কলকাতা, 28 মে: ঘূর্ণিঝড় আমফানে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা লন্ডভন্ড হওয়ার পরই ক্ষতিগ্রস্ত পড়ুয়াদের সাহায্যের উদ্যোগ নিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা । অর্থ সংগ্রহ করে ক্ষতিগ্রস্ত পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্য করাও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা । ইতিমধ্যেই অধ্যাপক, ছাত্র সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মিলিয়ে 100 জনের বেশি পড়ুয়াকে সাহায্য করা সম্ভব হয়েছে ।
আমফানের তাণ্ডবের পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য ত্রাণ তহবিল গঠন করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন JUTA ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের তরফেও ত্রাণ তহবিল গঠন করা হয় । তারা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছেও ক্ষতিগ্রস্ত পড়ুয়াদের সাহায্য করার আবেদন জানায় । ইতিমধ্যেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 19 জন পড়ুয়াকে এক হাজার টাকা করে দিয়ে সাহায্য করেছে । AFSU-র তরফে এখনও পর্যন্ত 55 জন পড়ুয়াকে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে নিড হেল্প-আমফান প্রোজেক্ট ত্রাণ তহবিল থেকে । JUTA-র তরফেও এখনও পর্যন্ত প্রায় 40 জন পড়ুয়াকে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে ।
JUTA-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, "তথ্য অনুযায়ী যাদবপুরের 200-র কাছাকাছি পড়ুয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আমফানে । মূলত দক্ষিণ 24 পরগনার পড়ুয়ারাই বেশি রয়েছেন এই তালিকায় । তারপর যথাক্রমে পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর 24 পরগণা, হুগলির পড়ুয়ারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন । পড়ুয়াদের টাকা পাঠাতে খুব সমস্যা হচ্ছে । আমরা 150 থেকে 200 জন পড়ুয়ার নাম পেয়েছি । আরও বেশ কিছু বিভাগের থেকে নাম আসা বাকি আছে । আস্তে আস্তে টাকা পাঠাচ্ছি । নেটওয়ার্কের খুব সমস্যা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই 40 জনের কাছাকাছি পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে হাজার টাকা করে পাঠাতে পেরেছি । বেশিরভাগ পড়ুয়া আর্টসের । সায়েন্সের কিছু পড়ুয়াও রয়েছেন । কিছু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া রয়েছেন । আপাতত এক হাজার টাকা করে পাঠাব । তারপরে যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তাদের দ্বিতীয় দফায় সাহায্য করার কথা ভাবছি ।’’
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের তরফে লকডাউনের পর থেকেই দুঃস্থ সহপাঠী, মেস স্টাফ সহ আর্থিকভাবে দুর্বলদের সাহায্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল । তাঁরা বলেন, ‘‘গত দু’মাস ধরে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ এই সংকটের সময়ে যাঁদের সাহায্য প্রয়োজন হয়েছে, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং মোট 50 হাজার টাকা দিয়ে তাঁদের সাহায্য করেছে । 16 জন ক্যাম্পাস পড়ুয়াকে মোট 21000 টাকা, হিন্দু হস্টেলের 8 জন স্টাফকে মোট 8000 টাকা, 6 জন গার্লস হস্টেলের স্টাফকে মোট 11000 টাকা, ক্যান্টিনের সুকুমার দাকে 1000 টাকা, চা-কাকু আনন্দ শীলকে 1000 টাকা, বাদাম কাকুকে 1000 টাকা, দিল্লিতে আটকে পড়া এক পড়ুয়াকে 1000 টাকা ও আরও কয়েকজনকে আর্থিক সাহায্য করার পাশাপাশি রূপান্তরকামীদের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে । এই উদ্যোগ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ।’’
পাশাপাশি, আমফানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ার পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগও নিয়েছে তারা ।