মালদা, 11 নভেম্বর : মালদা জেলায় ঘাঁটি গেড়েছে বেআইনি আধার কার্ড তৈরির চক্র ৷ এই চক্রে জড়িত রয়েছে আন্তঃজেলা চক্রীরাও ৷ তার প্রমাণ মিলেছে ৷ গত পরশু গভীর রাতে মালদা শহর থেকে এই চক্রের এক পাণ্ডাকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ ৷ ধৃত ব্যক্তি মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা ৷ জেলা আদালতের মাধ্যমে গতকাল ধৃতকে পাঁচদিনের হেপাজতে নিয়েছে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ ৷ গোটা ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে প্রশাসনিক মহলে ৷ এই চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত, সেটাই এখন জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন ৷
জেলায় যে ভুয়ো আধার কার্ড তৈরির চক্র ঘাঁটি গেড়ে বসেছে, সম্প্রতি তার প্রমাণ মিলেছিল হরিশ্চন্দ্রপুরে ৷ সেখানকার এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি এমনই এক আধার কার্ড তৈরির কেন্দ্রে হানা দেয় ওই থানার পুলিশ ৷ জানা যায়, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন ছাড়া মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়ে আধার কার্ড তৈরি করা হচ্ছিল ওই কেন্দ্রে ৷ পুলিশ সেখান থেকে আধার কার্ড তৈরির সামগ্রীসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে ৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চোখ কপালে ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের ৷ জানা যায়, শুধু মালদা নয়, এই চক্রের শিকড় দেশজুড়ে ছড়িয়ে আছে ৷ এরপরেই পুলিশ সুপারের নির্দেশে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ তদন্তভার তুলে দেয় সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশের হাতে ৷
তদন্ত শুরু করে সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিকরা জানতে পারেন, এই জেলায় এই চক্রের মূল ডেরা হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাতেই ৷ সেখান থেকে চক্রের সদস্যরা জেলার বিভিন্ন জায়গায় নির্দিষ্ট এক বা দু’দিন কার্ড তৈরির ক্যাম্প করে ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ধৃত দু’জনকে জেরা করে উঠে আসে একাধিক ব্যক্তির নাম ৷ তারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা ৷ এরই মধ্যে জানা যায়, এই অবৈধ ব্যবসার কাজে মালদায় এসেছে সাদ্দাম হোসেন নামে এক চক্রী ৷ তার বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর থানার রঘুনাথগঞ্জের রহমানপুর এলাকায় ৷ নিজের কাজ সেরে গত পরশু গভীর রাতে গাড়ি নিয়ে মুর্শিদাবাদ ফেরার সময় মালদা শহরের রথবাড়ি মোড়ে তাকে গ্রেপ্তার করে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ ৷ সাতদিনের পুলিশি হেপাজতের আবেদন জানিয়ে গতকাল জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঁচদিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে ৷
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, বেআইনিভাবে আধার কার্ড তৈরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ আদালতের মাধ্যমে হেপাজতে নিয়ে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷ এই চক্রে আর কে কে জড়িত, চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত, তা জানার চেষ্টা চলছে ৷ তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় ৷
