ETV Bharat / state

কোরোনা বিধির তোয়াক্কা নেই, পিকনিক স্পটে উপচে পড়ছে ভিড়

author img

By

Published : Dec 25, 2020, 6:19 PM IST

কোরোনা বিধি থাকলেও বড়দিনে তা তোয়াক্কা না করেই চড়ুইভাতিতে মাতলো আট থেকে আশি ৷ বড়দিনের সকাল হতেই মেদিনীপুরের বিভিন্ন পিকনিক স্পটে লোকের ভিড় ৷ যদিও এই জেলার বিভিন্ন চার্চে প্রার্থনা হয়েছে নিয়ম মেনে ৷

Picnic
পিকনিক স্পটে উপচে পড়ছে ভিড়

মেদিনীপুর, 25 ডিসেম্বর : কোরোনা বিধি তোয়াক্কা না করে চড়ুইভাতিতে মাতল মেদিনীপুরের বহু মানুষ। বড়দিনের সকাল হতেই চার চাকা-দু'চাকায় সওয়ারি হয়ে তারা হাজির হয়েছেন বিভিন্ন পিকনিক স্পটে। বিশেষ করে গোপগড়, গুড়গুড়ি, পাল নদী ধার ও জলাধারগুলোর চারপাশের এলাকা ছিল পিকনিক পার্টির দখলে। সকাল থেকে নাচাগানা, খাওয়া-দাওয়া আর জমিয়ে আড্ডা ৷ গল্প গুজব সঙ্গে হৈ হুল্লোড়। তবে কোরোনা বিধির কোনও বিধিনিষেধ দেখা গেল না তাদের মধ্যে। শীতের আমেজ গায়ে মেখে ব্যতিক্রমী বড়দিনে বাঙালি ৷ উৎসবপ্রিয় বাঙালির বড়দিন। অতিমারির আবহে শুধু বাংলা নয় সারা বিশ্বেই পালিত হচ্ছে, নিয়ম মেনে, সচেতনতার সঙ্গে। প্রার্থনা বা উপাসনা হলেও, তা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই বিভিন্ন চার্চে গতকাল রাত্রি থেকে পালিত হয়েছে। কলকাতার সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ আজ দুপুর 2 টোর পরই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুরেও উপাসনা হয়েছে নিয়ম মেনে। 24 ডিসেম্বর রাত্রি 8 টাতেই প্রার্থনা সম্পন্ন হয়েছে, রাত্রি 12 টার পরিবর্তে। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে, বন্ধ এবার বিখ্যাত চার্চের মেলাও। যদিও, বছর শেষের কনকনে ঠান্ডায় সাড়ম্বরে বড়দিন পালনের উপযুক্ত পরিবেশ ছিল, তা সত্ত্বেও মারণ ভাইরাস মানুষকে এবার অনেকখানি সংযত ও নিয়ন্ত্রিত রেখেছে। 10-12 ডিগ্রির শীতল পরিবেশ আর রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়াতেও তাই উচ্ছ্বাস আর উৎসবের রং এবার কিছুটা ম্লান হয়েছে।

এ সবের মধ্যেই বড়দিনের পিকনিকে মেতেছেন মানুষ। কেউ বা নিজেদের বাড়িতেই বা বাড়ির সামনে বাগান অথবা ছাদে। কেউ বা, পার্ক বা কোনও উদ্যানে। উৎসবমুখর বাঙালি আনন্দ করছেন, তবে পরিচিত গন্ডীর মধ্যে অথবা সীমাবদ্ধতা বজায় রেখে। মেদিনীপুর শহরের গোপগড়ের ইকোপার্ক, মোহনপুরের ক্ষুদিরাম পার্ক, নদীর ধারের বিদ্যাসাগর পার্ক, মণিদহের পার্ক অথবা কংসাবতী নদীর পাড়গুলিতে পিকনিক এবারও হচ্ছে। তবে, সংখ্যাটা অনেক কম। চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কানন দীর্ঘদিন পরে খুলেছে, স্বভাবতই ভিড় আছে। কিন্তু, অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। অপরদিকে সকাল থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা থানার দলবাঁধ,ধামকুড়িয়া সহ একাধিক পিকনিক স্পটে মোতায়েন রয়েছে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ। মানুষের আনন্দে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে তার নজরদারির জন্য পিকনিক স্পটগুলিতে মোতায়েন পুলিশকর্মীরা ৷ তাদের বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় ও মিষ্টি,কেক কেটে তাদের হাতে তুলে দিয়ে ডিউটির ফাঁকে আজকের দিনটি ভাগ করে নেন চন্দ্রকোনা থানার ওসি প্রশান্ত পাঠক।এমনই ছবি ধরা পড়লো চন্দ্রকোনা থানার দলবাঁধ ইকো টুরিজম পার্কে। এদিন ওই পার্কে ভিড় জমিয়েছেন ভোজনরসিক মানুষ, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে টহল ও নজরদারির জন্য রয়েছে পুলিশ কর্মীরা। তাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে দেখা গেল থানার ওসিকে। বড়বাবুর এমন উদ্যোগে খুশি কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরাও। সব মিলিয়ে বলা যায়, 'বাহির-মুখী' বাঙালি বহুবছর আজকের দিনে 'ঘর-মুখী'। ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে, পরিবারের সদস্যদের নিয়েই সময় কাটানোটাই এবারের বড়দিনের মূলসুর। সকলেই সেই একই সুরে তাই বলছেন, এই 'বিশ' টা গেলে বাঁচি, একুশে হবে বাঁধভাঙা আনন্দ !

আরও পড়ুন : কোরোনার ভ্যাকসিন কবে আসবে জানি না, টিএমসি কবে বিদায় নেবে জানি : দিলীপ

অন্যদিকে, ব্রিটেন তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিডের নতুন স্ট্রেইন নিয়ে চিন্তিত ভারতবাসী তথা বাঙালিও । যদিও, লন্ডনের সঙ্গে আপাতত বিমান-বিচ্ছিন্ন ভারত কিছুটা নিশ্চিন্তে আছে। বাঙালিরা আরও স্বস্তিতে। দৈনিক গড় সংক্রমণ কমতে কমতে 1600 'র আশেপাশে। সুস্থতার হার 95 শতাংশ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গত 7 দিনে কোরোনা সংক্রমিত মাত্র 142 জন (25, 32, 2, 10, 25, 26, 22)। সুস্থতার হার এই মুহূর্তে প্রায় 97 শতাংশের কাছাকাছি ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.