পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Independence Day 2023: নেতাজি সুভাষচন্দ্র ও ঋষি অরবিন্দদের গোপন ডেরা আজ ভুতুড়ে বাড়ি

Netaji and Aurobindo Ghose's secret hideout in Purba Bardhaman: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ঋষি অরবিন্দ ও রাসবিহারী বসুদের গোপন ডেরা ছিল পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে ৷ আজ তা যেন ভুতুড়ে বাড়ি ৷

Independence Day 2023
বিপ্লবীদের গোপন ডেরা আজ ভুতুড়ে বাড়ি

By

Published : Aug 15, 2023, 4:53 PM IST

গলসি, 15 অগস্ট:নিরিবিলি একটা আশ্রম । কোথাও কেউ নেই । আশ্রমের মধ্যে থাকা দুটো মাটির বাড়িরও অবস্থা খারাপ । বাড়ির দরজা ভাঙা । আশ্রমের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে খড়ি নদী । ঠিক যেন ভুতুড়ে পরিবেশ । বর্ধমানের গলসি - 2 ব্লকের চান্না গ্রাম । এই গ্রামেরই শেষ প্রান্তে এই চান্না আশ্রম । অথচ এই আশ্রমই একদিন হয়ে উঠেছিল বিপ্লবীদের গোপন ডেরা । সেখানে বসে দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখতেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রাসবিহারী বসু, ঋষি অরবিন্দ, ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্তরা । আজ সেই আশ্রম ধ্বংসের মুখে ।

বর্ধমান থেকে খানা জংশন কিংবা কুলগোড়িয়া বাজার থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ধরে খড়ি নদীর তীরে এই চান্না আশ্রম । জানা যায়, 1907-08 সাল নাগাদ বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে স্বামী নিরালম্ব এই চান্না আশ্রম তৈরি করেন । যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বরোদার রাজ কলেজে পড়াশোনা করার সময় কলেজের অধ্যক্ষ বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষের সংস্পর্শে আসেন । তাঁর পরামর্শে তিনি কলকাতায় ফিরে এসে অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন । সেখানে সত্যেন বসু, কানাইলাল দত্তের সংস্পর্শে আসেন তিনি । এরপর মানিকতলার মুরারীপুকুরে গড়ে তোলেন বোমা তৈরির কারখানা । ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল আলিপুর বোমা মামলা । মানিকতলা বোমা মামলাই আলিপুর বোমা মামলা নামে পরিচিত ।

গলসির চান্না গ্রামে আশ্রম তৈরি করে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড চালাতে থাকেন যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় । মূলত সেই সময় রেলপথে ভালো যোগাযোগের জন্যই খানা জংশনের অদূরে আশ্রম করার কথা চিন্তাভাবনা করেন তিনি । এছাড়া পাশেই খড়ি নদী থাকায় সহজে নদী টপকে বিপ্লবীরা আত্মগোপন করতে পারতেন । আর হাঁটা পথে সেই আশ্রমে যাওয়ার সেভাবে সুযোগ না থাকায় সহজে ব্রিটিশ পুলিশ আশ্রমে পৌঁছতে পারত না । সেই সুযোগে বিপ্লবীরা সেখানে বৈঠক করতে পারতেন ।

আরও পড়ুন:গান্ধিজির চিঠিতে ফাঁসি রদ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর চার অনুগামীর

এ দিকে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কেউ আর এই আশ্রমের দিকে ঘুরেও তাকান না । অনাদরে অবহেলায় পড়ে আছে গলসির চান্না আশ্রম । সন্ধের অন্ধকার তো দূর অস্ত, দিনের বেলাতেই সেই আশ্রমের পরিবেশ ছমছমে । ওই পথে খুব একটা মানুষজন চলাচল করে না । স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম মালিক বলেন, "এই গ্রামের মাটিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীর পদধূলি পড়েছে । এটা আমাদের গর্ব ।"

ইতিহাস গবেষক ড. সর্বজিৎ যশ বলেন, "চান্না গ্রামেই যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন । বরোদায় গিয়ে তিনি ঋষি অরবিন্দ ঘোষের সংস্পর্শে আসেন । অরবিন্দর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তিনি ফিরে আসেন । পরে চান্না গ্রামে একটা আশ্রম গড়ে তোলেন । নামেই ওটা আশ্রম ছিল । আসলে সেটা ছিল বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল । সেই সময় খানা জংশন খুব বিখ্যাত ছিল । খানা জংশনের কাছাকাছি হওয়ায় বিপ্লবীদের যাতায়াত সহজ ছিল । তিনি সাধক হয়ে গিয়েছিলেন । কিন্তু তারপরেও তাঁর বিপ্লবী কর্মধারা অব্যাহত ছিল । তাঁর আশ্রমে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে ভগৎ সিং - অনেকেরই যাতায়াত ছিল ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details