ETV Bharat / state

Kali Pujo 2021: সারা বছর শান্ত রূপ, কালী পুজোতে এলোকেশী উগ্ররূপী বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী মা

author img

By

Published : Nov 4, 2021, 2:44 PM IST

Updated : Nov 4, 2021, 7:02 PM IST

Kali Pujo 2021
সারা বছর শান্ত রূপ, কালী পুজোতে এলোকেশী উগ্ররূপী বাঁশবেরিয়ার হংসেশ্বরী মা

সারা বছর শান্ত রূপে থাকলেও বাৎসরিক কালী পূজার দিন একরাতের জন্য মায়ের এলোকেশী রূপ ধরা পড়ে। রাজবেশ পড়ানো হবে মাকে। এই মন্দির তার গঠনশৈলীর জন্যও বিখ্যাত ৷

বাঁশবেড়িয়া, 4 নভেম্বর : শোনা যায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে 1799 সালে রাজা নৃসিংহ দেব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হুগলির বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী মন্দির ৷ সারা বছর তিনি শান্ত রূপে পূজিত হলেও কালীপুজোর দিন সোনার জিহ্বা পরে উগ্র রূপ ধারণ করেন বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী মা কালী। তন্ত্র মতে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা নৃসিংহদেব। হংসেশ্বরী মন্দির তার গঠনশৈলীর জন্য প্রসিদ্ধি পেয়েছে বাংলা তথা গোটা দেশে। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অন্তর্গত এই মন্দির। নিম কাঠের নীলাভ মূর্তিতে মা এখানে চতুর্ভুজা। শিবের নাভি থেকে প্রস্ফুটিত পদ্মের উপর অধিষ্ঠিতা তিনি। এখানে মা কালী তেরোটি শিব দ্বারা বেষ্টিত, নিত্যদিন ভোগ দেওয়া হয় মা'কে। এখানে এখনও বলি প্রথা চালু আছে।

শুধু ধর্মপ্রাণ মানুষই এই মন্দির দর্শন করতে আসেন না। বহু ইতিহাস ও শিল্পী অনুরাগী এই হংসেশরী মন্দির দেখতে আসেন। বিশেষত মা কালীর মন্দিরে পাশেই আছে অনন্ত বাসুদেবের মন্দির। বাংলার টেরাকোটার কাজ ও মনোরম পরিবেশ সকলকেই আকর্ষিত করে।

আরও পড়ুন : Kali Pujo 2021 : কাঁথির ক্লাব ইন্দিরার কালীপুজোয় এবছর দেখা মিলবে রাজস্থানের রাজপ্রাসাদের

প্রাচীনকালে বংশবাটী গ্রামে অর্থাৎ বর্তমানে বাঁশবেড়িয়ায় বসবাস করতেন রাজা নৃসিংহ দেব। তিনি তন্ত্র সাধনা করতেন। শোনা যায়, স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি 1799 সালে হংসেশ্বরী মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন। তন্ত্র মতে মানবদেহে ঈরা, পিঙ্গলা ,বজ্রাক্ষ সুষুম্না ও চিত্রিনী পাঁচটি নারী বিদ্যমান আছে , সেই অনুযায়ী 5 তলা ও 13 চূড়া বিশিষ্ট 70 ফুট উচ্চতার এই মন্দির স্থাপন করেন তিনি। মূল মন্দিরে কুণ্ডলিনী শক্তি রূপে দেবী হংসেশ্বরীকে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। ষটচক্র ভেদ প্রণালীতে এই মন্দির নির্মিত । মন্দিরের অর্ধসমাপ্ত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় নৃসিংহদেবের। পরবর্তীকালে তাঁর স্ত্রী রানি শঙ্করীদেবী এই কাজ সম্পন্ন করেন।

মন্দিরের চারপাশের প্রতিটি চূড়ার নিচে একটি করে কালো শিবলিঙ্গ রয়েছে এবং ওপরে একটি সাদা শিবলিঙ্গ পূজিত হয়ে আসছে । প্রতিটি চূড়াই পদ্মের আকারের এবং মূল বেদি গোলাকার পরিস্ফুটিত পদ্মের মতো। যার উপর অধিষ্ঠিত হয়ে আছেন দেবী। মন্দিরের অনেকটা অংশই পাথরের উপর নকশা করা । দেবীর শরীরের রঙ নীল, বাম হাতে রয়েছে খড়গ ও নরমুন্ড, এবং ডান হাতে অভয়মুদ্রা ও শঙ্খ। এখানে কালী প্রতিমা সারাবছর শান্ত রূপে থাকলেও বাৎসরিক কালী পূজার দিন একরাতের জন্য মায়ের এলোকেশী রূপ ধরা পড়ে। রাজবেশ পড়ানো হয় মাকে।

সারা বছর শান্ত রূপ, কালী পুজোতে এলোকেশী উগ্ররূপী বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী মা

হংসেশ্বরী মন্দিরের পাশেই অনন্ত বাসুদেব মন্দির রয়েছে। বাংলার টেরাকোটা শিল্প রয়েছে। এই মন্দিরের গায়ে দুর্গা, কালী, শিব ,কৃষ্ণ, রাসলীলা, নৌকা বিলাস এবং নারায়ণের অনন্ত শয্যা মাটি দিয়ে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা আছে। তবে বর্তমানে এইসব টেরাকোটার কাজ নষ্ট হতে বসেছে। পুরাতত্ত্ব বিভাগ কিছুটা রক্ষণাবেক্ষণ করলেও তা সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। এখানকার আসল বিষ্ণুমূর্তিটি আগেই চুরি হয়ে গিয়েছে। রাজবাড়ির পুরোহিত দীপেন্দ্র দেবরায় বলেন, "রাজা নৃসিংহ দেবরায় এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন ৷ তিনি স্বপ্নাদেশে মা হংসেশ্বরীর দর্শন লাভ করেন তারপর থেকেই তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। 5 লক্ষ টাকা ব্যয় এই মন্দিরের কাজ শেষ হয়।" এই মন্দিরের বেদী ও মহাকাল পাথরের হলেও কালীমূর্তি নিম কাঠের । শোনা যায় বেনারস থেকে এই কাঠ ভেসে এসেছিল।

Last Updated :Nov 4, 2021, 7:02 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.