ETV Bharat / state

Gangasagar Mela 2023: গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে কালীঘাট-সহ রাজ্যের 5টি মন্দিরের অস্থায়ী কাঠামো

author img

By

Published : Dec 24, 2022, 8:55 PM IST

গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela 2023)-র প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করল দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসন ৷ সেখানে মেলা প্রাঙ্গণে পুণ্যার্থীদের জন্য রাজ্যের পাঁচটি বিখ্যাত মন্দিরের অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে (Temporary Structures of 5 Temples of State will be Displayed) বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ৷ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ব্যবস্থাপনার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলার মন্দির’।

Gangasagar Mela 2023 ETV Bharat
গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জেলা প্রশাসন

গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জেলা প্রশাসন

গঙ্গাসাগর, 24 ডিসেম্বর: হাতে আর মাত্র 2 সপ্তাহ ৷ তারপরেই শুরু হতে চলেছে 2023 সালের গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela 2023)। আর এই মেলাকে ঘিরে ইতিমধ্যে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ এবছর গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থীদের রেকর্ড সমাগম হতে পারে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন ৷ কুম্ভ মেলা না থাকার কারণে, গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থীদের ভিড় আছড়ে পড়বে ৷ আর সেখানেই এবার গঙ্গাসাগর মেলায় তুলে ধরা হবে রাজ্যের বিশিষ্ট পাঁচটি মন্দির ৷ প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলায় অন্য রাজ্য তথা দেশ-বিদেশ থেকে বহু পুর্ণ্যার্থীরা আসেন ৷

অনেক পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগর মেলায় এলেও তাঁরা রাজ্যের পাঁচটি ঐতিহ্যবাহী মন্দির তারাপীঠ, কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, তারকেশ্বর ও জহুরা কালীবাড়ি দর্শনের সুযোগ পান না ৷ এবার পুণ্যার্থীদের কথা মাথায় রেখে গঙ্গাসাগর মেলার প্রাঙ্গণে অস্থায়ী কাঠামোর মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে রাজ্যের ওই পাঁচ ঐতিহ্যবাহী মন্দির (Temporary Structures of 5 Temples of State will be Displayed) ৷ সেখানে জায়েন্ট স্ক্রিন বসিয়ে সরাসরি ওই মন্দিরগুলির পুজো দেখানো হবে ৷ চাইলে পুণ্যার্থীরা সেখান থেকেই পুজো দিতে পারবেন ৷

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ব্যবস্থাপনার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলার মন্দির’। শুক্রবার গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান দক্ষিণ 24 পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা ৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ ৷ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে 12-14 জানুয়ারি পর্যন্ত তিনদিন সাগরতটে সন্ধ্যা আরতির ব্যবস্থা করা হবে ৷ গত বছর একদিন সন্ধ্যা আরতির ব্যবস্থা ছিল ৷ প্রতিদিন সন্ধ্যা আরতির নির্দিষ্ট সময় জানিয়ে দেওয়া হবে ৷ এ ছাড়াও, এবার পুণ্যার্থীদের কাছে গঙ্গাসাগর মেলা স্মরণীয় করে রাখতে ‘বন্ধন’ নামে শংসাপত্রের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷ সাগর মেলা প্রাঙ্গণে ফটো-কিয়স্ক তৈরি করা হচ্ছে ৷ সেই কিয়স্কে গিয়ে ছবি তুললেই তৎক্ষণাৎ মিলবে পুণ্যার্থীর নিজস্ব ছবি দেওয়া শংসাপত্র ৷ বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে ছাপানো এই শংসাপত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সাগরমেলা ভ্রমণের জন্য ধন্যবাদ জানানো হবে ৷

গঙ্গাসাগর থেকে বাবুঘাট পর্যন্ত নজরদারি থাকবে প্রশাসনের ৷ এর জন্য প্রায় 2100টি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে ৷ গত বছর গঙ্গাসাগর মেলায় প্রায় 20 লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছিল ৷ এবার পুণ্যার্থীর সংখ্যা 30 লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রশাসনের ৷ প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ তবে, যেখানে যেখানে সমস্যা থাকবে সেখানে ড্রেজিংয়ের কাজ চলতে থাকবে ৷ 20 ঘণ্টা যাতে ভেসেল চালানো যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে ৷ তিনটি পর্যায়ে 30টি ভেসেল চলবে ৷

পুণ্যার্থীদের জন্য থাকছে 500 বেসরকারি বাস ৷ তবে যাত্রী ভাড়া বাড়ানো হবে না ৷ স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে এবার 21টি জেটি তৈরি করা হয়েছে ৷ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের পাশাপাশি 142টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিষেবা দেবে ৷ গঙ্গাসাগর মেলাকে পরিবেশবান্ধব করা হচ্ছে ৷ প্লাস্টিকমুক্ত জোন তৈরি করা হচ্ছে ৷ মেগা কন্ট্রোলরুম থাকছে ৷ ভেসেল, লঞ্চের সঙ্গে রাখা ডিভাইসের মাধ্যমে জানা যাবে, কোথাযও ভেসেল আটকে গিয়েছে কিনা ৷ তেমন ঘটলে তৎক্ষণাৎ উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হবে ৷

আরও পড়ুন: এবছর গঙ্গাসাগর মেলায় হবে সাগর আরতি, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

হেলিকপ্টার পরিষেবার জন্য ইতিমধ্যে তিনটি হেলিপ্যাড তৈরি হয়ে গিয়েছে ৷ গত বছরের মতো এ বছরও ই-স্নানের ব্যবস্থা থাকছে ৷ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গঙ্গাসাগর মেলাকে তুলে ধরা হবে ৷ মেলার মাঠের বর্জ্য দ্রুত সাফ করার জন্য 10 হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর ৷ জঞ্জাল বহনের জন্য 30টি ‘ই-কার্ট’ থাকবে ৷

দক্ষিণ 24 পরগনার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ বলেন, ‘‘আগের থেকে এই সরকারের আমলে গঙ্গাসাগর মেলার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে । এই মেলাকে কুম্ভ মেলার সমতুল্য করার চেষ্টা হচ্ছে ৷ আমরা চাই, গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার মর্যাদা দেওয়া হোক ৷ আগে পুণ্যার্থীদের গঙ্গাসাগর মেলায় এলে কর দিতে হত ৷ আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সেই কর তুলে দিয়েছেন ৷ পুণ্যার্থীদের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তাঁদের পরিবার 2 লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পেত ৷ আমাদের সরকার 5 লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করছে ৷’’

দক্ষিণ 24 পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানান, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলাকে আরও উন্নত করতে আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত ৷ পরিবেশবান্ধব মেলা করা হবে ৷ পুণ্যার্থীদের জন্য এবার আমরা বাংলার পাঁচটি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরকে মেলা প্রাঙ্গণে তুলে ধরব ৷ গঙ্গাসাগর মেলাকে পুণ্যার্থীদের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ৷’’ সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার ৷ এখন এই প্রবাদ যেন অতীত হয়ে গিয়েছে ৷ সব তীর্থ একবার গঙ্গাসাগর বারবার ৷ আর 3 সপ্তাহ পর প্রার্থনা আর ভক্তির মেলবন্ধন ঘটবে গঙ্গাসাগরে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.