কলকাতা, 19 জুলাই: ববিতা সরকার মামলায় ওএমআর সিট প্রকাশ না করার আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ 2016 সালের একাদশ ও দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার সমস্ত ওএমআর প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন । সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছিলেন কিছু কর্মরত শিক্ষক । সেই মামলাতেই বুধবার ডিভিশন বেঞ্চ ওএমআর শিট প্রকাশ করার নির্দেশ বহাল রাখল ৷
এ দিন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছে, তালিকায় নাম প্রকাশের পর যদি কোনও শিক্ষকের চাকরি পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকে, তাহলে সিঙ্গল বেঞ্চ আগে তাঁদের শুনানির সুযোগ দেবে । তারপরেও সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত যে এসএলপি আছে, তার নিষ্পত্তি হওয়ার পরেই তাঁদের চাকরি নিয়ে পদক্ষেপ করা যাবে । এসএসসি-র আবেদনে 21 জুলাইয়ের পরিবর্তে 28 জুলাই পর্যন্ত তালিকা প্রকাশের সময় বাড়ালো ডিভিশন বেঞ্চ । আদালতের পর্যবেক্ষণ, পাবলিক সার্ভিস নিয়ে দুর্নীতি হলে কোনও আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না । এই ক্ষেত্রেও আদালত সেটা অস্বীকার করতে পারে না ।
অন্যদিকে মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, ওই তালিকা প্রকাশিত হলে তাঁদের চাকরি চলে যেতে পারে । বিচারপতি সৌমেন সেন ও উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন মামলা শোনার পর বলে, তালিকা প্রকাশের বাধা কোথায় ! ওই তালিকায় যদি কারও নাম পাওয়া যায়, যাঁর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন আছে, তাঁকে আগে শুনানির সুযোগ দিয়ে তারপরে পদক্ষেপ করার ব্যাপারে সুযোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে সিঙ্গল বেঞ্চে ।
আরও পড়ুন: বেতন বন্ধের হুঁশিয়ারি, জোড়হাতে ক্ষমা চেয়ে ছাড় পেলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি
মামলাকারীদের আইনজীবী প্রশ্ন করেন, ববিতা সরকার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শূন্যপদে চাকরি পাওয়ার আবেদন করেছেন । তাহলে কেন সব নিয়োগের ওএমসিট প্রকাশ করতে হবে ? তাছাড়া ওএমআর প্রকাশের জন্য কোনও লিখিত আবেদন করা হয়নি । মৌখিক আবেদনে সিঙ্গল বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে । সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলছে । অগস্ট মাসে সেই মামলার শুনানি আছে । তাই সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করা হোক । আপাতত এই তালিকা প্রকাশ স্থগিত রাখা হোক অগস্ট মাস পর্যন্ত ।
ববিতা সরকারের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ তো আগাম ধরে নেওয়া হচ্ছে যে তালিকা প্রকাশ হলেই তাঁদের চাকরি যাবে । তার মানে মামলাকারীদের মনে ভয় আছে । কীভাবে তাঁরা চাকরিটা পেয়েছেন, তাঁরা আসল ঘটনাটা নিজেরা সবচেয়ে ভালো জানেন । তাই আগাম মামলা করে তালিকা প্রকাশ বন্ধ করতে চাইছেন ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সত্যি যদি সঠিক পথে চাকরি পান তাহলে কেন তাঁরা ভয় পাচ্ছেন ! যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁরা কারা, কী এক্তিয়ার আছে তাঁদের, এটা দেখা দরকার । সুপ্রিম কোর্টে একমাত্র বেআইনি নিয়োগ পাওয়াদের চাকরি থাকবে নাকি যাবে, সেটা নিয়ে বিচার হবে । এর সঙ্গে ওই মামলার কোনও মিল নেই ।’’
স্কুল সার্ভিস কমিশনের বক্তব্য, সিবিআই যে হার্ড ডিস্কের সঙ্গে এসএসসি-র নথি মিলিয়ে দেখে, সেই বিষয়ে এসএসসি নিশ্চিত কিছু ক্ষেত্রে বেআইনি হয়েছে । এই ব্যাপারে এসএসসি তার অবস্থান হলফনামা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও জানিয়েছে ।
আরও পড়ুন: সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ববিতা সরকার
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ডিভিশন বেঞ্চ তালিকা প্রকাশের নির্দেশই বহাল রেখেছে এবং সময়সীমা বাড়িয়েছে ।
