কলকাতা, 6 মার্চ: রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সিদ্ধান্ত না পেয়ে স্পিকারের পক্ষে আনা আস্থা প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিধানসভায় বিরোধী দলের আনা স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল (No Confidence Motion against Speaker) । সেই মতো বিরোধী দলের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যার প্রমাণ দিতে বিধায়কদের উপস্থিত থাকতেও বলা হয় । কিন্তু অধিবেশনের প্রথম ভাগে এই নিয়ে আলোচনা শুরু হলে হইচই শুরু হয়ে যায় । এই অবস্থায় অধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখেন ।
এরপর বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিরোধী দল বিজেপির (BJP) বিধায়কেরা । বাইরে এসে তাঁরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন । এরপর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বিধানসভার রুলকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখালেন, তাতে বলার কিছু ভাষা নেই । স্বাধীনতার পরে প্রথমবার বুলেটিনে প্রকাশ করার পরেও অধ্যক্ষ মহোদয় তাঁর বিরুদ্ধে আনা 16 টা অভিযোগের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের উপর প্রয়োজনীয় বিধায়কদের মতামত গ্রহণ করলেন না ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে আইন মেনে অনাস্থার নোটিশ দিয়েছিলাম । সেই মতো বিজনেস অ্যাডভাইসারি কমিটিতে আলোচনা করে আজকের দিনটি নির্দিষ্ট করে বুলেটিন প্রকাশ করে আমাদের দেওয়া হয়েছিল । আমরা সত্তরের কাছাকাছি বিজেপি বিধায়ক বিধানসভায় উপস্থিত ছিলাম । কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা গৃহীত হল না ।’’
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর অঙ্গুলিহেলনেই এমন ঘটনা ঘটেছে । একই সঙ্গে এ দিন শাসকদলের পক্ষে আনা আস্থা প্রস্তাবেরও কড়া সমালোচনা করেছেন শুভেন্দু । তিনি বলেন, ‘‘স্পিকারের পক্ষে কোনও আস্থা প্রস্তাব আনার সংস্থান রুল বুকে নেই । 185এ আসতে পারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন হিসাবে । একমাত্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরকারের পক্ষে আস্থা ভোট চাইতে পারেন । তাও আবার বিশেষ প্রেক্ষিতে । যদি মহামান্য রাজ্যপাল, বিচার ব্যবস্থা বা বিরোধী দল প্রশ্ন তোলে শাসকপক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে, কেবলমাত্র মুখ্যমন্ত্রী সেক্ষেত্রে আস্থা ভোট চাইতে পারেন । অধ্যক্ষের পক্ষে আস্থা প্রস্তাব আনার কোনও অবকাশ বিধানসভায় নেই ।’’
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিধানসভায় এসে ফিরহাদ হাকিমকে দিয়ে একটি চিঠি করিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির আনা আনাস্থা প্রস্তাব আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন । সেই কারণেই এদিন প্রয়োজনীয় বিধায়ক সংখ্যা থাকলেও বিরোধীদের প্রস্তাবের পক্ষে মতামত চাওয়া হল না । তখন বিরোধীপক্ষের তরফ থেকে এই নিয়ে চেপে ধরা হয় ৷ তখন অধ্যক্ষের তরফ থেকে বলা হয় পরে এই বিষয়ে রুলিং দিয়ে দেওয়া হবে ৷ আজকের জন্য বিষয়টি হোল্ড আপ করা হল ।
শুভেন্দু অধিকারীর আরও অভিযোগ, বিধানসভায় আইনের শাসন নেই, সে কারণেই বিচার ব্যবস্থার দ্বারস্থ হতে হচ্ছে তাঁদের । তাঁর আশা, অধ্যক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং তিনি এই বেআইনি কাজ থেকে বিরত হবেন ।
আরও পড়ুন: মমতাকে সারদার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী আখ্যা দিয়ে মোদিকে চিঠি শুভেন্দুর