পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

মহাত্মার স্মৃতি আঁকড়ে মেদিনীপুরের গান্ধিঘাট

By

Published : Oct 2, 2019, 4:26 PM IST

Updated : Oct 2, 2019, 4:52 PM IST

মেদিনীপুর শহরে কংসাবতী নদীর (কাঁসাই) ঘাটে ভাসানো হয় মহাত্মা গান্ধির চিতাভস্ম ৷ এর পর এই ঘাটের নাম দেওয়া হয় গান্ধিঘাট ৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা কংগ্রেসের আক্ষেপ, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার গান্ধিজির স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে ৷

medinipore

মেদিনীপুর, 2 অক্টোবর : 1947 সালে 15 অগাস্ট ভারত স্বাধীন হল৷ 1948 সালের 30 শে জানুয়ারি গান্ধিজি প্রাণ হারালেন ৷ 1948 সালের 12 ফেব্রুয়ারি গান্ধিজির চিতাভস্ম দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে ভাসানো হয়েছিল ৷ গান্ধিজির চিতাভস্ম গোটা দেশের নদ-নদীর পাশাপাশি মেদিনীপুরের কাঁসাই নদীর ঘাটেও ভাসানো হয়েছিল৷ পরবর্তীকালে এই ঘাটের নাম দেওয়া হয় গান্ধিঘাট৷ জেলা কংগ্রেসের উদ্যোগে ঘাটে বসানো হয়েছিল গান্ধিজির একটি আবক্ষ মূর্তি । সেই ঘাট আজও বহন করে চলছে গান্ধিজির অবদানের ইতিহাস ৷

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে একত্রিত করতে গোটা দেশে ঘুরেছেন গান্ধিজি ৷ বেশ কয়েকবার মেদিনীপুর শহরেও এসেছিলেন তিনি ৷ 1921 সালের 20 ও 21 সেপ্টেম্বর দু'দিন গান্ধিজি মেদিনীপুর শহরের গোলকুঁয়া চকে কিশোরী পতি রায়ের বাসভবনে ছিলেন ৷ সেই সময় মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের ময়দানে সভা করেছিলেন তিনি৷ সেই সভায় সভাপতি ছিলেন দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল৷ গান্ধিজির বাণী শুনে হাজার হাজার মানুষ অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল সেই সভা থেকেই ৷

এরপর দেশব্যাপী ইংরেজবিরোধী আন্দোলন বাড়তে থাকে ৷ 1947 সালে দেশ স্বাধীন হল ৷ স্বাধীন হওয়ার এক বছরও পেরোয়নি ৷ হত্যা করা হল গান্ধিজিকে ৷ বাপুর মৃত্যুর পর তাঁর চিতাভস্ম নিয়ে প্রতিটি রাজ্যে পথ পরিক্রমা করেছেন হাজার হাজার ভারতবাসী ৷ মহাত্মার চিতাভস্ম সারা দেশের পাশাপাশি নিয়ে আসা হয় মেদিনীপুর শহরেও৷

ভিডিয়োয় দেখুন

চিতাভস্ম নিয়ে শোকযাত্রার আয়োজন করেছিলেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব, সেই যাত্রায় হেঁটেছিল গোটা মেদিনীপুর শহর৷ এই শোকযাত্রার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন মেদিনীপুরের বিপ্লবী মদনমোহন খান ও তার স্ত্রী বিজনবালা খান ৷ শোকযাত্রা শেষে গান্ধিজির চিতাভস্ম ভাসানো হয় কাঁসাই নদীর ঘাটে ৷ এই ঘাটে প্রতি বছর শহরের সমস্ত দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন হয় ৷ সারা বছর বহু মানুষের সমাগম হয় মেদিনীপুর শহরের গান্ধিঘাটে৷

গান্ধিজির চিতাভস্ম ভাসানোর পর তৎকালীন মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব গান্ধিঘাট সাজানোর ব্যাবস্থা করে৷ 1952 সালে বসানো হয় বাপুজির আবক্ষ মূর্তি ৷ প্রতি বছর বিভিন্ন সময়ে এই গান্ধিমূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ ধীরে ধীরে মেদিনীপুর শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে গান্ধিঘাট ৷

Intro:গান্ধীজীর চিতাভস্ম গোটা দেশের নদ-নদীর পাশাপাশি বিসর্জন করা হয় মেদিনীপুরের শেষপ্রান্ত সংলগ্ন কাঁসাই নদীর ঘাটে ,যা গান্ধী ঘাট হিসেবে পরিচিত ,সেই গান্ধীঘাটে বসানো হয়েছিল গান্ধীজীর একটি মূর্তি ,যদিও সেই ঘাট আজও পরিচয় বহন করে চলছে গান্ধীজীর অবদানের ইতিহাস l মেদিনীপুরের জেলা কংগ্রেসের আক্ষেপ কেন্দ্র সরকার বর্তমানে গান্ধীজির নামে থাকা বিভিন্ন ছুটির কাটছাট করছেন ,বন্ধ করছেন বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম l Body:গান্ধীজীর চিতাভস্ম গোটা দেশের নদ-নদীর পাশাপাশি বিসর্জন করা হয় মেদিনীপুরের শেষপ্রান্ত সংলগ্ন কাঁসাই নদীর ঘাটে ,যা গান্ধী ঘাট হিসেবে পরিচিত ,সেই গান্ধীঘাটে বসানো হয়েছিল গান্ধীজীর একটি মূর্তি ,যদিও সেই ঘাট আজও পরিচয় বহন করে চলছে গান্ধীজীর অবদানের ইতিহাস l মেদিনীপুরের জেলা কংগ্রেসের আক্ষেপ কেন্দ্র সরকার বর্তমানে গান্ধীজির নামে থাকা বিভিন্ন ছুটির কাটছাট করছেন ,বন্ধ করছেন বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম l


পুরো নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী , ডাকনাম মহাত্মা গান্ধী ,জন্মগ্রহণ করেন 1869 সালে 2 অক্টোবর গুজরাটের পোরবান্দরে l দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার পাশাপাশি তিনি মেদিনীপুর আসেন বেশ কয়েকবার l তারমধ্যে 1921 সালের কুড়ি ও একুশে সেপ্টেম্বর গান্ধীজী মেদিনীপুর শহরে অবস্থান করেছিলেন গোলকুঁয়া চকে , বর্তমানে যা বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালক বিভাগের পেছনে কিশোরি পতি রায়ের বাসভবনে ,সভাস্থল ছিল কলেজিয়েট স্কুল ময়দান ,সভাপতি ছিলেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল l সেই সভার পর হাজার হাজার মানুষ গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন l এরপর সময় কেটেছে সময়ের সাথে সাথে বদলেছে পরিবর্তনের হাওয়া l 1948 সালে 30 শে জানুয়ারি গান্ধীজিকে হত্যা করা হয় l গান্ধীজীর হত্যার পর 12 ই ফেব্রুয়ারি গান্ধীজীর চিতাভস্স নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের হাজার হাজার নদ ও নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল সেই চিতা ভস্স l সেই চিতা ভস্স নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে এবং জেলায় পথপরিক্রমা করেছিলে আপামর ভারতবাসী l এই চিতা ভস্স নিয়ে সারা দেশের পাশাপাশি মেদিনীপুর জেলায় মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠ পরিক্রমা করেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব শুধু কংগ্রেসি না সেই সময় আপামর মেদিনীপুর বাসি এই গান্ধীজীর মিছিলে যোগদান করেন l এই চিতাভস্মের পরিক্রমার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন মেদিনীপুরের বিপ্লবী মদনমোহন খান ও তার স্ত্রী বিজন বালা খান l হাজার হাজার মানুষ নিয়ে বর্ণাঢ্য মিছিলের মাধ্যমে এই গান্ধীজীর চিতাভস্ম বিসর্জন করা হয় মেদিনীপুর শহরের মোহনপুর বাস ব্রিজের কাছে কাঁসাই নদীতে l এই কাঁসাই নদীর সংলগ্ন স্থানের নাম দেওয়া হয় গান্ধী ঘাট l এই গান্ধী ঘাট এর নামকরণ অনুসারে পরবর্তীকালে এখানের মানুষ পরিচিত হয় গান্ধীঘাটের বাসিন্দা হিসেবে l আজও গান্ধী ঘাট রয়েগেছে গান্ধীর স্মরণে l গান্ধী চিতাভস্ম বিসর্জন এর পরবর্তী সময়ে এই গান্ধীঘাটে সাজিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব l এখানে একটি গান্ধীজীর মূর্তি বসানো হয়েছে এবং করা হয়েছে মনোরম পরিবেশ l প্রতিবছর বিভিন্ন সময়ে এই গান্ধীমূর্তিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব l মেদিনীপুর শহরের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র গান্ধী ঘাট l মোহনপুর ব্রিজ থেকে এই গান্ধী ঘাট দেখা যায় l এই ঘাটে প্রতি বছর শহরের সমস্ত দুর্গা প্রতিমা ঢাক ঢোল বাজিয়ে বিসর্জিত হয় l শুধু দুর্গা না ,এই ঘাটে বিসর্জন করা হয় সমস্ত প্রতিমা l আগে বহু মানুষ দর্শন করতে ও ঘুরতে আসতো এইখানে ,সম্প্রতি রাতের অন্ধকারে গান্ধীঘাটে গান্ধীজীর মূর্তির চশমা খুলে নিয়ে চলে যায় কে বা কারা এবং এই চশমা খোলার পাশাপাশি গান্ধীজীর মূর্তির আঁকাবুকি ও করা হয়েছে l এ বিষয়টি মেদিনীপুরবাসীর লজ্জার l আজকে দেড়শ তম জন্ম শতবর্ষে গান্ধীজী কে নিয়ে যখন গোটা দেশ ভাবছে , প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন গান্ধীজির জন্মবর্ষ পালনের ডাক দিয়েছে গোটা দেশজুড়ে ,তৎকালীন সময়ে যুব ও ভারতবাসীর কাছে কতটা প্রাসঙ্গিক গান্ধীজী তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ l তবে এই বিষয়ে কংগ্রেস জেলা সভাপতি তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী মদনমোহন খানের পুত্র সৌমেন খানের বক্তব্য তৎকালীন সময়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যে লড়াই হয়েছিল তার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন গান্ধীজি l শুধু গান্ধীজী হিসেবে নয় তিনি মানুষের কাছে মহাত্মা হিসেবে পরিচিত l একজন বয়স্ক মানুষ লাঠি হাতে সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়ে মানুষকে একত্রিত করেছিল l তার লাঠির পেছনে পেছনে লাইন লাগানো হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ভারতবাসী অসহযোগ আন্দোলন আজও মানুষকে ভাবায় l ভারতের স্বাধীনতার পক্ষে গান্ধীজীর অবদান অনস্বীকার্য l আজ তার দেড়শ তম জন্ম শতবর্ষ পালন করতে চলেছে গোটা দেশ l আমরাও তার জন্ম শতবর্ষ পালন করব বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সারাদিনব্যাপী l গান্ধীজির চশমা হারানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন ঝড়ে জলে হয়তো চশমা কোথাও উড়ে গিয়েছে আমরা নতুন করে সে চশমা লাগাব যাতে গান্ধীজীর প্রতি শ্রদ্ধা জন্মে মানুষের মধ্যে এবং তার চিন্তাধারা ও ভাবধারা ছড়িয়ে যায় গোটা জেলা বাসীর কাছে l Conclusion:গান্ধীজীর চিতাভস্ম গোটা দেশের নদ-নদীর পাশাপাশি বিসর্জন করা হয় মেদিনীপুরের শেষপ্রান্ত সংলগ্ন কাঁসাই নদীর ঘাটে ,যা গান্ধী ঘাট হিসেবে পরিচিত ,সেই গান্ধীঘাটে বসানো হয়েছিল গান্ধীজীর একটি মূর্তি ,যদিও সেই ঘাট আজও পরিচয় বহন করে চলছে গান্ধীজীর অবদানের ইতিহাস l মেদিনীপুরের জেলা কংগ্রেসের আক্ষেপ কেন্দ্র সরকার বর্তমানে গান্ধীজির নামে থাকা বিভিন্ন ছুটির কাটছাট করছেন ,বন্ধ করছেন বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম l
Last Updated : Oct 2, 2019, 4:52 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details