ETV Bharat / state

লেখাপড়া করা উচিত না, 'চিল্লার পার্টি' বানিয়ে শিশুদের মগজ ধোলাই করত শাহজাহান !

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 9, 2024, 3:34 PM IST

Updated : Feb 9, 2024, 5:35 PM IST

Sheikh Shahjahan brainwashed children: সন্দেশখালিতে 'চিল্লার পার্টি' তৈরি করে শিশুদের মগজ ধোলাই করার অভিযোগ উঠল শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, জোর করে শিশুদের নিজের অফিসে নিয়ে গিয়ে কুশিক্ষা দিতেন শাহজাহান ও তাঁর লোকেরা ৷ ইটিভি ভারতের অয়ন নিয়োগীর প্রতিবেদন ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT

কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: এলাকার বাচ্চাদের পড়াশোনার দিকে উৎসাহ দেওয়া তো দূরের কথা, বরং ছোটদের নিজের অফিসে নিয়ে গিয়ে নাকি কুশিক্ষা দিতেন শেখ শাহজাহান ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, তলে তলে 'চিল্লর পার্টি' বানিয়ে তাদের মগজ ধোলাই করে, নিজের অপরাধের কাজে ব্যবহার করতেন সন্দেশখালির নিখোঁজ 'বাঘ' । এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) আকাশ মাঘারিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ আমরা শুনছি । সেই মতো সত্যতা পেলে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"

অভিযোগ, নিয়মিত এলাকার বাচ্চাদের সকাল-সন্ধ্যায় নিজের অফিস ও তার সংলগ্ন ঘরে নিয়ে গিয়ে রাখতেন শেখ শাহাজাহান । সেখানেই ওই সব শিশুদের পাঠ দেওয়া হত, কেন পড়াশোনা করা উচিত নয় । কেন হাতে টাকা থাকে না ? কেন তাঁদের বাবা মায়েরা এত গরিব ? তাহলে কী করলে হাতে সব সময় থাকবে টাকা ? অভিযোগ, কখনও নিজেই পাঠ দিতেন গুরু শেখ শাহাজাহান ৷ আবার কখনও এই কাজের দায়িত্ব গিয়ে পড়ত তাঁর দলের সদস্যদের উপর ৷ শিশুদের বোঝানো হত যে, "সবসময় দাদার (শাহাজাহান) কাজ করতে হবে । দাদার পাশে দাঁড়াতে হবে । তাহলে দাদা তোদের দেখবে । আর তা না হলে, এই মুলুকে টেকা দায় হবে ।"

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট গ্রামের এক মহিলার অভিযোগ, তাঁদের হুমকির গলায় শাসানি দেওয়া হত যে, সকাল-সন্ধ্যায় যেন ছেলেকে দাদার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । অভিযোগ, শাহাজাহানের কাছে যেতে না দিয়ে যদি ছেলেদের বাড়িতে পড়তে বসতে বলা হত, সে ক্ষেত্রে কপালে জুটত মারধর অথবা একাধিক অত্যাচার । ছোট থেকেই এলাকার বাচ্চা ছেলেদের নিয়ে অন্য এলাকায় গন্ডগোলের থেকে শুরু করে যদি কোনও আন্দোলনের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন হত, তখনও মিছিলের সামনের সারিতে রাখা হত এলাকার ওই 'চিল্লার পার্টি'র সদস্যদের । গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ, অনেক সময় তাঁদের ছোট ছোট ছেলেদের হাতে টাকার নোট ধরিয়ে দিত শেখ শাহাজাহানের দলবল ।

শেখ শাহাজাহানের একাধিক দলীয় প্রচার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের পতাকা এলাকায় এলাকায় লাগানোর কাজে সামনের সারিতে থাকত এই সব শিশুরা । এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারত না । গেলেও সপ্তাহে দু থেকে তিন দিন । সকাল-সন্ধ্যা যখন তাদের পড়াশোনার কথা, সেই সময় তাদের অপরাধের কাজকর্ম শেখানোর কাজ চলত শেখ শাহাজাহানের বাড়ি ও অফিস ঘরে ।

গত 5 জানুয়ারি সকালে ইডির তদন্তকারীরা উত্তর 24 পরগনা জেলার ন্যাজাট থানার অন্তর্ভুক্ত সন্দেশখালি এলাকায় শেখ শাহাজাহানের বাড়িতে রেশন কাণ্ডে তল্লাশি চালাতে গিয়ে একদল মানুষের হাতে আক্রান্ত হন । কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি ছিল, শুধু তাঁদের নিগ্রহ করাই নয়, বরং তাঁদের একাধিক আইনি নথিপত্র নিয়েও পালিয়েছিল অভিযুক্তরা । তারপর কেটে গিয়েছে বহুদিন । এখনও পুলিশ কিংবা কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা, কেউই ধরতে পারেনি সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহাজাহানকে ।

আরও পড়ুন:

  1. অশান্ত সন্দেশখালি, শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার তিনটি পোল্ট্রি ফার্মে আগুন ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীদের
  2. শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের গ্রেফতারের দাবিতে ফের উত্তপ্ত সন্দেশখালি, গ্রামবাসীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের
  3. থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে সমস্যা সমাধানে শাহজাহানের কাছেই পাঠাত পুলিশ, অভিযোগ গ্রামবাসীদের

কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: এলাকার বাচ্চাদের পড়াশোনার দিকে উৎসাহ দেওয়া তো দূরের কথা, বরং ছোটদের নিজের অফিসে নিয়ে গিয়ে নাকি কুশিক্ষা দিতেন শেখ শাহজাহান ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, তলে তলে 'চিল্লর পার্টি' বানিয়ে তাদের মগজ ধোলাই করে, নিজের অপরাধের কাজে ব্যবহার করতেন সন্দেশখালির নিখোঁজ 'বাঘ' । এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) আকাশ মাঘারিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ আমরা শুনছি । সেই মতো সত্যতা পেলে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"

অভিযোগ, নিয়মিত এলাকার বাচ্চাদের সকাল-সন্ধ্যায় নিজের অফিস ও তার সংলগ্ন ঘরে নিয়ে গিয়ে রাখতেন শেখ শাহাজাহান । সেখানেই ওই সব শিশুদের পাঠ দেওয়া হত, কেন পড়াশোনা করা উচিত নয় । কেন হাতে টাকা থাকে না ? কেন তাঁদের বাবা মায়েরা এত গরিব ? তাহলে কী করলে হাতে সব সময় থাকবে টাকা ? অভিযোগ, কখনও নিজেই পাঠ দিতেন গুরু শেখ শাহাজাহান ৷ আবার কখনও এই কাজের দায়িত্ব গিয়ে পড়ত তাঁর দলের সদস্যদের উপর ৷ শিশুদের বোঝানো হত যে, "সবসময় দাদার (শাহাজাহান) কাজ করতে হবে । দাদার পাশে দাঁড়াতে হবে । তাহলে দাদা তোদের দেখবে । আর তা না হলে, এই মুলুকে টেকা দায় হবে ।"

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট গ্রামের এক মহিলার অভিযোগ, তাঁদের হুমকির গলায় শাসানি দেওয়া হত যে, সকাল-সন্ধ্যায় যেন ছেলেকে দাদার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । অভিযোগ, শাহাজাহানের কাছে যেতে না দিয়ে যদি ছেলেদের বাড়িতে পড়তে বসতে বলা হত, সে ক্ষেত্রে কপালে জুটত মারধর অথবা একাধিক অত্যাচার । ছোট থেকেই এলাকার বাচ্চা ছেলেদের নিয়ে অন্য এলাকায় গন্ডগোলের থেকে শুরু করে যদি কোনও আন্দোলনের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন হত, তখনও মিছিলের সামনের সারিতে রাখা হত এলাকার ওই 'চিল্লার পার্টি'র সদস্যদের । গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ, অনেক সময় তাঁদের ছোট ছোট ছেলেদের হাতে টাকার নোট ধরিয়ে দিত শেখ শাহাজাহানের দলবল ।

শেখ শাহাজাহানের একাধিক দলীয় প্রচার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের পতাকা এলাকায় এলাকায় লাগানোর কাজে সামনের সারিতে থাকত এই সব শিশুরা । এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারত না । গেলেও সপ্তাহে দু থেকে তিন দিন । সকাল-সন্ধ্যা যখন তাদের পড়াশোনার কথা, সেই সময় তাদের অপরাধের কাজকর্ম শেখানোর কাজ চলত শেখ শাহাজাহানের বাড়ি ও অফিস ঘরে ।

গত 5 জানুয়ারি সকালে ইডির তদন্তকারীরা উত্তর 24 পরগনা জেলার ন্যাজাট থানার অন্তর্ভুক্ত সন্দেশখালি এলাকায় শেখ শাহাজাহানের বাড়িতে রেশন কাণ্ডে তল্লাশি চালাতে গিয়ে একদল মানুষের হাতে আক্রান্ত হন । কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি ছিল, শুধু তাঁদের নিগ্রহ করাই নয়, বরং তাঁদের একাধিক আইনি নথিপত্র নিয়েও পালিয়েছিল অভিযুক্তরা । তারপর কেটে গিয়েছে বহুদিন । এখনও পুলিশ কিংবা কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা, কেউই ধরতে পারেনি সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহাজাহানকে ।

আরও পড়ুন:

  1. অশান্ত সন্দেশখালি, শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার তিনটি পোল্ট্রি ফার্মে আগুন ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীদের
  2. শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের গ্রেফতারের দাবিতে ফের উত্তপ্ত সন্দেশখালি, গ্রামবাসীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের
  3. থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে সমস্যা সমাধানে শাহজাহানের কাছেই পাঠাত পুলিশ, অভিযোগ গ্রামবাসীদের
Last Updated : Feb 9, 2024, 5:35 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.