পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Malda Ratua River Erosion : গঙ্গা-ফুলহরের ভাঙনের দাপটে অস্তিত্ব বিপন্ন রতুয়ার, এলাকা পরিদর্শনে জেলাশাসক

রতুয়ার মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের একদিক দিয়ে বইছে ফুলহর, অন্যদিকে গঙ্গা । প্রতি বছর দুই নদীর ভাঙনে বিপর্যস্ত এলাকার মানুষ । শনিবার এই এলাকা পরিদর্শন করেন মালদার জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া (Malda district magistrate visits river erosion affected area of Ratua) ৷

Malda Ratua River Erosion
গঙ্গা-ফুলহরের ভাঙনের দাপটে অস্তিত্ব বিপন্ন রতুয়ার

By

Published : Jun 25, 2022, 10:22 PM IST

মালদা, 25 জুন: পাড় কাটতে কাটতে পরস্পরের সঙ্গে মিশে যাওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে গঙ্গা ও ফুলহর নদী । উপগ্রহ চিত্রেও সেই ছবি ধরা পড়েছে । আশঙ্কা তেমনটা হলে মালদা জেলার রতুয়ার অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়বে । দুই নদীর এই মিলন রুখতে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় । বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও । তিনি এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন সেচ দফতরকে । এরপরেই নড়েচড়ে বসে সেচ দফতর । ঘুম ভাঙে জেলা প্রশাসনেরও ।

দায়িত্ব নিয়েই কয়েকদিন আগে রতুয়ায় ছুটে যান মালদার নতুন জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া । শনিবার ফের তিনি রতুয়ার নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন (Malda district magistrate visits river erosion affected area of Ratua) । তাঁর সঙ্গে সেখানে যান জেলা পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা ৷ ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব, জেলা পরিষদের সভাধিপতি আবু তৈয়ব মহম্মদ রফিকুল হোসেন, দুই বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ও আবদুর রহিম বকসিও । এদিন রতুয়ার নাককাট্টি ব্রিজ থেকে নৌকায় ফুলহর নদীর ভাঙন পরিদর্শন করেন জেলাশাসক । রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাঙন কবলিত বিস্তীর্ণ এলাকা পরিদর্শন করে কাটাহা দিয়ারা হাইস্কুলে যান তাঁরা । সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন দুই পঞ্চায়েত এলাকার ভাঙন বিধ্বস্ত মানুষ । তাঁরা নিজেদের পরিস্থিতির কথা জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সামনে তুলে ধরেন । তবে নিজেদের পুরোনো অভিজ্ঞতা থেকে গ্রামবাসীদের অনেকেই মনে করছেন, এবারের পরিদর্শনেও কিছু হওয়ার নয় । বর্ষা চলে এসেছে । এবারও তাঁদের ভাঙনের ভয় নিয়েই দিন কাটাতে হবে ।

গঙ্গা-ফুলহরের ভাঙনের দাপটে অস্তিত্ব বিপন্ন রতুয়ার

আরওপড়ুন : গরুর দুধে সোনার লোভে বিজেপিতে গিয়েছিলাম, তৃণমূলে ফিরে বললেন গদাধর

মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের একদিক দিয়ে বইছে ফুলহর, অন্যদিকে গঙ্গা । প্রতি বছর দুই নদীর ভাঙনে বিপর্যস্ত এলাকার মানুষ । তবে ফুলহরের থেকেও গঙ্গা ভাঙন নিয়ে তাঁরা বেশি সন্ত্রস্ত । স্থানীয় সাহানগর গ্রামের বাসিন্দা ভাস্কর মণ্ডল বলেন, “মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি অঞ্চলে অন্তত 50 হাজার ভোটার রয়েছেন । দুই অঞ্চলে তিনটি হাইস্কুল রয়েছে । এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা গঙ্গার ভাঙন । এই নদীর ভাঙনে ইতিমধ্যে হাজার হাজার বিঘা জমি তলিয়ে গিয়েছে । ফুলহর নদীও পাড় কাটতে কাটতে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে । ইতিমধ্যে 4-5টি গ্রাম ফুলহরে তলিয়ে গিয়েছে । কিন্তু নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী কাজ করা হচ্ছে না । এভাবে চললে খুব তাড়াতাড়ি আমরা উদ্বাস্তু হয়ে পড়ব । এখন যেভাবে ভাঙন রোধের কাজ হচ্ছে তা মূল্যহীন । শুধু টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছু নয় । নদীর ভাঙন রোধে আরও ভাল কাজ করতে হবে । যাতে দ্রুত সেই কাজ হয় তার জন্য আজ আমরা জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি ।”

এদিন ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ফেরার পথে জেলাশাসক জানান,“আজ প্রশাসনের আধিকারিক ও দুই বিধায়ককে নিয়ে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করলাম । এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যার কথাও শুনলাম । নদীর ভাঙন রোধের জন্য দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা করা হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেচ দফতর ইতিমধ্যেই ভাঙন রোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে । 2019 সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত এখানে অন্তত 20 কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে । নদী বাঁধ বাঁচাতে সেই কাজ চলছে । আরও কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে । তাতে ফুলহর ও গঙ্গার মধ্যবর্তী অংশকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে । আগামী 3-4 মাসের মধ্যে সেচ দফতর এই কাজের ডিটেইলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট জমা দেবে । গঙ্গার ভাঙন রোধেও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে ।”

ABOUT THE AUTHOR

...view details