ETV Bharat / city

হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল পরীক্ষার ফলপ্রকাশ ; বাড়ল পাশের হার

author img

By

Published : Jul 16, 2020, 10:01 PM IST

মাধ্যমিকের মতোই এই বছর পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত পরীক্ষাগুলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে চলতি বছরের হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিলের ফলাফল প্রকাশ করলেন পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ডঃ আবু তাহের কামরুদ্দিন। এই ফল বলছে, হাই মাদ্রাসার মেধাতালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে নিয়েছে ছাত্রীরা। এছাড়াও বেশ কয়েকবছর পর এই বছর হাই মাদ্রাসার মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে এক অ-মুসলিম ছাত্রও।

Kolkata
Kolkata

কলকাতা, 16 জুলাই : মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার পর আজ আনুষ্ঠানিকভাবে চলতি বছরের হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিলের ফলাফল প্রকাশ করলেন পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ডঃ আবু তাহের কামরুদ্দিন। এই বছরের হাই মাদ্রাসার মেধাতালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে নিয়েছে ছাত্রীরা। এছাড়াও বেশ কয়েকবছর পর এই বছর হাই মাদ্রাসার মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে এক অ-মুসলিম ছাত্রও। গত বছরের তুলনায় হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল এই তিনটিতেই বেড়েছে মোট পাশের হার ।


মাধ্যমিকের মতোই এই বছর পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত পরীক্ষাগুলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। পরীক্ষা শুরু হয়েছিল 10 ফেব্রুয়ারি থেকে। শেষ হয় 12 মার্চ। পরীক্ষা শেষের 125 দিন পর আজ হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিলের ফল প্রকাশ করল মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ। মাধ্যমিকের মতোই মাদ্রাসার পরীক্ষা সম্পূর্ণ হওয়ার কারণে প্রকাশ করা হয়েছে মেধাতালিকাও। এই বছর হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল মিলিয়ে মোট 64 হাজার 450 জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তার মধ্যে 21 হাজার 966 জন ছাত্র ও 42 হাজার 484 জন ছাত্রী । 45 হাজার 898 জন রেগুলার পরীক্ষার্থী ছিল। তাদের মধ্যে মুসলিম পরীক্ষার্থী 40 হাজার 160 জন ও অমুসলিম 5 হাজার 738 জন ।

হাই মাদ্রাসায় মোট 51 হাজার 134 জন পরীক্ষা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে 15 হাজার 735 জন ছাত্র ও 35 হাজার 401 জন ছাত্রী । এই বছর হাই মাদ্রাসায় মোট পাশের হার 86.15 শতাংশ। গতবছর হাই মাদ্রাসায় মোট পাশের হার ছিল 83.20 শতাংশ। পাশের হারে প্রথম স্থানে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। সেখানে মোট পাশের হার 97.29 শতাংশ। 93.19 শতাংশ পাশের হার নিয়ে দক্ষিণ 24 পরগনা দ্বিতীয় স্থানে ও 92.69 শতাংশ পাশের হার নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাঁকুড়া। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে উত্তর 24 পরগনা ও কলকাতা। ওই দুই জেলায় পাশের হার যথাক্রমে 92.30 ও 90.02 শতাংশ।

অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের সংখ্যার বিচারে ছাত্রীরা এগিয়ে থাকলেও পাশের হারে এগিয়ে গিয়েছে ছাত্ররা। এই বছর হাই মাদ্রাসা ছাত্রদের পাশের হার 89.79 শতাংশ ও ছাত্রীদের পাশের 84.58 শতাংশ। তবে, বেশ কয়েক বছর পর হাই মাদ্রাসায় মেধাতালিকার শীর্ষস্থানে জায়গা করে নিয়েছে ছাত্রীরা। মোট 800 নম্বরের মধ্যে 771 পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছে নফিসা খাতুন। সে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাই মাদ্রাসার ছাত্রী। দ্বিতীয় স্থানও অধিকার করে নিয়েছে এক ছাত্রী। তার নাম তামান্না ইয়াসমিন। 769 নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে মালদার বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার ওই ছাত্রী। 767 পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুর্শিদাবাদের লালগোলা রহমাতুল্লাহ হাই মাদ্রাসার ছাত্র আবু বক্কর। হাই মাদ্রাসা প্রথম থেকে দশম স্থানে মোট 13 জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এক অ-মুসলিম ছাত্রও। 760 নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে নিয়েছে বীরভূমের খান্দাগ্রাম ডিএস হাই মাদ্রাসার ছাত্র জগন্নাথ দাস।

আলিম পরীক্ষায় এ বছর 9 হাজার 233 জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের মধ্যে 4 হাজার 159 জন ছাত্র ও 5 হাজার 74 জন ছাত্রী ছিল। মোট 8 হাজার 648 রেগুলার পরীক্ষার্থী ছিল। তাদের মধ্যে সফল হয়েছে 7 হাজার 659 জন পরীক্ষার্থী। চলতি বছর পাশের হার 88.56 শতাংশ। গতবছর আলিমের পাশের হার ছিল 84.95 শতাংশ। আলিমে 100 শতাংশ পাশের হার পূর্ব মেদিনীপুরে। ফাজিলে 4 হাজার 81 জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের মধ্যে 2 হাজার 72 জন ছাত্র ও 2 হাজার 9 জন ছাত্রী । রেগুলার পরীক্ষার্থী ছিল মোট 3 হাজার 898 জন। তাদের মধ্যে সফল হয়েছে 3 হাজার 491 জন পরীক্ষার্থী। ফাজিলে মোট পাশের হার 89.56 শতাংশ। যা গত বছর ছিল 87.49 শতাংশ। চলতি বছর আলিমের মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে 11 জন ও ফাজিলের মেধাতালিকায় রয়েছে 14 জন।


মাধ্যমিকের মতোই আজই মার্কশিট ও সার্টিফিকেটের হার্ডকপি হাতে পাবে না পরীক্ষার্থীরা। মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি জানান, “আজ ওয়েবসাইটে ফলাফল দেখে নিতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। যেহেতু, এই বছর পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনই পরীক্ষার্থীদের হাতে মার্কশিট ও সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া যাচ্ছে না, তাই ওয়েবসাইটে এই বছর বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বর দেখতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। আগামী 20 জুলাই পর্ষদের বিভিন্ন জেলার বিতরণ কেন্দ্রগুলিতে পৌঁছে দেওয়া হবে মার্কশিট ও সার্টিফিকেটের হার্ডকপি। মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষরা সেখান থেকে তা সংগ্রহ করে 21-22 জুলাই থেকেই সেগুলি পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিতে পারবেন। প্রতিষ্ঠান জীবাণুমুক্ত করা থেকে শুরু করে কোরোনা সম্পর্কিত সব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিতরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পর্ষদ থেকে । মাদ্রাসার ক্ষেত্রেও মার্কশিট ও সার্টিফিকেট প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে অভিভাবকদের। অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানের রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে এসে সেগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে পারবেন। ”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.