ETV Bharat / state

রাজ্যে জব কার্ড দুর্নীতির তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন হাইকোর্টের

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 18, 2024, 2:51 PM IST

Job Card Scam: রাজ্যে জব কার্ড দুর্নীতির তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এই কমিটিতে থাকবেন কেন্দ্রের একজন, রাজ্যের একজন আধিকারিক ও সিএজির একজন প্রতিনিধি ৷ গোটা রাজ্যে ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে তদন্ত করবে এই তিন সদস্যের কমিটি ৷

Calcutta High Court
কলকাতা হাইকোর্ট

কলকাতা, 18 জানুয়ারি: রাজ্যে জব কার্ড দুর্নীতির তদন্তের ভার এবার তিন সদস্যের কমিটির উপর ৷ বৃহস্পতিবার এই কমিটি গঠন করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট । কেন্দ্রের একজন, রাজ্যের একজন আধিকারিক ও সিএজির একজন প্রতিনিধিকে নিয়ে তৈরি হবে এই তিন সদস্যের কমিটি । কেন্দ্র ও রাজ্যকে যত দ্রুত সম্ভব তিন সদস্যের কমিটির আধিকারিকদের নাম জানাতে হবে । তাঁরা গোটা রাজ্যে ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে । এমনটাই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে ৷ আগামী বৃহস্পতিবার ফের মামলার শুনানি হবে ।

পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ, 2023-24 অর্থবর্ষে যাতে নতুন করে কাজ চালু হয় তার জন্য একটা অ্যাকশন প্ল্যান কেন্দ্র ও রাজ্যকে তৈরি করতে হবে। বিকাশ ভট্টাচার্য খেত মজদুর সংগঠনের তরফে এ দিন হাইকোর্টে বলেন, "আমরা শ্রমিক। আমাদের পারিশ্রমিক নিয়ে কথা । আমরা কাজের আবেদন জানিয়েছি, কিন্তু কাজ পাইনি । কেন্দ্র না রাজ্য, কারা দায়িত্ব নেবে সেটা তারাই ভাবুক। কিন্তু তাদের দায়িত্ব শ্রমিকদের জন্য কাজ ও উপযুক্ত পারিশ্রমিকের ব্যাবস্থা করা ।" প্রধান বিচারপতি জানতে চান, বর্তমান পরিস্থিতি কী? যতই দুর্নীতি বা যা কিছু থাক যাদের কাজের প্রয়োজন তাদের জন্য কী করা হয়েছে? কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে?

অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী জানান, "রাজ্য হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে রাজ্যে জব কার্ডকে কেন্দ্র করে বড়সড় দুর্নীতি /অনিয়ম হয়েছে । কেন্দ্র টাকা দেয়। পঞ্চায়েত লেভেলে সুপারভাইজার, নোডাল অফিসার নিয়োগ করে রাজ্য জেলাশাসকের নির্দেশে । তারাই এই টাকা বণ্টন করে। কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে ইতিমধ্যে। 2.45 কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে । 6.35 কোটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য। রাজ্যে রয়েছে 1.55 কোটি জব কার্ড । কিন্তু তার মধ্যে কতগুলো আসল আর কতগুলো ভুয়ো সেটা দেখার দায়িত্ব রাজ্যের ।"

আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য (সিবিআইয়ের তরফে)বলেন, "বিপুল দুর্নীতি হয়েছে । প্রাথমিকভাবে পুরুলিয়া ছাড়াও কয়েকটি জেলায় এই দুর্নীতি পাওয়া গিয়েছে । আদালত যদি সিবিআইকে নির্দেশ দেয় তাহলে সিবিআই তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে পারে । সিবিআইয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধানে কয়েকটি জায়গায় বিপুল দুর্নীতি চোখে পড়েছে । বেশ কয়েকটি জেলায় এখনও অনুসন্ধান চলছে ।"

আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তরফে জানান, "58 জন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়েছিলেন। সেই টাকা পরে তাঁরা রাজ্যের অ্যাকাউন্টে ফেরত দিয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্যই। " রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)কিশোর দত্ত বলেন, "2021 সালে কেন্দ্রের একটা প্রতিনিধি দল এসেছিল মালদা এবং জিটিএ এলাকায় (পাহাড়ে)। তারা জব কার্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বলে জানায় । 2023 সালে কলকাতায় 15টি দল আসে কেন্দ্রের। তারা ফিরে যাওয়ার পর রাজ্যের কাছে কিছু তথ্য চেয়ে পাঠায় । রাজ্যের তরফে সেগুলো পাঠানো হয় । তারপরে নতুন করে আর টাকা দেয়নি কেন্দ্র। একাধিকবার কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে যাতে নতুন করে এই প্রকল্প চালু করা হয় । নথি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে ।"

আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আবেদন জানান, তিন সদস্য বিশিষ্ট একটা কমিটি গঠন করে এই পুরো বিষয়ের তদন্ত করা হোক । আদালত সেই আবেদনে সারা দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছে ৷ যারা এই মামলার তদন্ত করবে ৷

আরও পড়ুন:

  1. আধার ছাড়াই বাংলায় 80 লক্ষ জব কার্ড, মনরেগার দুর্নীতি নিয়ে সরব শুভেন্দু
  2. '2 মাসের মধ্যে জব কার্ড হোল্ডারদের টাকা বেতন দিয়ে মেটাব', দিল্লিতে প্রতিশ্রুতি অভিষেকের
  3. মনরেগায় জব কার্ড হোল্ডারদের একাংশকে অভিষেকের টাকা দেওয়া নিয়ে কুণাল-রাহুল তরজা

কলকাতা, 18 জানুয়ারি: রাজ্যে জব কার্ড দুর্নীতির তদন্তের ভার এবার তিন সদস্যের কমিটির উপর ৷ বৃহস্পতিবার এই কমিটি গঠন করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট । কেন্দ্রের একজন, রাজ্যের একজন আধিকারিক ও সিএজির একজন প্রতিনিধিকে নিয়ে তৈরি হবে এই তিন সদস্যের কমিটি । কেন্দ্র ও রাজ্যকে যত দ্রুত সম্ভব তিন সদস্যের কমিটির আধিকারিকদের নাম জানাতে হবে । তাঁরা গোটা রাজ্যে ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে । এমনটাই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে ৷ আগামী বৃহস্পতিবার ফের মামলার শুনানি হবে ।

পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ, 2023-24 অর্থবর্ষে যাতে নতুন করে কাজ চালু হয় তার জন্য একটা অ্যাকশন প্ল্যান কেন্দ্র ও রাজ্যকে তৈরি করতে হবে। বিকাশ ভট্টাচার্য খেত মজদুর সংগঠনের তরফে এ দিন হাইকোর্টে বলেন, "আমরা শ্রমিক। আমাদের পারিশ্রমিক নিয়ে কথা । আমরা কাজের আবেদন জানিয়েছি, কিন্তু কাজ পাইনি । কেন্দ্র না রাজ্য, কারা দায়িত্ব নেবে সেটা তারাই ভাবুক। কিন্তু তাদের দায়িত্ব শ্রমিকদের জন্য কাজ ও উপযুক্ত পারিশ্রমিকের ব্যাবস্থা করা ।" প্রধান বিচারপতি জানতে চান, বর্তমান পরিস্থিতি কী? যতই দুর্নীতি বা যা কিছু থাক যাদের কাজের প্রয়োজন তাদের জন্য কী করা হয়েছে? কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে?

অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী জানান, "রাজ্য হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে রাজ্যে জব কার্ডকে কেন্দ্র করে বড়সড় দুর্নীতি /অনিয়ম হয়েছে । কেন্দ্র টাকা দেয়। পঞ্চায়েত লেভেলে সুপারভাইজার, নোডাল অফিসার নিয়োগ করে রাজ্য জেলাশাসকের নির্দেশে । তারাই এই টাকা বণ্টন করে। কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে ইতিমধ্যে। 2.45 কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে । 6.35 কোটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য। রাজ্যে রয়েছে 1.55 কোটি জব কার্ড । কিন্তু তার মধ্যে কতগুলো আসল আর কতগুলো ভুয়ো সেটা দেখার দায়িত্ব রাজ্যের ।"

আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য (সিবিআইয়ের তরফে)বলেন, "বিপুল দুর্নীতি হয়েছে । প্রাথমিকভাবে পুরুলিয়া ছাড়াও কয়েকটি জেলায় এই দুর্নীতি পাওয়া গিয়েছে । আদালত যদি সিবিআইকে নির্দেশ দেয় তাহলে সিবিআই তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে পারে । সিবিআইয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধানে কয়েকটি জায়গায় বিপুল দুর্নীতি চোখে পড়েছে । বেশ কয়েকটি জেলায় এখনও অনুসন্ধান চলছে ।"

আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তরফে জানান, "58 জন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়েছিলেন। সেই টাকা পরে তাঁরা রাজ্যের অ্যাকাউন্টে ফেরত দিয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্যই। " রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)কিশোর দত্ত বলেন, "2021 সালে কেন্দ্রের একটা প্রতিনিধি দল এসেছিল মালদা এবং জিটিএ এলাকায় (পাহাড়ে)। তারা জব কার্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বলে জানায় । 2023 সালে কলকাতায় 15টি দল আসে কেন্দ্রের। তারা ফিরে যাওয়ার পর রাজ্যের কাছে কিছু তথ্য চেয়ে পাঠায় । রাজ্যের তরফে সেগুলো পাঠানো হয় । তারপরে নতুন করে আর টাকা দেয়নি কেন্দ্র। একাধিকবার কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে যাতে নতুন করে এই প্রকল্প চালু করা হয় । নথি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে ।"

আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আবেদন জানান, তিন সদস্য বিশিষ্ট একটা কমিটি গঠন করে এই পুরো বিষয়ের তদন্ত করা হোক । আদালত সেই আবেদনে সারা দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছে ৷ যারা এই মামলার তদন্ত করবে ৷

আরও পড়ুন:

  1. আধার ছাড়াই বাংলায় 80 লক্ষ জব কার্ড, মনরেগার দুর্নীতি নিয়ে সরব শুভেন্দু
  2. '2 মাসের মধ্যে জব কার্ড হোল্ডারদের টাকা বেতন দিয়ে মেটাব', দিল্লিতে প্রতিশ্রুতি অভিষেকের
  3. মনরেগায় জব কার্ড হোল্ডারদের একাংশকে অভিষেকের টাকা দেওয়া নিয়ে কুণাল-রাহুল তরজা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.