ETV Bharat / state

Malda Flood: চরম বিপদসীমা পেরলো গঙ্গা-ফুলহর, মালদায় বানভাসি 25 গ্রাম

author img

By

Published : Sep 5, 2022, 9:37 PM IST

malda-flood-and-erosion-situation-getting-worse
চরম বিপদসীমা পেরলো গঙ্গা-ফুলহার, মালদায় বানভাসি 25 গ্রাম; চলছে ভাঙনও

মালদায় (Malda Flood) চরম বিপদসীমা পেরলো গঙ্গা ও ফুলহর ৷ যার জেরে বানভাসি 25টিরও বেশি গ্রাম ৷ একইসঙ্গে চলছে ভাঙনও (Malda erosion)৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন তৈরি রয়েছে বলে জানালেন জেলাশাসক ৷

মালদা, 5 সেপ্টেম্বর: চূড়ান্ত বিপদসীমা পেরিয়ে গেল গঙ্গা ৷ চলতি মরশুমে প্রথমবার ৷ বিপদসীমা পার করেছে দোসর ফুলহরও ৷ তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জেলায় (Malda Flood)৷ ভাঙনের ধাক্কা ছিলই ৷ এ বার শুরু হয়েছে বন্যা (Malda erosion)৷ এর মধ্যেই গঙ্গার জল প্রবল বেগে ঢুকতে শুরু করেছে কালিয়াচক 3 নম্বর ব্লকের বীরনগর, রতুয়া 1 ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশকিছু গ্রামে ৷ ডুবেছে মানিকচকের গদাই চরও ৷ জেলাশাসক জানিয়েছেন, যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশাসন সম্পূর্ণ তৈরি রয়েছে ৷

গতকাল রাতেই গঙ্গার জলস্তর চূড়ান্ত বিপদসীমা 25.30 মিটার ছাড়িয়ে যায় ৷ আজ দুপুর 12টায় গঙ্গার জলস্তর ছিল 25.49 মিটার ৷ একই সময়ে ফুলহর তার বিপদসীমা 27.43 মিটার ছাড়িয়ে 27.52 মিটার উচ্চতায় বইছে ৷ তবে এই নদী এখনও চূড়ান্ত বিপদসীমা 28.35 মিটার থেকে 0.83 মিটার নীচ দিয়ে বইছে ৷ তবে এই মুহূর্তে মহানন্দার জলস্তর নিয়ে তেমন কোনও উদ্বেগ নেই (Malda flood situation getting worse)৷

এ দিকে, ভূতনি চরের পশ্চিম রতনপুর এলাকায় গঙ্গার ভাঙন অব্যাহত ৷ যে কোনও সময় নদী তার উপরের দুর্বল বাঁধ ভেঙে ফেলতে পারে ৷ সে কথা চিন্তা করেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সপার্ষদ জেলাশাসক ৷ ওই এলাকায় 48 ঘণ্টার মধ্যে 500 মিটারের একটি অস্থায়ী রিং বাঁধ নির্মাণের জন্য সেচ দফতরকে নির্দেশ দেন ৷ পশ্চিম রতনপুর, কেশরপুর, কালুটোনটোলা এলাকায় ভাঙন উদ্বাস্তুদের ওই চরেরই চামা এলাকায় অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেন ৷ কেশরপুর বাঁধে অস্থায়ীভাবে বাস করা দুর্গত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ৷ তাঁদের দু’বেলা রান্না করা খাবার বিলি করার জন্য পঞ্চায়েত প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি ৷

এরই মধ্যে বীরনগর 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দটোলায় গঙ্গার জল প্রবল বেগে ঢুকতে শুরু করেছে ৷ বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজমি এখন জলের তলায় ৷ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষজন ৷ তবে আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বিলাইমারি আর মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৷ দুই পঞ্চায়েতের 80 শতাংশ এলাকা এখন জলের নীচে ৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ৷ কৃষিজমি দূরের কথা, কয়েক হাজার বাড়িতেও ঢুকে পড়েছে নদীর জল ৷ গঙ্গা আর ফুলহারের জল ভাসিয়েছে ওই এলাকা ৷ মানুষজন ঘর ছাড়তে শুরু করেছেন ৷ যাচ্ছেন উঁচু, নিরাপদ কোনও জায়গায় ৷ একই পরিস্থিতিতে মানিকচক ব্লকের গদাই চরেও ৷ এই মুহূর্তে ওই চরটি সম্পূর্ণ জলের নীচে ৷

আরও পড়ুন: মালদা বন্যাত্রাণে দুর্নীতির মামলায় সিএজি তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

মহানন্দটোলার এক বন্যাদুর্গত আরতি মণ্ডল বলছেন, “আটদিন ধরে গঙ্গা আর ফুলহারের জল বাড়ছে ৷ দু’দিন ধরে তার বেগ অনেকটাই বেশি ৷ আগে গ্রামে জল ঢুকেছিল ৷ এখন ঘরে ঢুকে গিয়েছে ৷ আমরা উঁচু জায়গায় চলে গিয়েছি ৷ রান্না করতে পারছি না ৷ শুকনো খাবার খাচ্ছি ৷ সবচেয়ে সমস্যা পানীয় জল আর গোখাদ্যের ৷ এখনও পর্যন্ত প্রশাসনিক কোনও সহায়তা পাইনি ৷”

মালদায় বানভাসি 25 গ্রাম

মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণা সাহা জানাচ্ছেন, “গঙ্গা আর ফুলহরের জোড়া ধাক্কায় আমার পঞ্চায়েতের প্রায় সম্পূর্ণ এলাকা এখন জলের তলায় ৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ৷ মানুষের সবচেয়ে সমস্যা হচ্ছে পানীয় জলের ৷ দুটো ফ্লাড সেন্টার খোলা হলেও মানুষ বাড়ি ছেড়ে যেতে চাইছে না ৷ গোটা বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি ৷ তাঁর কাছে ত্রাণের আর্জিও করেছি ৷”

জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া আজ ইটিভি ভারতকে জানান, “গঙ্গার ভাঙন থেকে ভূতনিকে বাঁচাতে 500 মিটারের একটি রিং বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে ৷ আশা করছি, 48 ঘণ্টার মধ্যে সেই বাঁধ তৈরি হয়ে যাবে ৷ নদীর জল কালিয়াচকের বীরনগর আর রতুয়ার বিলাইমারি ও মহানন্দটোলায় ঢুকতে শুরু করেছে ৷ রতুয়ায় দুটি ফ্লাড সেন্টার খোলা হয়েছে ৷ মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হচ্ছে ৷ আমাদের হাতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে ৷ খুব দ্রুত বিপন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে ৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.