পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

Homestay at Rs 20: ঘরভাড়া 20 টাকা, শ্রমিক শ্রেণির জন্য থাকার ব্যবস্থা করেছেন একসময়ের কুলি

By

Published : Mar 28, 2023, 6:54 PM IST

শিলিগুড়িতে একদিনের জন্য ঘরভাড়া 20 টাকা ৷ শ্রমিক শ্রেণির মানুষের জন্য সস্তায় থাকার ব্যবস্থা করেছেন মহেন্দ্র সরকার (Homestay at Rs 20)৷ যিনি নিজে একসময় কুলি ছিলেন ৷

Homestay at Rs 20 ETV Bharat
ঘরভাড়া 20 টাকা

শিলিগুড়িতে ঘরভাড়া 20 টাকা

শিলিগুড়ি, 28 মার্চ: একটা সময়ে কুলির কাজ করতেন শিলিগুড়ির মহেন্দ্র সরকার ৷ তাঁর মতোই শ্রমিক শ্রেণির বহু মানুষ পেটের টানে আসেন শিলিগুড়িতে ৷ তাঁদের কথা ভেবেই সস্তায় তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন মহেন্দ্র ৷ মাত্র 20 টাকা ভাড়ায় 24 ঘণ্টা থাকার ব্যবস্থা (Homestay at Rs 20)৷ সঙ্গে সস্তায় খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন ৷ ফলে উপকৃত হচ্ছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশাচালকদের মতো বহু মানুষ ৷

এক রাত বা চব্বিশ ঘণ্টার জন্য সব থেকে কম ঘর বা হোটেল ভাড়া কত হতে পারে ? এখনকার বাজারে না হলেও অন্তত 300 থেকে 400 টাকা । আর হোটেল হলে অন্তত 700 থেকে 800 টাকা তো চোখ বন্ধ করে । তবে মহেন্দ্র এক রাতের জন্য ঘর ভাড়া নেন মাত্র 20 টাকা ৷ শিলিগুড়িতে এই বিংশ শতাব্দীর জমানাতেও মাত্র 20 টাকায় ঘর ভাড়া দেন তিনি । থাকার পাশাপাশি ইচ্ছে করলে 30 টাকায় নিরামিষ, 50 টাকায় মাছ আর 60 টাকায় মাংস-ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে । বছর ছয়েক আগেও ঘর ভাড়া ছিল 10 টাকা । পরে ঘর ভাড়া বাড়ানো হয় ।

শিলিগুড়ি শহরের বাগরাকোট এলাকার 1 নং মাতঙ্গিনী হাজরা কলোনি । সেখানেই দীর্ঘ প্রায় কুড়ি বছর ধরে ওই নামমাত্র টাকায় ঘর ভাড়া দিয়ে আসছেন মহেন্দ্র সরকার । শিলিগুড়ি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার । এক কথায় বলতে গেলে কলকাতার পর উত্তরের রাজধানী শিলিগুড়ি । প্রতিদিন বহু গরিব মানুষ টাকা উপার্জনের জন্য আসেন এই শহরে । কেউ শ্রমিক, কেউ মিস্ত্রি, কেউ কুলি আবার কেউ রিকশা বা টোটো চালাতে আসেন । অল্প কটা টাকা উপার্জনের জন্য সারাদিন কাজ করেন তাঁরা । বাইরে থেকে এসে নতুন জায়গায় বাড়ির খোঁজ করেন সকলে । ঘর ভাড়া খুঁজতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় সকলকে।

কিন্তু বেশি টাকা দিয়ে ঘর বা হোটেল ভাড়া নেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব না । এমনই একজন ছিলেন মহেন্দ্র সরকার । তিনিও প্রায় 40 বছর আগে কুলির কাজ করতেন । তারপর রিকশাও চালিয়েছেন তিনি । কাজ করতে করতেই তাঁর মাথায় বুদ্ধি আসে যে, তাঁর মতো বহু লোক যাঁরা বাইরে থেকে এসে স্টেশনেই রাত্রিযাপন করেন, তাঁদের জন্য কিছু করা যায় কি না ।

আরও পড়ুন:বাংলা নববর্ষেই রাজ্য পাচ্ছে দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, সম্ভাব্য সফরসূচি প্রকাশ রেলের

তারপরই তিনি তাঁর বাড়িকে টিন দিয়ে ঘিরে দোতলা কাঠের ঘরকে রাত কাটানোর স্থান হিসেবে বানিয়ে তোলেন । কাঠের সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলা বাড়িতে ঢালাও বিছানা, লাইট, ফ্যান সবই আছে । আছে মোবাইল চার্জার পয়েন্ট । সবটার খরচ একদিনে মাত্র 20 টাকা । পরে নিজের হোটেলও খোলেন তিনি । যেখানে অল্প দামে মেলে ভালো খাবার ।

মহেন্দ্র সরকার বলেন, "মাত্র কুড়ি টাকার মধ্যেই থাকার জায়গা, বাথরুম, মোবাইল চার্জার পয়েন্ট থেকে শুরু করে, স্নান করার জায়গা সবই আছে । এমনকী খাওয়ার জন্য হোটেলও রয়েছে । অত্যন্ত সস্তায় সেই হোটেলে খাবারও পাওয়া যায় । শিলিগুড়ি শহরে কাজ করতে আসা বহু রিকশাচালক, টোটোচালক, মজুর এখানে থাকতে আসেন । প্রতিদিন তেমন ভিড় না হলেও পুজোর সময় বা কোনও অনুষ্ঠান পার্বণে সময় ভিড়ে ঠাসা থাকে ।"

মহেন্দ্র সরকারের ছেলে নারায়ণ সরকার বলেন, "প্রত্যেকেই রাত্রি যাপন করে সকালে উঠে স্নান খাওয়া দাওয়া করে কাজে বেরিয়ে যান । কাজ শেষে আবার ফিরে আসেন । মোট 15 জনের মতো থাকার জায়গা রয়েছে ।" তাঁদের দেখাদেখি এখন আশপাশের আরও কিছু বাড়িতে এমন রাত্রিযাপনের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details