জলপাইগুড়ি, 13 অক্টোবর: দুর্গা প্রতিমা তাও আবার কৃষ্ণ বর্ণের। হ্যাঁ, জলপাইগুড়ির এক কলেজ পড়ুয়ার কৃষ্ণবর্ণা রূপে মা দুর্গার প্রতিমা এখন আলোচ্যের বিষয়। সাধারণত কৃষ্ণবর্ণা মা দুর্গার মূর্তি দেখা যায় না। কৃষ্ণবর্ণা মূর্তি বানিয়ে সামাজিক একটা বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই শিল্পী কুণালের ৷ সমাজে ফর্সা, কালো এমন কোনও ভেদাভেদ নেই, সবাই মায়ের সন্তান। এই বার্তা দিতেই জয়া ও বিজয়ার গায়ের রং কালো ও মুখে শ্বেতির বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। জলপাইগুড়ি আইন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র কুণাল বিশ্বাসের শিল্পকর্মে বরাবরই গুণগান গাইছেন শহরবাসী।
জলপাইগুড়ি আইন কলেজের ছাত্র কুণাল বিশ্বাস ছোটবেলা থেকেই শিল্পকর্ম করে থাকেন। প্রতিবারের মতো এবার দুর্গাঠাকুর বানিয়েছেন। গতবছর সাবান দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে নজর কাড়ে কুণাল। এবার মাটির ঘট, পুঁথি, কাগজ, জড়ি-সহ পাটকাঠি দিয়ে দুর্গা প্রতিমা গড়েছে। জলপাইগুড়ির শিরিষতলার কুণালের বাড়িতে প্রতিমা দেখার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষও। কুণালের এই কাজে রাত জেগে তাঁকে সঙ্গ দেন তাঁর মা বুলা বিশ্বাস ও দিদি পারমিতা বিশ্বাস।
কুণাল বিশ্বাস বলেন, "আমি এবার কৃষ্ণবর্ণা মা দুর্গার প্রতিমা গড়েছি। পুরানে কথিত রয়েছে, মা কৃষ্ণবর্ণা রূপেও পূজিত হয়েছেন। আমি একটা সামাজিক বার্তা দিতেই কৃষ্ণবর্ণা মূর্তি গড়েছি। সমাজে ফর্সা, কালো বলে অনেককেই বর্ণনা করা হয়। কিন্তু সবাই মায়ের সন্তান এই বার্তাই আমি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মায়ের বা কারও হাতে কোনও অস্ত্র আমি দিইনি, আমি বলতে চেয়েছি একজন সাধারণ ঘরের মেয়ের শান্ত একটা সংসারে মা আছেন। আমি পুরুলিয়ার ছৌ-এর নাচে যে সমস্ত অলংকার ব্যবহার হয় তা দিয়ে মা'কে সাজিয়েছি।"
কুণালের মা বুলা বিশ্বাস বলেন, "ছোটবেলা থেকেই কুণালের শিল্পকর্মের ওপর ঝোঁক। গতবার সাবান দিয়ে দুর্গা প্রতিমা গড়েছিল। রাত জেগে মূর্তি গড়েছে আমাদের ভালোই লাগে। আমরাই ওকে সঙ্গ দিই।" দেড় ফুট উচ্চতার দুর্গা প্রতিমাটি একচালার ওপরেই তৈরি করা হয়েছিল। তার আগে বড়মার মূর্তি করেছিল। কাগজের দুর্গা তৈরি করেছিল। জলপাইগুড়ির শিরিষতলা এলাকার বাসিন্দা আইন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রের এমন শিল্পকর্মে খুশি শহরবাসীও।
আরও পড়ুন: পুজোর উদ্বোধনে মমতার গলায় খেজুরি ও ভগবানপুর নিয়ে উদ্বেগ