আপনার স্বপ্নের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য সাধ্যের মধ্যে দেশের কয়েকটি শহর

কোরোনা ভাইরাস আমাদের জীবনকে অকল্পনীয়ভাবে বদলে দিয়েছে । সামাজিক দূরত্ব হয়ে উঠেছে নিউ নর্মাল, আর জাঁকজমকপূর্ণ ভারতীয় বিবাহ অনুষ্ঠান এখন ছোট, এবং আরও আন্তরিক হয়ে উঠেছে । ছোটই এখন বড়র মর্যাদা পাচ্ছে ।

কী ছিল তাই নিয়ে দুঃখ করার বদলে যুগলরা এবং নতুন পরিস্থিতির রুপোলি রেখার দিকে ছুটছেন । অতিথি তালিকায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়ার ফলে, অনেকেই এই সুযোগে তাঁদের ডেস্টিনেশন ওয়েডিং-এর স্বপ্নকে সফল করছেন ।

এই প্যানডেমিকে বাজেটের চিন্তা না করেই কোনও চমকপ্রদ জায়গায়, এমনকী শহরের বাইরেও গাঁটছড়া বাঁধার সুযোগ এনে দিয়েছে । পকেটে চাপ পড়বে না, এমন ডেস্টিনেশন ওয়েডিং আর কোনও কষ্টকল্পনা নয় । ওয়েডিংজ় ডট ইনের বিশেষজ্ঞরা পাঁচটি এমন বাজেট-ফ্রেন্ডলি শহরের কথা জানালেন, যেখানে ছোট্ট করে স্বপ্নের বিয়েটা আয়োজন করা যায় ।

গোয়া

রৌদ্রস্নাত সমুদ্রতট আর অসাধারণ দৃশ্য নিয়ে, গোয়া হল অন্তরঙ্গ ও আনন্দের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য আদর্শ জায়গা । যুগলরা বিপুল খরচ না করেই একটা দুর্দান্ত রিচ রিসর্টকে তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নিতে পারেন । গোয়ায় সাধ্যের মধ্যেই প্রাইভেট বিচ আছে এমন রিসর্ট, পুরনো স্টাইলের পর্তুগিজ সরাইখানা এবং বাজেট-ফ্রেন্ডলি হোম স্টে রয়েছে । সড়ক, বিমান ও রেলপথে সহজে পৌঁছনোর পাশাপাশি, গোয়ায় এমন অনেক রেস্তোঁরাঁ রয়েছে, যেখানে একইসঙ্গে স্থানীয় এবং কন্টিনেন্টাল ফ্লেভারের মেলবন্ধন মেলে, আর তাই ছোট আকারে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য এটা আদর্শ জায়গা ।

জয়পুর

গোলাপি শহর বলে পরিচিত জয়পুরে রাজকীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি রয়েছে । জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট হটস্পট হওয়ার পাশাপাশি, এটি বিয়ের জন্যও যথাযথ গন্তব্য । জয়পুরে হাল আমলের প্রচুর বুটিক গেস্ট হাউস এবং হোম স্টে রয়েছে, যেগুলো সাধ্যের মধ্যে এবং সীমিত অতিথি নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য আদর্শ । হোম স্টে এবং ইন গুলিতে নবদম্পতিরা বাছাই করা খাবার পছন্দ করতে পারেন, পছন্দমতো ডাইনিং ব্যবস্থা সহ অনেককিছুই করতে পারেন । জয়পুরও ভারতের সমস্ত বড় শহরের সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত এবং মিনি ওয়েডিংয়ের আদর্শ গন্তব্য ।

পুণে

সহ্যাদ্রি পর্বতের কোলে পুণে ছোট আকারের ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের পক্ষে দারুণ জায়গা । এই শহরে কম খরচে অজস্র হোটেল, ফার্ম, রিসর্ট ও হলিডে হোম রয়েছে । মুম্বইয়ের আশেপাশে সমস্ত ছোট-বড় শহরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি, পুণেতে রয়েছে পুরনো মারাঠি সংস্কৃতি ও নতুন যুগের আদবকায়দার সঠিক সংমিশ্রণ । যাঁরা আউটডোর ওয়েডিং করতে চান, তাঁদের পক্ষে এখানকার ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়া আরেকটা সুবিধাজনক বিষয় ।

মুসৌরি

যাঁরা পরিণয়ে আবদ্ধ হতে চলেছেন, তাঁদের কাছে গাড়োয়াল হিমালয়ের পাদদেশের এই হিল স্টেশন স্বর্গের থেকে কিছু কম নয় । মুসৌরিতে বেছে নেওয়ার মতো অনেক মন কেড়ে নেওয়া জায়গা রয়েছে । এই পাহাড়ি শহরে অনেক হোম স্টে, হোটেল ও গ্রাম্য সরাইখানা রয়েছে । তার সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রধান শহরগুলোর তুলনায় কম দামে সরবরাহ করেন । তাই কম বাজেটে অথচ উৎসবের আমেজে বিয়েটা সারতে এটা আদর্শ জায়গা ।

চণ্ডীগড়

বেশ কিছু তিন-তারা হোটেল ও ফার্মহাউস থাকার ফলে এই শহরে ছোট ও কম বাজেটের বিয়ের অনুষ্ঠান ভালভাবেই সারা যায় । খোলামেলায় ফার্ম ওয়েডিংয়ের জন্য ডেকরেশনে ন্যূনতম খরচ হয় । তার বদলে নবদম্পতির পছন্দ অনুসারে সাজানো যেতে পারে । পাশাপাশি চণ্ডীগড় উত্তর ভারতের কয়েকটি সুস্বাদু পদেরও ঠিকানা, এবং দেশের সবুজতম ও পরিচ্ছন্নতম শহরগুলোর মধ্যে একটা । এই বিষয়গুলোর দিকে নজর দিলেই আপনি একটা আদর্শ মাইক্রো ওয়েডিংয়ের জায়গা পেয়ে যাবেন ।

জাঁকজমকের সঙ্গে বিয়ের পরিকল্পনায় এই অতিমারীতে জল ঢেলে দিতে পারে । কিন্তু ভাল দিকটা হল, এর জেরে ঘরোয়া বিয়ের অনুষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে, যা পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে উদযাপন করা যায় । উপরি পাওনা হিসেবে ওয়েডিংজ ডট ইন অবিশ্বাস্য সমস্ত অফারও দিচ্ছে, যা যুগলরা বিয়ের জন্য বুক করতে পারেন ।