৃত্বের ।

1984 সালে পুরুলিয়ার মানবাজার 1 নম্বর ব্লকের অন্তর্গত গোবিন্দপুর গ্রামে এলাকার মানুষদের দান করা প্রায় 3 একর জমির উপর গড়ে উঠেছিল গোবিন্দপুর পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় । 6 জন শিক্ষক, 6 জন শিক্ষাকর্মী এবং 150 জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে চালু হয়েছিল এই বিদ্যালয় । ধীরে ধীরে তৈরি হয় বিদ্যালয় ভবন, রান্নাঘর থেকে শৌচালয় । কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় 2011 সাল থেকে ।

2011 সালে একজন এবং 2012 সালে প্রধান শিক্ষক-সহ চারজন শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন । বাকি 1 জন শিক্ষক এবং 2 জন শিক্ষাকর্মীর দ্বারা বিদ্যালয় চালানো কঠিন হয়ে পড়ে । যদিও বিদ্যালয়কে সচল রাখার জন্য 2014 সালে 2 জন অতিথি শিক্ষক দেওয়া হলেও 2016 সালে তাদেরও মেয়াদ শেষ হয়ে যায় । বিদ্যালয়ে যে 1 জন স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন তিনিও 2017 সালে অবসর গ্রহণ করেন । শিক্ষক না থাকায় পঠনপাঠন প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে । ধীরে ধীরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমে 40 জনে দাঁড়ায় ।

শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় 2017 সালের নভেম্বর মাসে ওই 40 জন ছাত্রছাত্রীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি করানো হয় । বিদ্যালয়ে যে দু'জন স্থায়ী শিক্ষাকর্মী ছিলেন তাঁরাও 2019 এবং 2021 সালে অবসর গ্রহণ করেন । সেই থেকে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বিদ্যালয়টি । আগাছায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে স্কুলের চারপাশ । চুরি হয়ে গিয়েছে বিদ্যালয়ের চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ, দরজা, সৌর লাইট, এমনকি জলের ট্যাঙ্কও ।

আরও পড়ুন: শিক্ষকের অভাবে বন্ধ স্কুল, গভীর জঙ্গল পেরিয়ে পড়তে যাচ্ছে কচিকাঁচারা

বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবার, এলাকার মানুষ থেকে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়া, সকলের দাবি বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করে পুনরায় পঠন-পাঠন চালু করা হোক । এই বিষয়ে মানবাজার বিধানসভার বিধায়ক তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর কাছে বারবার আবেদন জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের । অন্য়দিকে, বিদ্যালয় বন্ধের জন্য বর্তমান সরকার দায়ী বলে অভিযোগ পুরুলিয়া জেলা সিপিআইএম নেতৃত্বের । যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ।
প্রশ্ন উঠছে, আদিবাসী এলাকায় তৈরি হওয়া এই স্কুলের ভবিষ্যতও কি এখানকার ছেলেমেয়েদের মতো অন্ধকারেই ডুবে থাকবে ?

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.