কলকাতা, 2 মার্চ : উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, বাংলার সব প্রান্ত জুড়ে বুধবার সবুজ ঝড় বইল ৷ সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার হল ৷ 108টি পৌরসভার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে এল 102টি (tmc wins more than hundred municipality in west bengal) ৷ আসন সংখ্যার নিরিখেও বিরোধীদের অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দল ৷
বিশেষ করে গত দু‘তিন বছরে যে জায়গাগুলিতে বিজেপি নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছিল, সেই উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির ৷ সর্বত্রই বোর্ড দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ বিজেপির যে হেভিওয়েট নেতারা রয়েছেন, তাঁরাও রক্ষা করতে পারেননি নিজেদের গড় ৷
এই পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণভাবে নদীয়ার তাহেরপুর পৌরসভা দখল করে সবাইকে চমকে দিয়েছে বামেরা ৷ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে প্রতিটি উপনির্বাচনেই বামেদের ভোট শতাংশ বাড়ছিল ৷ কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল ৷ তাহেরপুরের জয় সেই প্রচেষ্টায় নিঃসন্দেহে অনেকটাই অক্সিজেন দেবে ৷
অন্যদিকে এই পৌরভোট পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত সামনে আনল৷ মাত্র দু’মাস আগে দল গড়ে দার্জিলিং পৌরসভার বোর্ড গঠন করতে চলেছে হামরো পার্টি ৷ পাহাড়ের মানুষের কাছে নতুন নেতা হিসেবে উঠে এলেন জিএনএলএফ ছেড়ে হামরো পার্টি তৈরি করা অজয় এডওয়ার্ড ৷
আর গত এক দেড়-দশকে পাহাড়ের রাজনীতির মুখ হয়ে ওঠা বিমল গুরুংয়ের জনপ্রিয়তা প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল ৷ পাহাড়ে যে বিমল আর অবিসংবাদিত নেতা নন, তার তো প্রমাণ মিলল ৷ কারণ, গুরুংয়ের মোর্চা দার্জিংয়ের তৃতীয় স্থানে ৷ বরং 9টি আসন জিতে বিরোধী দল হতে চলেছে অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৷
গোটা বাংলার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই এই জয়ের পর উচ্ছ্বসিত ৷ খুশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷ তাঁর কথায়, ‘‘আরও একটা জনাদেশ আমাদের দিকে দেওয়ার জন্য মা-মাটি-মানুষকে হার্দিক শ্রদ্ধা জানাই ৷ পৌরসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের জানাই অভিনন্দন ৷ এই জয় থেকে আমাদের কর্তব্য ও নিষ্ঠা আরও বেড়ে গেল ৷ আসুন, রাজ্যের শান্তি, উন্নতি ও উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করি ৷ জয় বাংলা ৷’’
অন্যদিকে বিরোধীদের দাবি, তৃণমূল সন্ত্রাস করে জিতেছে৷ এই রায় মানুষের দেওয়া নয় ৷ কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, মক ভোট হোক৷ আজকের দিনে একটি ওয়ার্ডে কংগ্রেস হারলে তিনি রাজনীতি করা ছেড়ে দেবেন ৷ আর হিম্মত থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে দেখান ৷
আর ব্যারাকপুরের সাংসদ বিজেপির অর্জুন সিংয়ের দাবি, "মানুষের হার হয়েছে । ছাপ্পাশ্রীর জয় হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলায় গণতন্ত্রের হত্যা হয়েছে ।"
