পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

কোরোনা: বন্ধ বাঁকুড়ার এক্তেশ্বর শিব মন্দিরের গাজন উৎসব

By

Published : Mar 31, 2020, 11:35 PM IST

কোরোনার জেরে বন্ধ হল এক্তেশ্বরের গাজন ৷ 20-25 ভক্তের বদলে এবছর 1 জন ভক্তই ভোক্তা কামালেন ৷ কারণ কোরোনার সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন ৷ তাই বন্ধ সবকিছু ৷ তাই এবছর নামমাত্র অনুষ্ঠান পালন করবেন একমাত্র সেবাইত দুঃখ ভজন সিং ৷

Ekteswar shiva temple's gajan festival is closed due to corona outbreak
কোরোনা জেরে বন্ধ বাঁকুড়ার এক্তেশ্বর শিব মন্দিরের গাজন উৎসব

বাঁকুড়া , 31 মার্চ : কোরোনার জেরে বন্ধ হল এক্তেশ্বরের গাজন ৷ 20-25 ভক্তের বদলে এবছর 1 জন ভক্তই ভোক্তা কামালেন ৷ কারণ কোরোনার সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন ৷ তাই বন্ধ সবকিছু ৷ তাই এবছর নামমাত্র অনুষ্ঠান পালন করবেন একমাত্র সেবাইত দুঃখ ভজন সিং ৷

মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বারের লোহার দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে

বাঁকুড়া শহরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত কয়েক শতাব্দী পুরোনো এক্তেশ্বর শিবের মন্দির । বাঁকুড়া গেজেটিয়ার থেকে যা জানা যায়, এই মন্দির মল্ল রাজাদের আমলে তৈরি হয়েছিল ৷ দারকেশ্বর নদীর উত্তর তীরে । সেই যুগ থেকেই প্রতিবছর চলে আসছে একটি রীতি । রীতি অনুযায়ী, গোটা চৈত্র মাস ধরে হাজার হাজার শিব ভক্ত উপবাস রাখেন । দিনান্তে একবার ফলাহার করেন । যাকে স্থানীয় ভাষায় ভোক্তা কামানো বলা হয় । প্রতিদিন হাজার হাজার ভোক্তা এই মন্দিরে আসেন গর্ভগৃহে মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে । সবশেষে চৈত্র সংক্রান্তিতে এখানে অনুষ্ঠিত হয় গাজন উৎসব । প্রায় 20-25 হাজার ভক্তের সমাগম হয় মন্দিরে ৷ মন্দির সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে দারকেশ্বর নদীর তীর বরাবর ভিড় জমে । তবে এ বছর কোরোনার জেরে সম্পূর্ণ লকডাউন দেশজুড়ে ৷ তাই বাদ যায়নি বাঁকুড়ার এক্তেশ্বরের শিবের মন্দির ৷

একমাত্র সেবাইত দুঃখ ভজন সিং

গোটা বছর ধরেই প্রতিদিন বহু মানুষ বাঁকুড়া জেলা, বাঁকুড়ার পার্শ্ববর্তী জেলা এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও এখানে আসেন ধর্মচারণ করতে । বর্তমানে মন্দির কমিটি সবকিছুই বন্ধ রেখেছে । মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বারের লোহার দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে । ভেতরে ঢুকতে পারবেন না কেউ । শুধুমাত্র একজন সেবাইত শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা সম্পূর্ণ নিয়ম পালন করবেন ৷ সেই সেবাইত দুঃখ ভঞ্জন সিং বলেন, " আমি গত 40 বছর ধরে এখানে প্রতিবছর গোটা চৈত্র মাস ধরে ভোক্তা কামাই ৷ কম করেও 20 হাজার মানুষ এই মন্দিরে আনাগোনা করেন ৷ তবে এই বছর শুধু আমি একা । কোনওদিন এর আগে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই । "

অন্যদিকে, মন্দির পরিচালনা কমিটির সম্পাদক কৌশিক দেঘুরিয়া বলেন, " হয়তো এটাই এবছর বাবা মহাদেবের নির্দেশ, তাই আমরা সবকিছু বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি । দেশ যেভাবে কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করছে ৷ আমরাও এই মন্দির কমিটি সম্পূর্ণভাবে তাঁদের সঙ্গে রয়েছি । তবে ধর্মের নিয়ম মেনে শুধু 25 হাজারের বদলে একজন ভক্ত পালন করবেন গাজন উৎসব । একটি যোগদানের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গাজন উৎসব হয়ে থাকে । সেটিও আমরা করব, তবে এখানে কোনও জনসমাগম হতে দেব না । মাত্র তিনজন এই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ৷ তাঁদের তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরী হয়ে গেছে । মন্দির কমিটির তরফে দেশের অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষজনের কাছে আবেদন রাখা হয়েছে ৷ ধর্ম তো মানুষের মঙ্গলের জন্য, আসুন আমরা সবাই মিলে একযোগে কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করি ৷ এছাড়াও দেশকে বাঁচাতে যে কোনও রকমের জনসমাগম বন্ধ রাখি । "

TAGGED:

ABOUT THE AUTHOR

...view details