হাওড়া, 26 সেপ্টেম্বর : হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন ৷ তাই কাজ চলছিল জোরকদমে ৷ কিন্তু, মঙ্গলবার থেকে তাতে বাধ সেধেছে বৃষ্টি ৷ কোনও পুজো মণ্ডপের সামনে জল দাঁড়িয়ে গেছে তো কোথাও আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মণ্ডপের বাইরের কাজ ৷ ফলে মাথায় হাত পড়েছে হাওড়ার পুজো উদ্যোক্তাদের ৷ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে তাঁদের ৷
প্রতি বছরের মতো এবারও থিমের দিকে ঝুঁকেছে হাওড়ার বিগ বাজেট পুজোগুলি ৷ মাসতিনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে কাজ ৷ বেশিরভাগ মণ্ডপের ভিতরের কাজ প্রায় শেষের পর্যায়ে ৷ বাইরের বেশ কিছু কাজ বাকি রয়ে গেছে ৷ মহালয়ার আগেই তা শেষ করার পরিকল্পনা ছিল উদ্যোক্তাদের ৷ কিন্তু, মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি ৷ রাজ্যের উপর সক্রিয় হয়েছে মৌসুমি অক্ষরেখা ৷ পাশাপাশি, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাডু়র কাছে বঙ্গোপসাগরের উপর সক্রিয় হয়েছে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত ৷ দুইয়ের সাঁড়াশি চাপে কলকাতা, হাওড়া-সহ দক্ষিণবঙ্গে শুরু হয়েছে বৃষ্টি ৷ আর তার জেরেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের ৷
মধ্য হাওড়ার অন্যতম একটি বিগ বাজেটের পুজোর সামনে গিয়ে দেখা গেল মণ্ডপের ভিতরের কাজ প্রায় শেষ ৷ বাইরে কিছু কাজ বাকি ৷ কিন্তু, মণ্ডপের সামনে জমে রয়েছে জল ৷ এক কারিগর জানালেন, বৃষ্টি না হলে কাজ হচ্ছে ৷ আবার বৃষ্টি হলে মণ্ডপের বাইরের কাজ বন্ধ করতে হচ্ছে ৷ দীনেশ কুণ্ডু নামে এক কারিগর বলেন, "কাজের অসুবিধা হচ্ছে ৷ টানা বৃষ্টি হওয়ায় মণ্ডপের বাইরের কাজ করতে পারছি না ৷ এরকম বৃষ্টি চললে কাজ করা অসম্ভব ৷ " অগত্যা মণ্ডপের ভিতর যা খুচখাচ কাজ পড়ে আছে, তাই করছেন ৷ আর একদিন হলেই ভিতরের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে ৷ তারপর কী হবে তা ভেবেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পুজো উদ্যোক্তারা ৷
একই অবস্থা আরও একটি মণ্ডপের সামনে ৷ টানা বৃষ্টির জেরে মণ্ডপের প্রবেশপথে জল দাঁড়িয়ে গেছে ৷ উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, হাওড়ার নিকাশি ব্যবস্থা একেই বেহাল ৷ একটু বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায় ৷ এবার জল কতদিনে নামবে তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা ৷ বৃষ্টির জন্য মণ্ডপের বাইরে প্লাস্টার অফ প্যারিস বা রঙ লাগালে তা শুকাচ্ছে না । নষ্ট হচ্ছে বাইরের শৌখিন কাজও । কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় মণ্ডপের বাইরে প্লাস্টিক বেঁধে কাজ করছিলেন এক কারিগর ৷ তিনি বলেন, "মণ্ডপই যদি ঠিকভাবে তৈরি না করা যায়, তাহলে তিন মাস ধরে কাজ করে কী হবে বলুন ৷" আপাতত বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা ৷ তারপর রাত জেগে বাকি কাজ করবেন ৷ যদিও খুব একটা আশার কথা শোনাতে পারেনি আলিপুর আবহাওয়া অফিসও ৷ জানিয়েছে, আগামীকাল পর্যন্ত চলবে বৃষ্টি ৷ মহালয়ার দিন অবশ্য আকাশ পরিষ্কার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ আর সেই আশাতেই আপাতত বুক বাঁধছেন কারিগর ও পুজো উদ্যোক্তারা ৷