পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

Dol Utsav 2023: ঐতিহ্যবাহী সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের দোল উৎসবের ইতিহাস

By

Published : Mar 4, 2023, 8:04 AM IST

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের দোল উৎসব (Dol Utsav Celebration) ৷ কীভাবে দোল উৎসব পালিত হয় তা জানালেন পরিবারেরই এক সদস্য ৷

Dol Utsav 2023
রায় চৌধুরী পরিবারের দোল উৎসবের ইতিহাস

কলকাতা, 4 মার্চ: সামনেই দোল পূর্ণিমা। আর তার আগেই জানা গেল সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের ঐতিহ্যবাহী দোল উৎসবের ইতিহাস। জানালেন ইতিহাস গবেষক তথা সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের পরিবারের সদস্য শুভদীপ রায় চৌধুরী (Dol Utsav Celebration at Sabarna Roy Choudhury Family)।

শুধু দোল পূর্ণিমাতেই নয়, পূর্ণিমার পর পঞ্চমী তিথিতে পঞ্চম দোল এবং সপ্তমী তিথিতে সপ্তম দোলও পালিত হয় সার্বণ বাড়িতে। বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম মিলিত হন দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে। অতীতে চৌধুরীদের দোল অনুষ্ঠিত হত রাইটার্স বিল্ডিং সংলগ্ন কাছারিবাড়িতে। আর সেখানেই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন পরিবারের শ্যামরায় জিউ। দোলের দিন পরিবারের সদস্যরা রঙ খেলে কাছারিবাড়ি সংলগ্ন দিঘিতে স্নান করতে যেতেন এবং আবিরের রঙে দিঘির জল রঙিন হয়ে উঠত। তাই সেই থেকে দিঘির নাম হয় 'লালদিঘি'।

সাবর্ণদের শ্যাম রায়ের দোল আজও অনুষ্ঠিত হয়, তবে তা হয় হালিশহরে চৌধুরীদের বাড়িতেই। সপ্তম দোলের দিন ধুমধাম করে পালিত হয় দোল উৎসব। আগের দিন ন্যাড়া পোড়ার পর পরের দিন ভোরবেলা দেব দোল এবং এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিরাট মেলার আয়োজন করা হয় দোলতলার মাঠে। প্রাচীন রীতি মেনেই দোলের আগের দিন পালকিতে করে নারায়ণকে নিয়ে যাওয়া হয় ন্যাড়া পোড়া অনুষ্ঠানে। আর পরের দিন ভোরে শ্যাম রায়কে নিয়ে যাওয়া হয় দোলমঞ্চে এবং সেখানেই চালের নৈবেদ্য ভোগ নিবেদন করা হয়।

আরও পড়ুন:বেহালায় চলছে সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের ঐতিহ্যবাহী 'সাবর্ণ সঙ্গীত সম্মেলন'

পরিবারের সদস্যরা পারিবারিক বিগ্রহে আবির দেওয়ার পর সকলে আবির দিতে পারেন। সারা দিন দোল খেলার পর বিকেলে শ্যাম রায়ের অভিষেক হয় এবং তারপর ভোগ নিবেদন হয়। তবে হালিশহরের পাশাপাশি বড়িশায় সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের বাড়িতেও দোল পালিত হয়। বড়িশায় দোল হয় রাধাকান্ত মন্দিরে। এই বংশের সুসন্তান সন্তোষ রায় চৌধুরী তাঁর মাতুলালয় থেকে এনেছিলেন রাধাকান্তকে এবং প্রতিষ্ঠা করেন বড়িশায়। দোল পূর্ণিমার আগের দিন রাধাকান্ত মন্দিরে বিশেষ পুজো হয়, হোমও হয়। তারপর নারায়ণকে পালকিতে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দ্বাদশ শিবমন্দির সংলঙ্গ মাঠে, সেখানেই চাঁচড় পোড়ানো হয়।

অনুষ্ঠান সমাপ্তির পর নারায়ণ আবার মন্দিরে ফিরে আসেন। পরের দিন ভোরে হয় দেব দোল। পরিবারের সদস্যরা রাধাকান্ত ও শ্রীমতীকে নিয়ে আসেন দোলমঞ্চে। সেখানেই সবাই তাঁদের আবির দেন। সারা দিন দোল খেলার পরে আটচালায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের, সেখানেই হয় অভিষেক পর্ব। দই, দুধ, মসুরডাল বাঁটা, চিনি, ডাবের জল, আতর, কর্পূর ইত্যাদি নানা উপাচারে স্নান করানো হয় রাধাকান্তকে। তারপর রাজবেশ পরানো হয় এবং সেই দিন নানা পারিবারিক গহনা দিয়ে সাজানো হয় তাঁদের। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত দোলের বিশেষ পুজো করেন। হোম ও ভোগ নিবেদনের মাধ্যমে শেষ হয় রাধাকান্তের দোল। এছাড়াও সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের পানিহাটির বাড়িতে রাধাগোবিন্দের দোল এবং আড়িয়াদহের মন্দিরে দোল উৎসব খুবই বিখ্যাত।

আরও পড়ুন:সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের 36তম প্রজন্মের কলমে 'বনেদি কলকাতার দুর্গোৎসব'এর ইতিহাস

ABOUT THE AUTHOR

...view details