জলপাইগুড়ি, 6 জুলাই: তিস্তা নদীর রাক্ষুসে গ্রাসে চলে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা ৷ ইতিমধ্যে নদীতে তলিয়ে গিয়েছে 33টি বাড়ি ৷ তাই ভোটের উত্তাপ গায়ে না-মেখে নিজেরদের ঘর বাঁচাতে এবার ব্যস্ত নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা ৷ এক প্রকার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বাহিরচরের কালামপুর ও কানাইনগর পাড়ার বাসিন্দারা ৷ তাই ভোটের প্রচার ভুলে নিজের ঘর বাঁচাতে কাধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন শাসক ও বিরোধী দলের সমর্থকরা ৷
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি গ্রামপঞ্চায়েতের তিস্তা নদীর মাঝের চর বাহিরচর । প্রতি বছর তিস্তা নদীর ভাঙনে চলে যাচ্ছে বহু বাড়ি । এলাকায় বিজেপির পঞ্চায়েত পদ প্রার্থী থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি সকলের বাড়ি তিস্তার গ্রাসে চলে যাবার উপক্রম হয়েছে । তিস্তার গ্রাস থেকে রক্ষা পেতে অন্যত্র আস্তানা তৈরির চেষ্টা করছেন তাঁরা ৷ তাই আপাতত ভোট বাদ দিয়ে নিজেদের ঘর বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি গণেশ চন্দ্র এক প্রকার ক্ষোভের সুরেই বলেন, "ভোট দিয়ে কী হবে কেউ আমাদের দেখে না আমরা চরে বসবাস করি কেউ খোঁজ ও নেয় না ।"
আরও পড়ুন : পঞ্চায়েত ভোটে ব্যালট বাক্সের চুরি রুখতে বিশেষ সিলের ব্যবস্থা, ঘোষণা শুভেন্দুর
এদিকে বাহিরচর বুথের বিজেপির বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য জিতেন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, "এমন অবস্থায় কাকে বলব ভোট দিতে । বাড়িঘর রক্ষা করা যাচ্ছে না । তিস্তার গ্রাসে 33টি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে ৷ আমার বাড়িও আধ কিলোমিটার সরিয়ে নিতে হচ্ছে । আমাদের এলাকার একটা বাঁধ দিলেই আমরা বেঁচে যাই কিন্তু আমাদের কথা শোনার লোক নেই । বিশেষ করে সদর ব্লকের বাহিরচরের কালামপুর কানাই নগরপাড়া এলাকায় ক্ষতি বেশি হয়েছে । আমি নিজের বাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছি । আমাদের কানাইনগর পাড়া প্রাইমারি বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা 734 জন । এবার তিস্তা নদীতে জল বেড়ে গিয়ে বন্যা হলে কীভাবে ভোট হবে সেটাই এখন দেখার ।"
আরও পড়ুন: বিজেপির জেলা সভাপতির গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি, জলপাইগুড়িতে চাঞ্চল্য
তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে স্থানীয় বাসিন্দা হরমোহন মণ্ডল জানান, তিস্তা যেভাবে পাড় ভাঙছে তাতে আরও বাড়িও তলিয়ে যেতে বেশি সময় লাগবে না ৷ কয়েকশো ফুটের মধ্যেই ওই ব্যাক্তির বাড়ি ৷ যেকোনও মুহূর্তে সেটিও তলিয়ে যাবে ৷ তাছাড়া ভোটের সময় জল বেড়ে গেলে কীভাবে ভোট গ্রহন কেন্দ্রে যাবেন সেই ব্যাপারে চিন্তা করছেন । যদিও জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা জানান, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেই এলাকায় ভোটারদের জন্য নৌকার ব্যবস্থা করা হবে ৷