মালদা, 25 জানুয়ারি: মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের ফেয়ারওয়েলকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-পড়ুয়াদের সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল রতুয়ার ভাদো বিএসবি হাইস্কুল ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের ক্লাসরুমে আটকে প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ছাত্রছাত্রীরা ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রতুয়া থানার পুলিশ ৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ পড়ুয়াদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় তাদের মারধর করা হয়েছে ৷ শিক্ষকরা বহিরাগতদের দিয়ে তাদের মারধর করিয়েছেন ৷ এর জন্য শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি জানিয়েছে তারা ৷ যদিও তাদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৷
এ দিন ভাদো বিএসবি হাইস্কুলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিদায়ি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ প্রথমে ঠিক ছিল, বেলা 12টা থেকে সেই অনুষ্ঠান শুরু করা হবে ৷ সেই মতো পরীক্ষার্থীরা স্কুলে চলে আসে ৷ কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে ওই অনুষ্ঠান বেলা একটায় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ সেকথা পরীক্ষার্থীদের জানানো হয়নি ৷ পরীক্ষার্থীরা বসার জন্য জায়গা দাবি করে ৷ এ নিয়েই শুরু হয় ঝামেলা ৷
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বুলবুল হাসানের বক্তব্য, "স্কুলে এসে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করি, ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠান কখন শুরু হবে ৷ তিনি জানান, বেলা 12টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে ৷ আমরা 11টা 50 নাগাদ স্কুলে এসেছিলাম ৷ অনুষ্ঠান শুরু না হওয়া পর্যন্ত আমরা বসার জন্য কোনও জায়গা দাবি করি ৷ কিন্তু শিক্ষকরা জানিয়ে দেন, আমাদের বসার ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ প্রয়োজনে মাঠে বসতে হবে ৷ ধুলো ভরতি মাঠে বসার উপায় ছিল না ৷ তাই আমরা দাঁড়িয়েই ছিলাম ৷"
তাঁর কথায়,"বেলা 12টায় অনুষ্ঠানের কথা বলতে গেলে শিক্ষকরা জানিয়ে দেন, একাদশের পড়ুয়ারা অনুষ্ঠান সংগঠিত করছে ৷ কিন্তু তারা সাফ জানায়, তাদের এমন কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি ৷ বিষয়টি শিক্ষকদের বলতে গেলেই এক শিক্ষক আমাকে গালিগালাজ শুরু করেন ৷ বাইরের গুণ্ডা ডেকে আমাদের মারধর করান ৷ আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে ৷ এর আগেও শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা আমাকে মারধর করেছেন ৷ ফের একই ঘটনা ঘটল ৷"
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সরিফুল ইসলাম বলেন, "আজ স্কুলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফেয়ারওয়েল ছিল ৷ গতকাল জেলাশাসকের ডাকা বৈঠকে আমি মালদা যাই ৷ চারজন শিক্ষককে পরীক্ষার্থীদের ফেয়ারওয়েলের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দিয়েছিলাম ৷ গতকাল পলিটেকনিক থেকে ফোন করে আমাদের বলা হয়েছিল, আজ সকাল সাড়ে 11টা থেকে আমাদের একটি অনুষ্ঠান করতে হবে ৷ তাই আমরা নির্দিষ্ট সময়ে আজ ফেয়ারওয়েল শুরু করতে পারিনি ৷ আজ আমি যখন নিজের ঘরে বসে কাজ করছিলাম, তখন পড়ুয়ারা আমার কাছে অভিযোগ জানায়, তাদের বসতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ এ নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিই ৷ সবার বসার ব্যবস্থা করে দিই ৷ তখনই গোলমাল শুরু হয়ে যায় ৷ পরীক্ষার্থীদের আমরা কেউ মারধর করিনি ৷"
আরও পড়ুন: