ETV Bharat / state

Laxmi Puja of Benagram: লক্ষ্মীপুজোতেই ফেরেন বাসিন্দারা! বছরভর জনশূন্য় থাকে এই 'ভূতের গ্রাম'

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 28, 2023, 5:56 PM IST

Laxmi Puja of Benagram
কুলটির বেনাগ্রাম পরিচিত ভূতের গ্রাম বলেই

গ্রামে নাকি ভূত আছে ! এমন গুজবের জেরেই 2005 সালে খালি হয়ে যায় আসানসোলের কুলটির বেনাগ্রাম ৷ তবে প্রাণ বাঁচাতে গ্রাম ছাড়লেও একটি দিন এই পুরোনো গ্রামের টানে ফিরে আসেন বাসিন্দা ৷ আর এই ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্মীপুজোর দিন ৷

কুলটির বেনাগ্রামে একদিনই গ্রামে ফেরেন বাসিন্দারা

আসানসোল, 28 অক্টোবর: রাস্তার দু'পাশে ভেঙে পড়া বাড়ি-ঘর ৷ বহু আশা নিয়ে তৈরি পাকাবাড়িগুলির এখন বেহাল দশা ৷ কারণ এই বাড়িগুলিতে এখন আর কেউ থাকে না । একটা পুরো গ্রাম একেবারে জনমানব শূন্য। আসানসোলের কুলটির বেনাগ্রাম মানবশূন্য হয়ে যায় 2005 সালে । তারপর থেকে আর গ্রামে ফেরেননি বাসিন্দারা । গুজব এই গ্রামে নাকি ভূত আছে ৷ শুধু বছরে একদিন লক্ষ্মীপুজোর দিন গ্রামে ফিরে আসে গ্রামের মানুষজন । সন্ধ্যাবেলা থেকে পুজো হয় । রাতে ভোগের খিচুড়ি ভাগ করে খায় গ্রামের লোকেরা । সকালে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর ফের গ্রামবাসীরা গ্রাম ছেড়ে চলে যায় । বেনাগ্রাম থেকে যায় জনমানবহীন হয়েই ।

আসানসোলের কুলটি থানার অন্তর্গত নিয়ামতপুর শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূর বেনাগ্রাম ৷ 2005 সালে হঠাৎই লোকেরা গ্রাম ছেড়ে পালাতে শুরু করে । সাধের বসতবাড়ি ছেড়ে পালাতে হয় জীবন বাঁচাতে । কারণ ততক্ষণে গুজব পৌঁছেছে মারাত্মক পর্যায়ে ৷ বেনাগ্রামে নাকি ভূত আছে ! আর ভূতের ভয়েই নাকি গ্রাম ছাড়া হয়েছে মানুষজন।

যদিও আজ আর গ্রামবাসীরা সে কথা মানতে চান না । তাঁদের মতে কোনও অশরীরী নয়, তাঁদের গ্রাম যে 'ভূত' এর কবলে পড়েছিল তার নাম অনুন্নয়ন ৷ গ্রামে না-ছিল রাস্তা বা পানীয় জল না-ছিল বিদ্যুৎ সংযোগ। আবার গ্রামের পাশ দিয়ে গিয়েছে রেললাইন। সেখানে নানা অসামাজিক কাজকর্ম হত । প্রায়শই পড়ে থাকত মৃতদেহ । ফলে এই ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের আতঙ্কই তাদের বাধ্য করে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে ।

আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে দুর্গা পুজোর দ্বিতীয় বর্ষের কার্নিভালে জনজোয়ার

যদিও গ্রামবাসীরা চলে যাওয়ার পর প্রশাসনিক টনক নড়ে। গ্রামে নতুন পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়। বিদ্যুতের খুঁটিও লাগানো গ্রামে। কিন্তু গ্রামবাসীরা আর ফিরতে চাননি। শুধু বছরের একটি দিন গ্রামে ফিরে আসেন গ্রামের মানুষজন। লক্ষ্মীপুজোর দিন এখানকার মানুষ আবার গ্রামে আসেন। গ্রামের মাঝে ছোট্ট লক্ষ্মী মন্দিরের রং করা হয়। জেনারেটর নিয়ে আসা হয় । রঙবেরঙের লাইট দিয়ে সাজানো হয় গোটা গ্রাম।

সন্ধ্যের পর পুজো শুরু হয়। পুজোর শেষে ভোগের খিচুড়ি ভাগ করে খায় সকলে। সারারাত তারা জেগেই থাকেন। ফের সকালবেলা প্রতিমার নিরঞ্জন করে আবার গ্রাম ছেড়ে চলে যান তারা। আশেপাশের বাসিন্দারা জানিয়েছেন ওই রাস্তা দিয়ে তারা প্রত্যহ যাতায়াত করেন। কখনও গ্রামে ভূত কিংবা অন্য কিছুর অস্তিত্ব তারা টের পাননি । ভয়ও পান না। প্রশাসনও নাকি গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিল ৷ তবে তারা আর ফিরে আসেননি ৷

আরও পড়ুন: জমজমাট পুজো কার্নিভালে মাতল আসানসোলবাসী

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.