কলকাতা, 12 জুন: ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে গণ্ডগোলের ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে সুর চড়াল তৃণমূল কংগ্রেস । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সাসপেনশন চাইলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর ।
এ দিন মেট্রোপলিটনের তৃণমূল ভবনে মমতাবালা ঠাকুর বলেন, "নারী-পুরুষ সমান ঠাকুরবাড়িতে । কিন্তু, গতকাল নারীদের উপর অত্যাচার হয়েছে । প্রধানমন্ত্রী 15 অগস্ট নারীদের সুরক্ষার কথা বলেছিলেন । কিন্তু, গতকাল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে শান্তনু ঠাকুর যা করলেন সে বিষয়ে কী বলবেন ? আমি তাঁর সাসপেন্ড চাইছি । এখন আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে । এর আগেও এনআরসি নিয়ে আমরা যখন বৈঠক করি, তখন আরএসএস-এর লোকজন দিয়ে আমাদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে ।"
এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন মমতাবালা ঠাকুর ৷ তিনি বলেন, গতকাল আরএসএস-এর গুন্ডারা কালো রড নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল । শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে আরএসএস গুণ্ডাদের গাঁজা খাইয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূলের এই নেত্রী ।
তাঁর অভিযোগ, মন্দিরের মূল জায়গায় জুতো পরে ঢুকেছে কেন্দ্রিয় বাহিনী । কেন্দ্রীয় বাহিনী ঠাকুরের মালা ছুড়ে ফেলেছে, লাথি মেরে ঘট ফেলে দিয়েছে । প্রসাদ ফেলে দেওয়া হয়েছে । পুজো প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিপ্রা ও ইলা বাগচীকে বন্দুক দিয়ে মারা হয় । মঞ্জুলকৃষ্ণের নামে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভযোগ তাঁর । মমতাবালা বলেন, "আমি বাড়িতে ভয়ে থাকি । জানালা খুলি না । সন্তানদের নিয়ে ভয়ে থাকি সর্বক্ষণ ।"
আরও পড়ুন: বাংলায় মণিপুরের রাজনীতি আনছে বিজেপি, ঠাকুরবাড়ির গণ্ডগোলে সরব তৃণমূল
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলে মমতাবালা ঠাকুর বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বক্ষণ বড়মায়ের খোঁজ নিয়েছেন । মতুয়াদের জন্য 10 কোটি টাকার বোর্ড করে দিয়েছেন । বিশ্ব বিদ্যালয় করে দিয়েছেন । হরি ঠাকুরের নামে সরকারি ছুটি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় । বিজেপি যে ভাবে জাতপাতের রাজনীতি করছে তাতে তাঁরা লজ্জিত বলে জানান মমতাবালা ঠাকুর । তাঁর অভিযোগ, মতুয়াদের মধ্যে থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তৈরি করে শান্তনু ঠাকুরকে দিয়েই মতুয়াদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে ।
গোটা ঘটনায় তিনি আতঙ্কিত বলে জানিয়ে মমতাবালা ঠাকুর বলেন, "আমার স্বামী নেই। দুই বাচ্চা নিয়ে থাকি । কাল থেকে হুমকি চলছে । জানি না কাল আমার কী হবে । গতকালের ঘটনা নিন্দনীয় । এটা নিয়ে রাজনীতি করতে আসিনি । কিন্তু, ভয়ে আছি ।"