ETV Bharat / state

কর্তৃপক্ষকে শীঘ্রই অ্যাকাডেমিক কার্যকলাপ চালুর প্রস্তাব JUTA

author img

By

Published : Aug 5, 2020, 6:23 AM IST

JUTA takes academic activities soon
JUTA takes academic activities soon

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্লাসরুমের বিকল্প পদ্ধতি যে অন্তর্বর্তী সেমেস্টারের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে চায় JUTA ।

কলকাতা, 4 অগাস্ট : বহুদিন ধরে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস । বন্ধ ক্লাসরুম । এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে থেকে বহু পড়ুয়া মানসিক অবসাদে ভুগছেন । কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা কারোরই জানা নেই । তাই ক্লাসরুম শিক্ষার বিকল্প কিছু না হলেও এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে অন্তর্বর্তী সেমেস্টারের অ্যাকাডেমিক কার্যকলাপ চালু করার প্রস্তাব দিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন JUTA । কীভাবে তা করা যায় তা নিয়ে কয়েকটি পদ্ধতির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে ।

জানা গেছে, ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাশ সব ফ্যাকাল্টির ডিনদের সেই প্রস্তাব পাঠিয়ে দ্রুত ফ্যাকাল্টি বৈঠক ডাকতে বলেছেন । বিকল্প পদ্ধতিতে পঠন-পাঠন চালুর প্রস্তাব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাশকে চিঠি পাঠানো হয়েছে JUTA-র তরফ থেকে ।

সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "যতদিন না সশরীরে ক্লাস শুরু করা যাচ্ছে, তার মাঝখানে অ্যাকাডেমিক অ্যাক্টিভিটিসটা কীভাবে করা যাবে তার একটা পরিকল্পনা ও প্রস্তাব আমরা উপাচার্যকে পাঠিয়েছি । সেখানে, অন্তর্বর্তী সেমেস্টারের কী হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে । দুটো মডেল দেওয়া হয়েছে । প্রথমটা একটা রিপোজেটরি, দ্বিতীয়টা অনলাইনে ভিডিয়ো ক্লাস ।"

অন্তর্বর্তী সেমেস্টারের জন্য পঠন-পাঠন পুনরায় চালু করা হোক শিরোনামে উপাচার্যকে পাঠান JUTA-র চিঠিতে বলা হয়েছে, "শিক্ষক-শিক্ষিকারা সকলেই একমত যে ক্লাসরুম শিক্ষার বিকল্প কিছু হয় না । তা সত্ত্বেও বর্তমান পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের অ্যাকাডেমিক কার্যকলাপে সক্রিয় ও নিযুক্ত করে রাখার জন্য অন্য পথ খোঁজার প্রয়োজন রয়েছে । তাই দেরি না করে অবিলম্বে যে কোনও পদ্ধতিতে অ্যাকাডেমিক কার্যকলাপ চালু করার পক্ষে মত দিয়েছেন অধিকাংশই । এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে, নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এই সংক্রান্ত অফিশিয়াল বিজ্ঞপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।"

কোরোনা আবহের মধ্যে অ্যাকাডেমিক কার্যকলাপ শুরুর জন্য দুটি মডেলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি রিপোজেটরির (অনলাইন তথ্য ভাণ্ডার) লাইসেন্স নিতে হবে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা ভিডিয়ো-অডিয়ো লেকচার, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, লেকচার নোটস, অ্যাসাইনমেন্ট, স্টাডি মেটেরিয়াল ইত্যাদি রাখতে পারবেন । পড়ুয়াদের কোথাও প্রশ্ন থাকলে শিক্ষকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে তার উত্তর জেনে নিতে পারবেন । পড়ুয়া ও শিক্ষকের মধ্যে এই টেলিফোনিক কনফারেন্সের আয়োজন বিভাগ থেকে করা যেতে পারে । দৃষ্টিশক্তি বা অন্যান্য শারীরিকভাবে অক্ষম পড়ুয়াদের সাহায্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে । দ্বিতীয়ত, কোনও লাইসেন্সড প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে । তার জন্য প্রত্যেক পড়ুয়াকে অফিশিয়াল আইডি দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে ।

তবে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সব অর্থনেতিক স্তরের পড়ুয়ারাই পড়াশোনা করেন । অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পড়ুয়াদের কাছে নেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটের সুবিধা । অনলাইন ক্লাস চালু হলে কি ডিজিট্যাল ডিভাইড তৈরি হবে না ? পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "যাঁদের কাছে ইন্টারনেট বা গ্যাজেটের সুবিধা নেই তাঁদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে । সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে বা বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রোগাম রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে তা করতে পারে । সেগুলো করে পড়ুয়াদের যাতে এই সুবিধা কিছুটা দেওয়া যেতে পারে তার কথা বলা হয়েছে । কোনও সাবসিডিও দেওয়া যেতে পারে । কোনও কম্পানিকে বলা যেতে পারে, 5 হাজার টাকার ফোনটা আড়াই হাজার টাকায় দিক । আড়াই হাজারের মধ্যে হয়তো দেড় হাজার বিশ্ববিদ্যালয় দিল, আর পাঁচশ বা হাজারের মতো পড়ুয়া দিল। সেক্ষেত্রে পড়ুয়ার উপর খুব চাপ পড়বে না। খুব অবস্থা খারাপ হলে পুরোটাই বিশ্ববিদ্যালয় দেওয়ার ব্যবস্থা করবে ।"

এর পাশাপাশি, অন্তর্বর্তী সেমেস্টারের পরীক্ষা, বাকি থাকা সিলেবাস নিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে । আবার অনেক পড়ুয়াই এই সময় মানসিক চাপ, অবসাদে ভুগছেন । তাঁদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করার দাবিও জানানো হয়েছে অধ্যাপক সংগঠনের তরফে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.