পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

Footballer Died in Nadia : খেপের মাঠে দেবজ্যোতির মৃত্যু নিয়ে কী বলছেন ফুটবল-কর্তারা

By

Published : Mar 20, 2022, 1:33 PM IST

Updated : Mar 20, 2022, 3:01 PM IST

Footballer Died in Nadia
খেপের মাঠে দেবজ্যোতির মৃত্যু নিয়ে কী বলছেন ফুটবল-কর্তারা ()

শনিবার নদিয়ার ধুবুলিয়ায় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় কৃষ্ণনগরের ওই তরুণ ফুটবলারের (Raiway FC footballer dies due to cardiac arrest during a match yesterday) ৷

কলকাতা, 20 মার্চ : ভীষণই প্রতিভাবান ছিলেন, ফুটবলের প্রতি শৃঙ্খলাপরায়ণও ছিলেন ততটাই । সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টায় জেলা থেকে কলকাতার ঐতিহ্যশালী ক্লাবে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। ফুটবলার দেবজ্যোতি ঘোষের আকস্মিক মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়ায় এমনটাই জানালেন ছোটবেলার কোচ পার্থ বিশ্বাস। শনিবার নদিয়ার ধুবুলিয়ায় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় কৃষ্ণনগরের ওই তরুণ ফুটবলারের (Raiway FC footballer dies due to cardiac arrest during a match yesterday) ৷

স্থানীয় এই টুর্নামেন্টগুলোকে চলতি কথায় বলা হয় খেপ ফুটবল ৷ টাকার জন্য, পরিবারের অভাবের তাড়নায়, অবিবাহিত বোনের বিয়ের ব্যবস্থার জন্য সর্বোপরি খেলার নেশায় খেলার জন্য কলকাতার ছোট দলের ফুটবলারদের নিয়মিত ঠিকানা এই খেপের মাঠ । রোজ অনুশীলনের ব্যাপার নেই, নিয়মিত শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপনের বালাই নেই, নিয়মিত শরীরচর্চাও বাধ্যতামূলক নয়। গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় এই সব টুর্নামেন্টগুলোর অধিকাংশই রেজিস্টার্ড টুর্নামেন্ট নয়, সুতরাং মেডিক্যাল ব্যবস্থা অপ্রতুল সেখানে। শনিবার তারই বলি হলেন দেবজ্যোতি।

পাঠচক্রের শীর্ষকর্তা এবং কলকাতা ময়দানের পরিচিত মুখ নবাব ভট্টাচার্য বলছেন, "রবিবার খেপ খেলার দিন। সকাল থেকে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সবাই । খেলার পিছনে অনেক কারণও থাকে। সংসারের অভাব, হাজার হাজার টাকার হাতছানি। বাধ্যবাধকতা থেকে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। তবুও একটা সংযম দরকার। যা বেশিরভাগ ফুটবলার যারা তথাকথিত ছোট দলে খেলে, তাদের নেই। এই জন্য এই দুর্ঘটনা ।"

কিছু ছেলে যারা খেলার জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি থাকে। বাকিরা আবার খেপের জন্য সব ছেড়ে দিতে রাজি। কুড়ি-বাইশ বছর বয়সে বাঁচতে গেলে কত টাকা লাগে ? প্রশ্ন তোলেন নবাব ৷ খেপ সমস্যার সমাধান কোথায়? পাঠচক্রের শীর্ষকর্তা বলছেন, "এককথায় নেই । ফুটবল খেলাটা বিজ্ঞান। এটা মানতেই হবে। শরীরের বিশ্রাম, খাদ্যাভ্যাস, প্রস্তুতি সব দরকার। স্টেজে মারা যাবে না। পুরস্কার হিসেবে সোনার চেন, বাইক, টিভির লোভ ছাড়তে হবে। আমি অনেককে জানি যারা কলকাতা মাঠে নিয়মিত খেলে। কিন্তু খেপ ছাড়তে পারে না।"

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার বলছেন, ‘‘দেবজ্যোতি বর্তমানে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ট্রায়ালে ছিল। কৃষ্ণনগর থেকে প্রায় একশো কিলোমিটার অতিক্রান্ত করে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে গিয়ে প্রাকটিস করা। আবার বাড়ি ফিরে আসা। বাড়িতে এসেই কোনওরকমে খেয়ে ক্লাবের হয়ে টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়া। শরীরের সামান্যতম বিশ্রাম না পাওয়ার কারণে ওঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মত বড় ক্লাবে প্র্যাকটিসের সময় তাদের রাখার ব্যবস্থা থাকবে না কেন ?" বড় ক্লাব ছাড়া টাকা কোথায়। বেশিরভাগই গরিব ঘর থেকে আসে। সংসারে টাকা দেওয়ার তাগিদ থাকে। তাই খেপ ছাড়া উপায় নেই। লকডাউনে খেপ চলেছে। গ্রামেগঞ্জে খেপ খেলে অনেক ফুটবলার সংসার চালায়। ম্যাচ পিছু টাকা। প্রাইজ মানির ভাগ কি ছাড়া যায়, প্রশ্ন ময়দানের পরিচিত কর্তাদের ৷

খেপের মাঠে দেবজ্যোতির মৃত্যু নিয়ে কী বলছেন ফুটবল-কর্তারা

আরও পড়ুন : কবে সচেতন হবে খেপের মাঠ, দেবজ্যোতির মৃত্যুতে উঠল একরাশ প্রশ্ন

বিশিষ্ট চিকিৎসক শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত বলছেন, "খেপের মাঠে সচেতনতা তো নেই । এখন দেখতে হবে ছেলেটি অসুস্থ ছিল কি না। কি খেয়ে খেলতে নেমেছিল ৷ হালকা অসুস্থতা থাকলে বা চোট থাকলেও পাত্তা না দিয়ে নেমে পড়ছিল কি না। পরিকাঠামো থাকে না ছোট মাঠে। ফলে প্রাথমিক শুশ্রূষা দেওয়া যায় না। এখন দেখতে হবে কারণটা কি।”

আদতে দিনের পর দিন সচেতনার অভাব, যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে হারিয়ে যান দেবজ্যোতিরা। ধুবলিয়া, ক্যানিং, ডায়মন্ডহারবারের নাম আসে শিরোনামে। আলোচনা হয় এবং তারপর হারিয়ে যায়।

Last Updated :Mar 20, 2022, 3:01 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details