ETV Bharat / state

Ration Dealership Scam: রেশনের ডিলারশিপেও দুর্নীতির অভিযোগ, তীব্র রাজনৈতিক তরজা মালদায়

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 4, 2023, 10:29 PM IST

Ration Dealership Scam Case in Calcutta High Court: রেশনের ডিলারশিপে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা কলকাতা হাইকোর্টে ৷ নিয়ম বহির্ভূতভাবে তৃণমূল নেতার নিকটাত্মীয়কে রেশনের ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ৷

Ration Dealership Scam
রেশনের ডিলারশিপ

রেশনের ডিলারশিপেও দুর্নীতির অভিযোগ

মালদা, 4 নভেম্বর: খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রেশনে দুর্নীতির অভিযোগে এই মুহূর্তে জেলে রয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ৷ বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বারবার জানিয়েছেন, তাঁর সময়কালে খাদ্য দফতরে বিন্দুমাত্র দুর্নীতি হয়নি ৷ কিন্তু তাঁর সেই বক্তব্যকেই যেন চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাপুর গ্রামের শেখ আতাউর ৷ নিয়ম বহির্ভূতভাবে জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বকসির নিকটাত্মীয়কে রেশনের ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি ৷ তাঁর আরও অভিযোগ, এই ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশিকাও অমান্য করছে খাদ্য দফতর ৷ এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্কও ৷

শেখ আতাউরের বক্তব্য, 2022 সালের 3 এপ্রিল গোটা রাজ্যে রেশন ডিলার নিয়োগের সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ৷ তার মধ্যে বাহারাল এলাকারও নাম ছিল ৷ নির্ধারিত 21 দিনের মধ্যেই (24 এপ্রিল) তিনি সেই ডিলারশিপের জন্য আবেদন জমা করেন ৷ এই এলাকা থেকে একমাত্র তিনিই আবেদন জমা করেছিলেন ৷ কিন্তু তিনি হঠাৎ দেখেন, আবেদনপত্র জমা না-দিয়েও শেখ আফসার আলি নামে এক ব্যক্তি সেই লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছেন ৷ তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসির ভগ্নিপতি তিনি ৷ তাঁর স্ত্রী রুকসানা পারভিন রতুয়া 1 নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভানেত্রী ৷

আরও পড়ুন: বিজেপির ষড়যন্ত্রে গ্রেফতার, মমতা-অভিষেক সব জানেন; দাবি জ্যোতিপ্রিয়র

আতাউর বলেন, "আমি জানতে পারি তিনি বেআইনিভাবে ওই লাইসেন্স পেয়েছেন ৷ এ নিয়ে খাদ্য দফতরে গেলে আমাকে কোনও পাত্তা দেওয়া হয়নি ৷ বিষয়টি জানতে আমি আরটিআই করি ৷ তখনই জানা যায়, অফিসের আধিকারিকদের একাংশ বেআইনিভাবে আবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছেন ৷ আমি এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা করি ৷ আমি জয়ী হই ৷ অফিস সেই অর্ডার কপি দেখেও তাকে মান্যতা দিতে চায়নি ৷ এরপর শেখ আফসার আলি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান ৷ ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল রাখে ৷ উপরন্তু সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর দু'মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ৷ বিচারপতি ওই লাইসেন্স আমার নামে দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷ এরপর খাদ্য দফতরের সাব ডিভিশনাল কন্ট্রোলার আমাকে ডেকে পাঠান ৷ তিনি পরিষ্কার জানান, তাঁর উপর উপরের চাপ রয়েছে ৷ "

শেখ আতাউরের কথায়, "চাপটা কার, সেটাই জানতে চাই ৷ আফসারি আলির রেশন দোকান উদ্বোধনের দিন আবদুর রহিম বকসি প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, দলের জেলা চেয়ারম্যান সমর মুখোপাধ্যায়ের জন্যই এই ডিলারশিপ হয়েছে ৷ এই আমলে আবেদন না-করেই চাকরি হচ্ছে বলে প্রমাণিত ৷ এবার আবেদন না-জানিয়ে রেশনের ডিলারশিপ পাওয়ার বিষয়টিও সামনে এল ৷" এ নিয়ে শেখ আফসার আলি কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷ ফোন ধরেননি আবদুর রহিম বকসিও ৷ তবে জেলা খাদ্য দফতরের আধিকারিক মানিক সরকার শুধু বলেন, "আমরা কলকাতা হাইকোর্টের অর্ডারের কপি পেয়েছি ৷ আদালতের নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ করা হবে ৷"

আরও পড়ুন: জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারির প্রতিবাদে পথে নামলেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ

এই ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক ৷ উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর প্রতিক্রিয়া, "তৃণমূলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ৷ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী, বর্তমান বনমন্ত্রী জেলে ৷ জেলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলও ৷ এখানে তৃণমূলের জেলা সভাপতির আত্মীয় বেআইনিভাবে রেশনের ডিলারশিপ পেয়েছেন ৷ হাইকোর্ট তা বাতিল করেছে ৷ ঠিকই করেছে ৷ এদের সবারই জেলে যাওয়া উচিত ৷" তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি দুলাল সরকারের পালটা বক্তব্য, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই ৷ তবে এই ডিলারশিপ যিনি পেয়েছেন, তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী ৷ হাইকোর্ট যদি কোনও রায় দিয়ে থাকে তবে দফতরের আধিকারিকরা সেটা বুঝবেন ৷ আইন আইনের পথেই চলবে ৷ কোথাও ভুল হলে তার সংশোধন হবে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.