ETV Bharat / state

হাসপাতাল 40 কিমি দূরে, স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশা এই আদিবাসী গ্রামে

author img

By

Published : Aug 9, 2019, 7:53 PM IST

বক্সা ৷ আলিপুরদুয়ারের দু্র্গম পাহাড়ি এলাকা ৷

বক্সা ৷ আলিপুরদুয়ারের দু্র্গম পাহাড়ি এলাকা ৷ দেশের 72 তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে বক্সা পাহাড়ের মানুষের বক্তব্য, ব্রিটিশ আমলে এখানে ছিল স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষার পরিষেবা ,উপার্জনের নানা পথ । তবে স্বাধীনতার পরই সব পরিষেবা উধাও হয়ে গিয়েছে, অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের

আলিপুরদুয়ার, 9 অগাস্ট : তখন 2016 ৷ ওড়িশার কালাহান্ডির দানা মাঝি তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ নিজের কাঁধে চাপিয়ে সৎকারের জন্য প্রায় 10 কিলোমিটার পথ হেঁটে গোটা দেশে সারা ফেলে দিয়েছিলেন । বক্সা পাহাড়ে দানা মাঝির মতো ঘটনা রোজনামচায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ ।

বক্সা ৷ আলিপুরদুয়ারের দু্র্গম পাহাড়ি এলাকা ৷

ব্রিটিশ রাজত্বে এখানে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কারাবন্দী করে রাখা হত । ঐতিহাসিক বক্সা ফোর্ট ভারতের স্বাধীনতার স্মৃতি বহন করে চলছে । দেশের 72 তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে বক্সা পাহাড়ের মানুষের বক্তব্য, ব্রিটিশ আমলে এখানে ছিল স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষার পরিষেবা ,উপার্জনের নানা পথ । তবে স্বাধীনতার পরই সব পরিষেবা উধাও হয়ে গিয়েছে, অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের ৷ এলাকার মানুষদের বক্তব্য, স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও তাঁরা দরবার করেছেন । তবে কোনও লাভ হয়নি ।

বক্সা ৷ আলিপুরদুয়ারের দু্র্গম পাহাড়ি এলাকা ৷

স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্গম বক্সা পাহাড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র উঠে গেছে বললে ভুল হবে না, বলছেন স্থানীয়রা । 3000 আদিবাসী জনজাতির বসবাস দুর্গম বক্সা পাহাড়ে ৷ অভিযোগ, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিন্দুমাত্র নেই এলাকায় । এই বক্সা পাহাড়ে রয়েছে 11টি দুর্গম জনবসতি । মোট জনসংখ্যা প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার ৷

বক্সা পাহাড়ের কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাসিগাঁও ,অসলুম ,দাঁড়াগাঁও, চুনাভাটি, লেপচাখা, সদরবাজার, লাল বাংলো ,বক্সাফোর্টের মত গ্রাম । এখানে মিলেমিশে রয়েছে ডুকপা ,লেপচা, মেচ, রাভা, সাঁওতালসহ একাধিক আদিবাসী জনজাতি । বক্সা পাহাড়ের পাদদেশ সান্তলা বাড়ি থেকে বক্সা পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা গ্রামগুলির দূরত্ব কোথাও বা পাঁচ কিলোমিটার কোথাও আবার 10 কিলোমিটার । দুর্গম এই চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যাতায়াত করেন তাঁরা ।

অভিযোগ, পাহাড়ের এই গ্রামগুলোর কোথাও বিন্দুমাত্র স্বাস্থ্য পরিষেবা না থাকার ফলে বিপাকে পড়ছেন পাহাড়ের জনজাতিরা । অন্তঃসত্ত্বা থেকে শুরু করে শিশু, বৃদ্ধ মানুষজন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দুর্গম পথ বয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই ৷ দীর্ঘ পথ পেরিয়ে পৌঁছতে হয় সান্তলা বাড়ি । সেখান থেকে 40 কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আসতে হয় স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য । অনেক ক্ষেত্রেই অন্তঃসত্ত্বা দুর্গম পথের ধকল সহ্য করতে না পেরে পথেই প্রসব করেন । কখনও সকলের চোখের সামনেই কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন । অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে এভাবেই চলছে স্বাধীন ভারতের বক্সা পাহাড়ের মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবা ।

Intro:Exclusive_আলিপুরদুয়ার:- স্বাধীন ভারত বর্ষে এক টুকরো পরাধীন ভারতের ছবি দুর্গম পাহাড় বক্সা।2016 সালে উড়িষ্যার কালাহান্ডির দানা মাঝি তার স্ত্রীর মৃতদেহ নিজের কাঁধে চাপিয়ে সৎকারের জন্য প্রায় 10 কিলোমিটার পথ হেঁটে গোটা দেশে সারা ফেলে দিয়েছিলেন । তবে বক্সা পাহারে দৈনন্দিন দানা মাঝির মতো ঘটনা যেন রোজনামচায় পরিণত হয়েছে ।যদিও এখানে দেখার কেউ নেই । দেশ স্বাধীন হয়েছে 72 বছর ।স্বাধীনতার পুর্বে ব্রিটিশ আমলে ছিল স্বাস্থ্য কেন্দ্র ।তবে স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্গম বক্সা পাহাড়ের কোল থেকে পাকাপাকিভাবে বিদায় নিয়েছে স্বাস্থ্য কেন্দ্র। 3000 আদিবাসী জনজাতির বসবাস দুর্গম বক্সা পাহারে নেই ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবা ।2


Body:এই বক্সা পাহাড় এর কোলে রয়েছে 11 টি দুর্গম জনবসতি। মোট জনসংখ্যা প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার। বক্সা পাহাড়ের কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাসিগাঁও ,অসলুম ,দাঁড়াগাঁও চুনাভাটি,লেপচাখা,সদরবাজার ,লালবাংলো ,বক্সাফোর্ট এর মত গ্রাম ।এখানে মিলে মিশে রয়েছে ডুকপা ,লেপচা ,মেচ ,রাভা , সাঁওতাল সহ একাধিক আদিবাসী জনজাতি । বক্সা পাহাড় এর পাদদেশ সনতলা বাড়ি থেকে বক্সার পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা গ্রামগুলির দূরত্ব কোথাও বা পাঁচ কিলোমিটার কোথাও আবার 10 কিলোমিটার। দুর্গম এই পাহাড়ি পথ চড়াই উতরাই পেরিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে পাহাড়ের মানুষগুলো পৌঁছে যায় নিজ নিজ গ্রামে। পাহাড়ের এই গ্রামগুলোর কোথাও বিন্দুমাত্র স্বাস্থ্য পরিষেবা না থাকার ফলে বিপাকে পড়েন পাহাড়ের সরল সাদাসিদে মানুষগুলো। প্রসব যন্ত্রণায় কাতর গর্ভবতী মহিলা থেকে শুরু করে শিশু ,বৃদ্ধ ,বৃদ্ধাদের বাশের মাচায় করে দুর্ভোগের পথ অতিক্রম করে পৌঁছতে হয় সান্তলা বাড়ি। সেখান থেকে 40 কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আসতে হয় স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য। অনেক ক্ষেত্রেই গর্ভবতী মহিলা পাহাড়ি চড়াই-উতরাইয়ের ধকল সহ্য করতে না পেরে পথেই প্রসব করে দেন। কখনো আবার সকলের চোখের সামনেই কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন। স্বাধীনতার পর থেকে এভাবেই চলছে স্বাধীন ভারতের বক্সা পাহাড় এর মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবা। দেশের 72 তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে বক্সা পাহাড় এর মানুষ তাই বলেন যে ব্রিটিশ রাজত্বে এখানে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কারা বন্দী করে রাখা হতো। আজও সেই ঐতিহাসিক বক্সা ফোর্ট ভারতের স্বাধীনতার স্মৃতি বহন করে চলছে। ব্রিটিশ আমলে এখানে ছিল স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষার পরিষেবা ,উপার্জনের নানান পথ । তবে স্বাধীনতার পরেই এই সমস্ত উধাও হয়ে যায় এই দুর্গম বক্সা পাহাড়ের কোল থেকে। স্বাধীন দেশে থেকেও তাই আজও তারা পরাধীনতার শৃংখল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। এলাকার মানুষ জানান এই বক্সা পাহাড়ের কোলে ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে ও তারা দরবার করেছেন। তবে কোন লাভ হয়নি ।সেই তিমিরেই বক্সাফোর্ট।


Conclusion:বক্সা পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে ভগ্নপ্রায় ঐতিহাসিক বক্সা রাজবন্দী শিবির সহ পাহাড়ি মানুষ গুলো যেন আজও পরাধীনতার বেড়ি পরে স্বাধীনতার প্রতীক্ষায় ।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.