ETV Bharat / city

Calcutta High Court বাবার চাকরি হাতিয়ে দায় ঝেড়েছেন সৎ মা, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি আদালতের

author img

By

Published : Aug 24, 2022, 6:17 PM IST

প্রয়াত স্বামীর চাকরি হাতে আসতেই অন্য পুরুষকে বিয়ে মহিলার ৷ মাসোহারা না পেয়ে অসহায় প্রাক্তন সৎ ছেলে ও তার ঠাকুরদা ৷ পিতৃহারা নাবালকের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় (Justice Abhijit Ganguly) ৷

Calcutta High Court promises to be with Teenage boy as Stepmother stopped sending money
Calcutta High Court বাবার চাকরি হাতিয়ে দায় ঝেড়েছেন সৎ মা, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি আদালতের

কলকাতা, 24 অগস্ট: এবার এক অসহায় নাবালকের পাশে দাঁড়াল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ পিতৃহারা ওই কিশোরের আইনজীবী জানিয়েছেন, ছেলেটির বাবার মৃত্যুর পর তাঁর চাকরিটি পান নাবালকের সৎ মা ৷ এর কিছু দিন পর অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘর বাঁধেন তিনি ৷ তারপর থেকে প্রয়াত প্রাক্তন স্বামীর পরিবারকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন ওই মহিলা ৷ এদিকে, ওই কিশোর সবেমাত্র মাধ্যমিক পাশ করেছে ৷ তার পরিবারের দ্বিতীয় সদস্য বলতে রয়েছেন, সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ ৷ তিনি কিশোরের ঠাকুরদা ৷ তাঁর পক্ষে এই বয়সে উপার্জন করা সম্ভব নয় ৷ সব শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় (Justice Abhijit Ganguly) ৷ ভরা এজলাসেই সরাসরি কিশোরকে আশ্বাসের বাণী শোনালেন তিনি ৷ একইসঙ্গে, সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারের উদ্দেশে বিচারপতির নির্দেশ, পরবর্তীতে শুনানিতে অভিযুক্ত মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজির হতে হবে তাঁকে ৷ মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী 30 অগস্ট ৷

ওই নাবালকের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা ৷ সে আদিবাসী পরিবারের সন্তান ৷ আগেই ছেলেটি তার মাকে হারায় ৷ এরপর তার বাবা টিঙ্কু রানি টিঙ্গুয়া নামে আর এক মহিলাকে বিয়ে করেন ৷ কিশোরের বাবা পেশায় শিক্ষক ছিলেন ৷ তাঁর রোজগারেই চলত সংসার ৷ কিন্তু, হঠাৎই তাঁর মৃত্যু হয় ৷ এরপর স্বামীর চাকরি পান টিঙ্কু ৷ প্রথম দিকে সবকিছু ঠিকই ছিল ৷ কিন্তু, পরে অন্য একজন বিয়ে করেন টিঙ্কু ৷ পুরনো শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করেন তিনি ৷ কিন্তু, প্রয়াত প্রাক্তন স্বামীর চাকরি ছাড়েননি ৷

আরও পড়ুন: সিবিআই-এর আইনজীবীর আচরণে ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়

এদিকে, অর্থাভাবে ওই নাবালক ও তার বৃদ্ধ ঠাকুরদার কার্যত অনাহারে দিন কাটতে থাকে ৷ বাধ্য হয়েই আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা ৷ এর আগের শুনানিতে আদালত জানিয়েছিল, টিঙ্কুকে তাঁর প্রয়াত প্রাক্তন স্বামীর পরিবারের দেখভালের সমস্ত দায়িত্ব নিতে হবে ৷ ইতিমধ্য়ে ওই নাবালক 80 শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে ৷ কিন্তু, টাকার অভাবে পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তার ৷ সেই সমস্যাও মেটে আদালতের হস্তক্ষেপে ৷

অসহায় কিশোরের পাশে আদালত ৷

আদালতের নির্দেশেই জেলা শিশুকল্যাণ আধিকারিক ওই কিশোরকে একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন ৷ আগে ওই পরিবার থাকত ত্রিপলের ঘরে ৷ সরকারের তরফে তাদের পাকা বাড়ি করে দেওয়া হয় ৷ একইসঙ্গে টিঙ্কুকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তিনি যেন প্রতি মাসে তাঁর প্রয়াত প্রাক্তন স্বামীর পরিবারকে 7 হাজার টাকা করে মাসোহারা দেন ৷ টিঙ্কু তাতে রাজিও হয়ে যান ৷ কিন্তু, গত এপ্রিল মাস থেকে আবারও টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন তিনি ৷ তার জেরেই ফের আদালতে আসতে বাধ্য হয় নাবালকের পরিবার ৷

বুধবার আদালতে সমস্ত ঘটনা জানার পর ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় ওই কিশোরকে বলেন, "তোমার জন্য আদালত আছে ৷ চিন্তা নেই ৷ ভালো করে পড়াশোনা কর ৷" এরপরই বিচারপতি বলেন, আগামী শুনানির দিন অভিযুক্ত মহিলাকে আদালতে হাজির করাতে হবে ৷ সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে ৷ তিনি নিজেও ওই দিন আদালতে হাজির থাকবেন ৷ বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন, যদি টিঙ্কু তাঁর প্রয়াত প্রাক্তন স্বামীর পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালন না করেন, তাহলে আদলত তাঁর বর্তমান চাকরিটি কেড়ে নিতেও দ্বিধা করবে না ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.