পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

Barasat Snake Biting : বিষধর সাপের ছোবল ! চিকিৎসকদের চেষ্টায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন যুবক

By

Published : Jun 10, 2022, 12:05 PM IST

বিষধর সাপের ছোবলে মরণাপন্ন রোগীকে বাঁচালেন বারাসত জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা ৷ নতুন জীবন ফিরে পেয়ে খুশি আতাউল রহমান নামে বছর বাইশের ওই যুবক (Barasat Snake Bites) ।

Barasat Snake Bites
সাপে কাটা রোগীকে বাঁচালেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা

বারাসত, 10 জুন : ঘুমানোর সময় কখন যে বিষধর সাপ ছোবল মেরে (Barasat Snake Bites) পালিয়েছে তা টেরই পাননি যুবক । যতক্ষণে বোঝা সম্ভব হয়েছিল ততক্ষণে সাপে কাটা ওই রোগীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন । সেই অবস্থায় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করে বাঁচিয়ে তুললেন সঙ্কটাপন্ন ওই রোগীকে । তাঁদের প্রচেষ্টায় নতুন জীবন ফিরে পেলেন আতাউল রহমান নামে বছর বাইশের ওই যুবক । কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সাফল্য পেয়েছে বারাসত জেলা হাসপাতাল । নতুন জীবন ফিরে পেয়ে রীতিমতো আপ্লুত রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা । সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাক্ষাৎ ভগবানের সঙ্গে তুলনা করছেন তাঁরা ।

উত্তর 24 পরগনার শাসনের দক্ষিণ বহিরা গ্রামে বাড়ি আতাউলের । মঙ্গলবার ভোররাতে তিনি যখন বাড়িতে শুয়েছিলেন তখন তাঁর হাতের ওপর দিয়ে একটি বিষধর সাপ চলে যায় । তখনও সে বুঝতে পারেনি বিষধর সাপ তাঁর পায়ে ছোবল মেরে পালিয়েছে । ঘুম থেকে উঠে পরিবারকে যুবক সাপের চলে যাওয়ার বিষয়টি জানান । সাপ কামড়েছে কি না জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, কামড়ায়নি । এর কিছুক্ষণ পর থেকেই যুবকের পেটে যন্ত্রণা এবং বমি শুরু হয় । প্রথমে বিষয়টি ডি-হাইড্রেশন ভেবে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে তাঁকে নিয়ে যায় পরিবারের লোকেরা । কিন্তু সেই চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ খেয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে । উপরন্তু রোগীর শরীর ক্রমশ নিস্তেজ হতে শুরু করে । জড়িয়ে যেতে থাকে কথাবার্তাও ।

আরও পড়ুন :RNA-based Therapy : করোনা মোকাবিলায় পথ দেখাচ্ছে আরএনএ-নির্ভর চিকিৎসা

লক্ষ্মণ খারাপ দেখে সেদিনই বিকেলে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে । প্রথমে সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসা চলতে থাকে ওই রোগীর । কিন্তু কিছুতেই তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না । অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল ৷ এরইমধ্যে রোগীর বিভিন্ন লক্ষ্মণ দেখে সন্দেহ জাগে হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডলের মনে । তিনি ও চিকিৎসকদের টিম দেরি না করে সঙ্কটাপন্ন ওই রোগীর ডবল ব্লাড ক্লটিং টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেন । সেই রিপোর্টেই শেষে ধরা পড়ে রোগীকে সাপে কাটার বিষয়টি । এরপরই সার্জিক্যাল ওয়ার্ড থেকে সিসিইউ ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয় সাপে কাটা ওই রোগীকে । রাখা হয় ভেন্টিলেশনে । 24 ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টার শেষে সাপে কাটা রোগীকে সুস্থ করে তোলেন তাঁরা । আরও একদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ওই রোগীকে ।

সাপে কাটা রোগীকে বাঁচালেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা

এই বিষয়ে হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, "রোগীর পেটে যন্ত্রণা, বমি এবং ছটফট করতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল সাপে কাটলেই একমাত্র রোগী এই ধরনের আচরণ করে থাকে । ডবল ব্লাড ক্লটিং টেস্টের রিপোর্ট আসার পর সেটাই স্পষ্ট হয়েছে । ঠিকমতো জীবনদায়ী ওষুধ এবং ইনজেকশন প্রয়োগ করার ফলেই রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে । এছাড়া চিকিৎসকদের নিরলস প্রচেষ্টা তো রয়েছেই । রোগী এখন পুরোপুরি সুস্থ । খুব ভাল লাগছে রোগীকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দিতে পেরে ৷"

এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে আতাউল বলেন, "চিকিৎসকরা সত্যিই ভগবান । তাঁরা না থাকলে এই যাত্রায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারতাম কী না জানি না ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details