কলকাতা 28 নভেম্বর : তালুকদার কমিটির কাজের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও জয় সেনগুপ্তর বিশেষ বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয় । চলতি বছরের 31 ডিসেম্বর তালুকদার কমিটির মেয়দা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা । সেই মেয়াদ 2020 সালের 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করল হাইকোর্ট ।
বিভিন্ন সংস্থায় টাকা রেখে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন তাঁদের টাকা ফেরানোর জন্য প্রাক্তন বিচারপতি শৈলেন্দ্র প্রসাদ তালুকদারের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠিত হয় ৷ 2015 সালের ডিসেম্বর মাসে বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ এই কমিটি গঠন করেন ৷ চিটফান্ডে প্রতারিতদের টাকা ফেরত দেওয়ার লক্ষ্যে 2016 সাল থেকে কাজ শুরু করে তালুকদার কমিটি ৷
এই ব্যাপারে আমানতকারীদের তরফে আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, "এখনও পর্যন্ত 300-350টি চিটফান্ড কম্পানির মামলা চলছে হাইকোর্টে । তার মধ্যে মাত্র 48টি মামলা তালুকদার কমিটির কাছে পাঠানো সম্ভব হয়েছে । অকশান প্রক্রিয়া চলছে, অ্যালকেমিস্টের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে । এটাকেই বজায় রাখার জন্য কমিটির মেয়দা বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছিল । সেই আর্জিতে সন্মতি দিয়েছে মহামান্য আদালত । এব্যাপারে কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের তরফে কোনও বিরোধিতা করা হয়নি ।"
প্রসঙ্গত গত অগাস্ট মাসে এই কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে হাইকোর্টে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি শৈলেন্দ্র প্রসাদ তালুকদার । চিঠিতে তিনি লেখেন, কমিটি 2016 সাল থেকে কমিটি কাজ শুরু করে । কিন্ত এতদিনেও শুধুমাত্র অ্যালকেমিস্টের দ্বারা প্রতারিতদের কিছু টাকা ফেরত দিতে পেরেছেন । আরও বহু কম্পানির দ্বারা প্রতারিতদের টাকা ফেরত দিতে তাঁরা ব্যর্থ । বিচারপতি তালুকদার যে পাঁচ পাতার চিঠি লিখেছিলেন, তাতে তাঁর বক্তব্য ছিল, টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি পদে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে । MPS-র টাকা ফেরত দেওয়ার মামলা প্রথম তাঁর হাতে দেওয়া হয় । MPS-র সম্পত্তি বেশিরভাগ রয়েছে ঝাড়গ্রামে । এই কমিটি পুলিশকে দায়িত্ব দেয় সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের । কিন্ত দেখা যাচ্ছে MPS-এর সম্পত্তি চুরি হয়ে যাচ্ছে । চিঠির শেষ দিকে বিচারপতি বলেছিলেন , যাঁদের (প্রতারিত) জন্য এই কমিটি গঠিত হয়েছিল তাঁদের বিশ্বাস ফেরাতে ব্যর্থ এই কমিটি । ফলে এই কমিটিতে থাকার যৌক্তিকতা নেই ৷ তাই তিনি অব্যাহতি চাইছেন।
এই বিষয়ে আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, "কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল । সম্পত্তি বিক্রি করার ক্ষেত্রে রাজ্যের সহযোগিতা পাচ্ছিলেন না । সেই ব্যাপারে অগ্রগতি হয়েছে । তিনি এখন কাজ করতে পারছেন ।"