ঘাটাল, 10 অগস্ট : ঘাটালের বন্যার (Ghatal Flood Situation) জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও ডিভিসিকে ফের একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ৷ রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি জল ছাড়ার জন্যই গোটা এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷ বারবার বলা সত্বেও কেন্দ্র ঘাটাল অ্যাকশন প্ল্যান (Ghatal Action Plan) নিয়ে কোনও গুরুত্ব দেয়নি বলেও অভিযোগ তাঁর ৷
ঘাটালে জলে নেমে আজ এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এদিন বন্যায় মৃতদের পরিবারের হাতে সাহায্য তুলে দেন তিনি । গাড়িতে চড়ে ময়রাপুকুর আড়গোড়া রাজ্য সড়কে পৌঁছনোর পর গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন মমতা । এলাকা ঘুরে দেখার পর তিনি বলেন, "বিমানপথে ঘাটাল পরিদর্শন করেছি ৷ 7 কিলোমিটার জুড়ে একটা ভিডিয়ো করেছি ৷ দেখলাম বাড়িঘর, দোকানপাট সব ডুবে গিয়েছে ৷ প্রশাসনকে আরও ত্রাণশিবির করতে হবে ৷ আরও ভাল করে কাজ করতে হতে হবে ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকেও বলছি, আপনারা আরও বেশি করে এগিয়ে এসে মানুষের পাশে দাঁড়ান ৷" ভেদাভেদ না করে দুর্গত সব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
আরও পড়ুন: রাজভবনে শুভেন্দু-সাক্ষাতের পর রাতেই দিল্লি যাচ্ছেন ধনকড়
ঘাটালের বন্যার জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করে মমতা বলেন, "যা অবস্থা, তাতে মাস্টার প্ল্যান বাস্তব রূপ না-পেলে ঘাটালকে বাঁচানো যাবে না ৷ বারবার ঘাটাল অ্যাকশন প্ল্যানের কথা বলা হলেও, তাতে গুরুত্ব দেয়নি কেন্দ্র ৷ আমরা কপালেশ্বরী-কেলেঘাই প্রকল্প 700 কোটি টাকা দিয়ে করে দিয়েছি ৷ তাতে বহু মানুষের উপকার হয়েছে ৷ বিভিন্ন চেক ড্যাম তৈরি করেছি এবং নতুন নতুন পরিকল্পনা তৈরি করেছি । ঘাটাল প্রকল্পও এবার বাস্তবায়িত হওয়া দরকার ৷"
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার থেকে জলে নেমে ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন মমতার
ঘাটালের বন্যার সমস্যা মেটাতে রাজ্য থেকে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল দিল্লিতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি এ ব্যাপারে দায়িত্ব দিয়েছেন, জেলার মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কদের ৷ সৌমেন মহাপাত্র, মানস ভুঁইয়া, শিউলি সাহা, দেব, জুন মালিয়াদের দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ঘাটাল নিয়ে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা ৷
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া আইনপ্রণেতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারে ‘না’ সুপ্রিম কোর্টের
জল নামতে শুরু করলেও এ দিন ফের নতুন করে বৃষ্টি হওয়ায় আবারও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কেশপুর ও ঘাটাল । নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কেশপুরের 15টি অঞ্চল । পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এর আগে ঘাটালে গিয়েছেন জেলার চার মন্ত্রী এবং পুলিশ আধিকারিকরা । এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে গেলেন ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলার মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়া শিউলি সাহা ও হুমায়ুন কবীর । এছাড়াও ছিলেন জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, উত্তরা সিং হাজরা, বিধায়ক-অভিনেত্রী জুন মালিয়া ও সাংসদ-অভিনেতা দেব । মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে আজ ঘাটালে ছিল সাজো সাজো রব । মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে জলমগ্ন অবস্থাতেই রাস্তায় বেরিয়ে এসে ভিড় জমান এলাকার মানুষ ।