কলকাতা, 9 এপ্রিল: বাম আমলের প্রাথমিকের 400 জন প্রার্থীকে চাকরি দিতে হবে তিন মাসের মধ্যে ৷ মঙ্গলবার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা । 2011 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল । ক্ষমতায় আসার পর নতুন সরকার বাম আমলের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় । তারা নতুন প্যানেল প্রকাশ করে । সেই প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করে একের পর এক মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে । এতদিন ঝুলেছিল প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ ।
এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন, চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে যত মামলা দায়ের হয়েছে, সকলকে চাকরি দিতে হবে । তিন মাসের মধ্যে মামলাকারীদের সকলকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি । হাওড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শককে ওই চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
2009 সালে প্রাথমিকে 1,826 জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় তৎকালীন বাম সরকার । 2010 সালে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় । পরের বছর অর্থাৎ, 2011 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল । নতুন সরকার বাম আমলের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় । তারা নতুন প্যানেল প্রকাশ করে । ওই প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে । পরে সুপ্রিম কোর্টেও ওই মামলা গিয়েছে । সুপ্রিম কোর্ট তৃণমূল সরকারের পক্ষে রায় দেয় । তবে শীর্ষ আদালত জানায়, বাম আমলের আবেদনকারী (যাঁরা বাম আমলে চাকরির আবেদন করেছিলেন) তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দিতে হবে । নতুন কোনও চাকরিপ্রার্থীর আবেদন ওই প্যানেলের ক্ষেত্রে গণ্য হবে না । আদালতের নির্দেশের পরে ওই প্যানেল নিয়েই 2014 সালে আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য ।
2015 সালে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হলে গোপালচন্দ্র কাঞ্জি-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটির অভিযোগ তুলে আবার হাই কোর্টে মামলা করেন । তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম অভিযোগ করেন, অনেক নতুন আবেদনকারীকে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে । শিক্ষক হওয়ার জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা না-থাকা সত্ত্বেও অনেককে চাকরি দেওয়া হয়েছে । ওই নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন করেন মামলাকারীরা । পরে ওই একই অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে ।
গত বছর কয়েক জন মামলাকারীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।আজ বিচারপতি রাজশেখর মান্থা নির্দেশ দেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে সব মামলাকারীকে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে।
আরও পড়ুন: