ETV Bharat / state

Nabanna- Raj Bhaban Conflict: ঠিক কেন রাজ্যপালের প্রধান সচিবের পদ থেকে সরতে হল নন্দিনীকে?

নন্দিনী চক্রবর্তীকে রাজ্যপালের প্রধান সচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা । রাজভবন তাঁকে রিলিজ করে দিলেও নবান্ন বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি (State Govt hasn't issued any notification) । 'কমান্ডিং অথরিটি' থেকে নির্দেশ না-আসায় রাজভবনেই কাজে যোগ দিয়েছেন নন্দিনী । কিন্তু এভাবে রাজভবনের নির্দেশ অমান্য হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সবমিলিয়ে নন্দিনীর অপসারণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে ।

Nabanna- Raj Bhaban Conflict
নন্দিনী চক্রবর্তী
author img

By

Published : Feb 15, 2023, 7:06 AM IST

Updated : Feb 15, 2023, 11:49 AM IST

কলকাতা, 15 ফেব্রুয়ারি: রাজ্যপালের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি না-হওয়ায় মঙ্গলবারও রাজভবনে গিয়ে নিজের কাজে যোগ দেন নন্দিনী। রাজ্যপাল যে তাঁকে আর চাইছেন না-সেটা স্পষ্ট। এখানেই প্রশ্ন কী এমন হল যে, রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে এতদিন ধরে যিনি সেতুবন্ধনের কাজ করছিলেন তাঁকে হঠাৎ সরাতে চাইছেন রাজ্যপাল?

কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে যে তথ্য উঠে আসছে তা অত্যন্ত চঞ্চল্যকর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্র মারফত যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করতে চলেছে রাজভবন। বিশেষ উপদেষ্টা পদে আনা হতে পারে তামিলনাড়ুর এক দুঁদে আধিকারিককেও। এই দু'জনের নিয়োগকে নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই রাজভবনে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এই দু'জনের জন্য রাজভবনে আলাদা করে অফিস তৈরি করা হচ্ছে, এমন খবরও শোনা যাচ্ছে। এই প্রস্তাবেই নাকি রাজি হননি নন্দিনী । রাজভবনের একটি সূত্র মনে করছে, রাজ্যপাল এভাবে বিশেষ পরামর্শদাতা নিয়োগ করতে পারেন কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন নন্দিনী (Nandini Chokroborty had reportedly questioned legality of the proposal to appoint special adviser)।

অতীতে জগদীপ ধনকর তাঁর পছন্দের কয়েকজনকে অস্থায়ীভাবে রাজভবনে নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রে নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছিল বিশেষ পরামর্শদাতা হিসেবে। এই পদক্ষেপ আইনি দিক থেকে যথাযথ কিনা সেটাই প্রশ্ন তুলেছিলেন নন্দিনী। আর এর থেকেই নাকি তাঁর সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এক্ষেত্রে আর কাল বিলম্ব করেননি রাজ্যপাল। সরাসরি তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার বার্তা তিনি পাঠান রাজ্যের মুখ্য সচিবকে। রাজ্যপাল জানিয়ে দেন নন্দিনীকে আর চান না তারপরই রাজভবন থেকে তাঁকে অব্যাহুতিও দিয়ে দেওয়া হয়। নবান্ন এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি না-করায় মঙ্গলবারও নন্দিনী রাজভবনে নিজের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন বলে খবর।

সবমিলিয়ে এই সিনিয়র আইএএসকে নিয়ে দিনভর ধোঁয়াশা জারি রয়েছে। রাজভবন তাঁকে রিলিজ করে দিলেও নবান্ন থেকে তাঁর বদলির চিঠিতে সই করা হয়নি। ফলে তাঁকে নিয়ে একটা সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যতদূর জানা যাচ্ছে এই ঘটনায় রাজ্যপাল অসন্তুষ্ট। মঙ্গলবার তিনি দিল্লি থেকে ফিরে এসেছেন। নন্দিনীর 'কমান্ডিং অথরিটি' পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কাজেই তিনি সরকারি নির্দেশ নামা ছাড়া নিজে থেকে তার কর্মস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন না। অন্যদিকে, রাজভবনের 'সুপ্রিম অথরিটি' রাজ্যপাল। সে ক্ষেত্রে নির্দেশ পালন না-করায় নন্দিনীর বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে রাজভবন।

ঠিক কী কী পদক্ষেপ হতে পারে নন্দিনী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তা নিয়েও নানা মুনির নানা মত। তবে ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, রাজ্যপাল অব্যাহতি দেওয়ার পরও তিনি রাজভবনে যাওয়ার জন্য তাঁকে 'ট্রেসপাসার' তকমা দেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও সুপারিশ করতে পারেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ। নির্বাচিত সরকার প্রশাসনকে পরিচালনা করলেও রাজ্যপালই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। সেক্ষেত্রে তাঁর নির্দেশ না-মানার কারণে নন্দিনী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সংবিধান অবমাননার অভিযোগ উঠতে পারে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে 'সার্ভিস রুল ভায়োলেশনের'ও অভিযোগ করা যেতে পারে বলে খবর।
উল্লেখ্য রাজভবনের এই পরিস্থিতি যতই ঘোরালো মনে হোক না কেন এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যপালের বিরোধিতা যে করবে না তা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথাতে স্পষ্ট। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের অবস্থানও রাজভবনের সঙ্গে সংঘাতের পটভূমি তৈরি করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন দেখার আগামী দিনেএই টানাপোড়েন কতদূর চলে।

আরও পড়ুন: নন্দিনী ইস্যুতে রাজভবন-নবান্নের নীরবতা কি নতুন সংঘাতের ইঙ্গিত ?

কলকাতা, 15 ফেব্রুয়ারি: রাজ্যপালের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি না-হওয়ায় মঙ্গলবারও রাজভবনে গিয়ে নিজের কাজে যোগ দেন নন্দিনী। রাজ্যপাল যে তাঁকে আর চাইছেন না-সেটা স্পষ্ট। এখানেই প্রশ্ন কী এমন হল যে, রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে এতদিন ধরে যিনি সেতুবন্ধনের কাজ করছিলেন তাঁকে হঠাৎ সরাতে চাইছেন রাজ্যপাল?

কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে যে তথ্য উঠে আসছে তা অত্যন্ত চঞ্চল্যকর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্র মারফত যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করতে চলেছে রাজভবন। বিশেষ উপদেষ্টা পদে আনা হতে পারে তামিলনাড়ুর এক দুঁদে আধিকারিককেও। এই দু'জনের নিয়োগকে নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই রাজভবনে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এই দু'জনের জন্য রাজভবনে আলাদা করে অফিস তৈরি করা হচ্ছে, এমন খবরও শোনা যাচ্ছে। এই প্রস্তাবেই নাকি রাজি হননি নন্দিনী । রাজভবনের একটি সূত্র মনে করছে, রাজ্যপাল এভাবে বিশেষ পরামর্শদাতা নিয়োগ করতে পারেন কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন নন্দিনী (Nandini Chokroborty had reportedly questioned legality of the proposal to appoint special adviser)।

অতীতে জগদীপ ধনকর তাঁর পছন্দের কয়েকজনকে অস্থায়ীভাবে রাজভবনে নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রে নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছিল বিশেষ পরামর্শদাতা হিসেবে। এই পদক্ষেপ আইনি দিক থেকে যথাযথ কিনা সেটাই প্রশ্ন তুলেছিলেন নন্দিনী। আর এর থেকেই নাকি তাঁর সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এক্ষেত্রে আর কাল বিলম্ব করেননি রাজ্যপাল। সরাসরি তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার বার্তা তিনি পাঠান রাজ্যের মুখ্য সচিবকে। রাজ্যপাল জানিয়ে দেন নন্দিনীকে আর চান না তারপরই রাজভবন থেকে তাঁকে অব্যাহুতিও দিয়ে দেওয়া হয়। নবান্ন এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি না-করায় মঙ্গলবারও নন্দিনী রাজভবনে নিজের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন বলে খবর।

সবমিলিয়ে এই সিনিয়র আইএএসকে নিয়ে দিনভর ধোঁয়াশা জারি রয়েছে। রাজভবন তাঁকে রিলিজ করে দিলেও নবান্ন থেকে তাঁর বদলির চিঠিতে সই করা হয়নি। ফলে তাঁকে নিয়ে একটা সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যতদূর জানা যাচ্ছে এই ঘটনায় রাজ্যপাল অসন্তুষ্ট। মঙ্গলবার তিনি দিল্লি থেকে ফিরে এসেছেন। নন্দিনীর 'কমান্ডিং অথরিটি' পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কাজেই তিনি সরকারি নির্দেশ নামা ছাড়া নিজে থেকে তার কর্মস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন না। অন্যদিকে, রাজভবনের 'সুপ্রিম অথরিটি' রাজ্যপাল। সে ক্ষেত্রে নির্দেশ পালন না-করায় নন্দিনীর বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে রাজভবন।

ঠিক কী কী পদক্ষেপ হতে পারে নন্দিনী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তা নিয়েও নানা মুনির নানা মত। তবে ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, রাজ্যপাল অব্যাহতি দেওয়ার পরও তিনি রাজভবনে যাওয়ার জন্য তাঁকে 'ট্রেসপাসার' তকমা দেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও সুপারিশ করতে পারেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ। নির্বাচিত সরকার প্রশাসনকে পরিচালনা করলেও রাজ্যপালই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। সেক্ষেত্রে তাঁর নির্দেশ না-মানার কারণে নন্দিনী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সংবিধান অবমাননার অভিযোগ উঠতে পারে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে 'সার্ভিস রুল ভায়োলেশনের'ও অভিযোগ করা যেতে পারে বলে খবর।
উল্লেখ্য রাজভবনের এই পরিস্থিতি যতই ঘোরালো মনে হোক না কেন এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যপালের বিরোধিতা যে করবে না তা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথাতে স্পষ্ট। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের অবস্থানও রাজভবনের সঙ্গে সংঘাতের পটভূমি তৈরি করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন দেখার আগামী দিনেএই টানাপোড়েন কতদূর চলে।

আরও পড়ুন: নন্দিনী ইস্যুতে রাজভবন-নবান্নের নীরবতা কি নতুন সংঘাতের ইঙ্গিত ?

Last Updated : Feb 15, 2023, 11:49 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.