ETV Bharat / state

লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প

author img

By

Published : May 25, 2020, 5:09 PM IST

Updated : May 27, 2020, 8:32 PM IST

tea industry in North Bengal
লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প

দীর্ঘ লকডাউনের ফলে ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প৷ বর্তমানে 50 শতাংশ কর্মী দিয়ে কাজ করা হচ্ছে৷ যার ফলে 100 মিলিয়ন চা উৎপাদন কম হচ্ছে৷ এর ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা৷

জলপাইগুড়ি, 25 মেঃ লকডাউনের জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প৷ ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গিয়েছে৷ চা বাগান ও শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন চা মালিক সংগঠনের তরফে৷

রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের নির্দেশ মেনেই লক ডাউনের মধ্যে চা বাগানে কাজ শুরু হয়েছে৷ বর্তমানে 50 শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে৷ কিন্তু, চা বাগান মালিকদের দাবি এই পরিমাণ শ্রমিক দিয়ে কাজ শুরু হলেও তা পর্যাপ্ত নয়৷ উত্তরবঙ্গে মোট চা বাগানের জমির পরিমান ১১৪২৪১.৫৯ হেক্টর৷ যার মধ্যে, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলা মিলে মোট 300টির ওপর বড়ো চা বাগান রয়েছে৷ দার্জিলিঙের পাহাড়ে রয়েছে 86টি বড় চা বাগান৷ অপরদিকে, দার্জিলিং ও উত্তর দিনাজপুর জেলার সমতল মিলিয়ে মোট 66টি বড়ো চা বাগান রয়েছে৷ চা বাগান গুলিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রায় সাড়ে তিন লাখ শ্রমিক কাজ করে থাকেন৷

লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প

অপরদিকে, ক্ষুদ্র চাষি সমিতির পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র চা বাগানের মোট জমির পরিমাণ ৩৩৭১১.২৭ হেক্টর৷ ক্ষুদ্র চা বাগানের সংখ্যা ৩৭৩৬৫ টি৷ উত্তরবঙ্গে 'বট টি লিফ ও সেলফ হেল্প গ্রুপের' চা ফ্যাক্টরি আছে মোট ২১০টি। প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক এই ক্ষুদ্র চা চাষের সঙ্গে যুক্ত৷

জলপাইগুড়ির ক্ষুদ্র চা চাষি সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী জানান, ''২০১৯ সালে রাজ্যে মোট চা উৎপাদন হয়েছিল ৩৯৪.২৩ মিলিয়ন কেজি। যার মধ্যে ক্ষুদ্র চা বাগানে উৎপাদন হয়েছে ২৪৫ মিলিয়ন কেজি৷ যা উত্তরবঙ্গের চা উৎপাদনের 62 শতাংশ৷ মোট উৎপাদনের চায়ের 25 থেকে 30 শতাংশ চা পাতা, সাধারণত মার্চ, এপ্রিল মাসেই এসে থাকে৷ লকডাউনের ফলে চা পাতা তুলতে না পারায়, এবারে সেই উৎপাদনের অনেকটাই ব্যাহত হয়েছে৷"

উত্তরবঙ্গ চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠন টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা অমৃতাংশু চক্রবর্তী জানান, "আমরা কোনওদিন কল্পনা করতে পারিনি চা শিল্প এতটা সমস্যার সম্মুখীন হবে৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্য-কেন্দ্র ও আমারা একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে চা শিল্প সত্যিই ক্ষতির মুখে পড়ে যাবে৷ কারণ 50 শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়৷ 100 শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ না করায় প্রায় 100 মিলিয়ন কেজি চা কম উৎপাদন হচ্ছে৷ বুঝে উঠতে পারছি না কত কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে৷ সরকারি বিধিনিষেধ মেনেই আমরা কাজ করব ৷ 100 শতাংশ শ্রমিক নিয়ে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হোক৷"

অপরদিকে, রাজ্যের টি ডাইরেক্টরেটের ভাইস চেয়ারম্যান তথা চা বাগান মালিক কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী জানান, ''কোরোনা আসায় আমাদের চা শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে৷ কোরোনার কারণে 100 মিলিয়ন চা উৎপান হয়নি৷ 50 শতাংশ চা পাতা উৎপাদন কমে গেছে৷ আমরা কেন্দ্রের কাছে প্যাকেজ চেয়েছি৷''

Last Updated :May 27, 2020, 8:32 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.