ETV Bharat / state

Woman Kabaddi Player: মহিলা কবাডি লিগ খেলতে দুবাই পাড়ি দিচ্ছেন চাষির মেয়ে শুক্লা

author img

By

Published : May 27, 2023, 9:17 PM IST

সুযোগ পেয়েছেন মহিলা কবাডি লিগে খেলার ৷ তার জন্য দুবাই পাড়ি দিচ্ছেন বাংলার মেয়ে শুক্লা সরকার ৷ 16 জুন থেকে মহিলা কবাডি লিগ অনুষ্ঠিত হবে ৷

womens kabaddi league
শুক্লা সরকার
দুবাই পাড়ি দিচ্ছেন বাংলার মেয়ে

বনগাঁ, 27 মে: দ্রারিদ্রতাও মাথা নত করে ইচ্ছে ও জেদের কাছে ৷ প্রমাণ করলেন চাষির মেয়ে বনগাঁর চাঁদপাড়া ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা বছর 25-এর শুক্লা সরকার ৷ সুযোগ পেয়েছেন ভারতের প্রথম মহিলা কবাডি লিগ খেলার ৷ তার জন্য পাড়ি দিচ্ছেন দুবাই ৷ রাজস্থানের হয়ে খেলবেন তিনি ৷

চাষি পরিবারে জন্ম হওয়ায় স্বপ্ন দেখার সামর্থ্য ছিল না । তাই আর পাঁচটা খেলার মত স্কুলে শারীরশিক্ষার শিক্ষিকার কথায় কবাডি খেলার শুরু। সেই খেলাই আজ তাঁকে পৌঁছে দেবে বিশ্ব দরবারে ৷ দুবাইয়ে খেলার পর অলিম্পিকে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে তিনি ৷ চাঁদপাড়া ঢাকুরিয়া উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন শুক্লা সরকার । স্কুল শেষ করে বর্তমানে তিনি বানিপুর বালিকা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী । শুক্লা জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের শিক্ষিকার হাত ধরে তিনি কবাডি খেলতে শুরু করেছিলেন । ধীরে ধীরে কবাডি নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন । একাধিকবার স্কুলে থাকাকালীন জেলাস্তারে কবাডি লিগ খেলেছেন । তাঁর এই খেলায় সহযোগিতা করেছেন বাবা-মা ।

শুক্লা জানান, দ্বাদশ শ্রেণিতে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন ৷ ভেবেছিলেন কবাডি খেলায় আর কিছু হবে না । তাই তিনি খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন । পরবর্তীতে তাঁর এক শিক্ষিকার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ব্যারাকপুরের একটি কোচিংয়ে অনুশীলন করতে শুরু করেন । অদম্য চেষ্টায় সাফল্য আসে তাঁর ৷ সুযোগ পান মহিলা কবাডি লিগে।

womens kabaddi league
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে শুক্লা সরকার

মেয়ে আবার নাকি খেলা করে ৷ লোকে কী বলবে ? খোলোয়াড় মেয়েদের পরিবারকে এ কথা প্রায়শ্যই শুনতে হয় ৷ তার উপর কবাডি, না না সে আবার মেয়েরা খেলার বস্তু নাকি ? আশেপাশের লোকের এসব কথায় কান দেননি শুক্লার পরিবার ৷ পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন তাঁরা মেয়েকে ৷ আর তার জোরেই আজ শুক্লা একজন কবাডি খেলোয়াড় ৷ পরিবারের পাশাপাশি শুক্লার পাশে থেকেছে স্কুলও ৷

আরও পড়ুন: জাতীয় দলের ভলিবল প্লেয়ার হয়েও আর্থিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ছেন সুষমা

ঢাকুরিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রত্না রায় বলেন, "আমাদের মেয়েরা কবাডি খেলছে, ফুটবল খেলছে এলাকার লোক খুবই অন্য চোখে দেখে ওদের । স্কুলের অনেক মেয়েই জেলাস্তরে খেলেছিল ৷ আজ তারা হারিয়ে গিয়েছে । আমরা ধরে রাখতে পারিনি । কিন্তু দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে শুক্লা পেড়েছে । ও আমাদের গর্ব । তাঁর পরিবারকে স্যালুট জানানো দরকার।"

শুক্লার বাবা বসন্ত সরকার চাষাবাদের কাজ করে এক মেয়েকে ও ছেলেকে বড় করেছেন । আর্থিক অভাবের আঁচ ছেলেমেয়ের গায়ে লাগতে দেননি তিনি । চাষাবাদ ছেড়ে বর্তমানে তিনি ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে পাড়ায় ফল বিক্রি করেন । মা তপতী সরকার সংসার আর ছেলে-মেয়েদের সামলান। মেয়ের স্বপ্নই তাঁদের স্বপ্ন । তাপতী বলেন, "মেয়ের কবাডি খেলতে ভালো লাগে তাই আমরা তাঁকে কোনদিন বাধা দিইনি । সব সময় বলেছি তোর মন যা চায় সেটাই কর ।" মেয়ের সাফল্যে তপতীর চোখে আজ আনন্দাশ্রু।

আরও পড়ুন: নৈহাটি থেকে টোকিয়ো, ছোটবেলার স্বপ্ন অলিম্পিকসে মজে সুতীর্থা

16 জুন এবিসি স্পোর্টসের আয়োজিত মহিলা কবাডি লিগ অনুষ্ঠিত হবে দুবাইতে । 12 দিন চলবে এই টুর্নামেন্ট । সেখানে ভারতের আটটি রাজ্যের আটটি দল অংশগ্রহণ করবে । এই টুর্নামেন্ট রাজস্থান ফাইটারের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন শুক্লা । দুবাই পাড়ি দিতে হাতে এখনও তাঁর অনেকটা সময় ৷ তবে ধীরে ধীরে তিনি নিজের ব্যাগ গোছাতে শুরু করেছেন ।

দুবাই পাড়ি দিচ্ছেন বাংলার মেয়ে

বনগাঁ, 27 মে: দ্রারিদ্রতাও মাথা নত করে ইচ্ছে ও জেদের কাছে ৷ প্রমাণ করলেন চাষির মেয়ে বনগাঁর চাঁদপাড়া ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা বছর 25-এর শুক্লা সরকার ৷ সুযোগ পেয়েছেন ভারতের প্রথম মহিলা কবাডি লিগ খেলার ৷ তার জন্য পাড়ি দিচ্ছেন দুবাই ৷ রাজস্থানের হয়ে খেলবেন তিনি ৷

চাষি পরিবারে জন্ম হওয়ায় স্বপ্ন দেখার সামর্থ্য ছিল না । তাই আর পাঁচটা খেলার মত স্কুলে শারীরশিক্ষার শিক্ষিকার কথায় কবাডি খেলার শুরু। সেই খেলাই আজ তাঁকে পৌঁছে দেবে বিশ্ব দরবারে ৷ দুবাইয়ে খেলার পর অলিম্পিকে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে তিনি ৷ চাঁদপাড়া ঢাকুরিয়া উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন শুক্লা সরকার । স্কুল শেষ করে বর্তমানে তিনি বানিপুর বালিকা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী । শুক্লা জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের শিক্ষিকার হাত ধরে তিনি কবাডি খেলতে শুরু করেছিলেন । ধীরে ধীরে কবাডি নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন । একাধিকবার স্কুলে থাকাকালীন জেলাস্তারে কবাডি লিগ খেলেছেন । তাঁর এই খেলায় সহযোগিতা করেছেন বাবা-মা ।

শুক্লা জানান, দ্বাদশ শ্রেণিতে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন ৷ ভেবেছিলেন কবাডি খেলায় আর কিছু হবে না । তাই তিনি খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন । পরবর্তীতে তাঁর এক শিক্ষিকার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ব্যারাকপুরের একটি কোচিংয়ে অনুশীলন করতে শুরু করেন । অদম্য চেষ্টায় সাফল্য আসে তাঁর ৷ সুযোগ পান মহিলা কবাডি লিগে।

womens kabaddi league
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে শুক্লা সরকার

মেয়ে আবার নাকি খেলা করে ৷ লোকে কী বলবে ? খোলোয়াড় মেয়েদের পরিবারকে এ কথা প্রায়শ্যই শুনতে হয় ৷ তার উপর কবাডি, না না সে আবার মেয়েরা খেলার বস্তু নাকি ? আশেপাশের লোকের এসব কথায় কান দেননি শুক্লার পরিবার ৷ পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন তাঁরা মেয়েকে ৷ আর তার জোরেই আজ শুক্লা একজন কবাডি খেলোয়াড় ৷ পরিবারের পাশাপাশি শুক্লার পাশে থেকেছে স্কুলও ৷

আরও পড়ুন: জাতীয় দলের ভলিবল প্লেয়ার হয়েও আর্থিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ছেন সুষমা

ঢাকুরিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রত্না রায় বলেন, "আমাদের মেয়েরা কবাডি খেলছে, ফুটবল খেলছে এলাকার লোক খুবই অন্য চোখে দেখে ওদের । স্কুলের অনেক মেয়েই জেলাস্তরে খেলেছিল ৷ আজ তারা হারিয়ে গিয়েছে । আমরা ধরে রাখতে পারিনি । কিন্তু দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে শুক্লা পেড়েছে । ও আমাদের গর্ব । তাঁর পরিবারকে স্যালুট জানানো দরকার।"

শুক্লার বাবা বসন্ত সরকার চাষাবাদের কাজ করে এক মেয়েকে ও ছেলেকে বড় করেছেন । আর্থিক অভাবের আঁচ ছেলেমেয়ের গায়ে লাগতে দেননি তিনি । চাষাবাদ ছেড়ে বর্তমানে তিনি ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে পাড়ায় ফল বিক্রি করেন । মা তপতী সরকার সংসার আর ছেলে-মেয়েদের সামলান। মেয়ের স্বপ্নই তাঁদের স্বপ্ন । তাপতী বলেন, "মেয়ের কবাডি খেলতে ভালো লাগে তাই আমরা তাঁকে কোনদিন বাধা দিইনি । সব সময় বলেছি তোর মন যা চায় সেটাই কর ।" মেয়ের সাফল্যে তপতীর চোখে আজ আনন্দাশ্রু।

আরও পড়ুন: নৈহাটি থেকে টোকিয়ো, ছোটবেলার স্বপ্ন অলিম্পিকসে মজে সুতীর্থা

16 জুন এবিসি স্পোর্টসের আয়োজিত মহিলা কবাডি লিগ অনুষ্ঠিত হবে দুবাইতে । 12 দিন চলবে এই টুর্নামেন্ট । সেখানে ভারতের আটটি রাজ্যের আটটি দল অংশগ্রহণ করবে । এই টুর্নামেন্ট রাজস্থান ফাইটারের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন শুক্লা । দুবাই পাড়ি দিতে হাতে এখনও তাঁর অনেকটা সময় ৷ তবে ধীরে ধীরে তিনি নিজের ব্যাগ গোছাতে শুরু করেছেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.