ঢোলাহাট, 1 এপ্রিল : দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের দক্ষিণ রায়পুরের 9 নম্বর ঘেরির বাসিন্দা বছর আটত্রিশের আলফাজুদ্দিন পাইক। তিনি পেশায় দিনমজুর। স্ত্রী, ও এক ছেলেকে নিয়ে থাকেন পূর্ত দফতরের জায়গায় ৷ দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে ৷ ঘর বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি। কখনও করেন অ্যাজবেস্টরের কাজ, তো কখনও বাজারে আলু-পেঁয়াজের বস্তা মাথায় নিয়ে দোকানে-দোকানে পৌঁছানোর কাজ।
স্থায়ী কোনও কাজ না থাকায় সংসারও চলছিল বেশ কষ্টে। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে যেটুকু রোজগার তার বেশির ভাগটাই উড়িয়ে দিতেন লটারির টিকিট কিনে। ধার-দেনা করেই চলছিল সংসার। এসব নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগেই ছিল। লোকে বলত 'পাগলা ফৈজুদ্দিন'। পরিবার ও প্রতিবেশীদের কাছে হেলাফেলার সেই মানুষটারই রাতারাতি পরিচয় পালটে গিয়েছে ।
'পাগল ফৈজুদ্দিন' এখন কোটিপতি (Labour Wins Lottery)। রীতিমত তাঁকে সমীহ করে চলছেন পাড়া প্রতিবেশীরাও। জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে ঢোলাহাটের মিলনমোড়ে লটারির দোকান থেকে লটারির টিকিট কাটেন আলফাজুদ্দিন। বাড়ি ফিরে সামান্য কিছু মুখে দিয়েই শুয়ে পড়েছিলেন নিজের ঘরের মেঝেতে। হঠাৎই মোবাইলে ফোন লটারির দোকানদারের। তিনি আলফাজুদ্দিনকে জানান, প্রথম পুরস্কারের কোটি টাকা জিতেছেন তিনি। শোনামাত্রই আর দেরি করেননি তিনি। টিকিটটি ডাকাতি হওয়ার ভয়ে সেটি পকেটে নিয়ে বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়েই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন : ভোটের আগে ফের নগদ টাকা উদ্ধার আসানসোলে
তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। আপনজনেরা চারদিকে খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে শেষে রাতে ঢোলাহাট থানায় বিষয়টি জানান ৷ পুলিশ নিখোঁজ ওই ব্যক্তির সন্ধানে তল্লাশিতে নামে। অনেকক্ষণ ধরে খোঁজাখুঁজির পর ভোরে তাঁর খোঁজ মেলে। পুলিশকে দেখেই কলাবাগান থেকে গুটিগুটি পায়ে বেরিয়ে আসেন আলফাজুদ্দিন পাইক। জানান, লুকিয়ে থাকার আসল কারণ।
পুলিশি জেরায় ওই ব্যক্তি জানান, লটারিতে কোটি টাকা পেয়েছেন শুনেই টিকিট পকেটে নিয়ে সারারাত অগুণতি মশার কামড় খেয়েও লুকিয়ে ছিলেন ওই কলাবাগানে। যদি দুষ্কৃতীরা জানতে পেরে টিকিটটি ডাকাতি করে নেয়, এই ভয়ে। সব শুনে হতবাক উপস্থিত সকলেই। আলফাজুদ্দিনের নিরাপত্তার কথা ভেবে পুলিশি উদ্যোগী হয়ে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন : মহিলা কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ আসানসোলে
কোটিপতি জানিয়েছেন, টাকা পেলে আগে ধারের টাকা শোধ করবেন। তারপর অন্য সব কিছু। অত টাকা নিয়ে তিনি কী করতে চান এখনও সেভাবে কিছু ঠিক না করলেও তাঁর ইচ্ছা সরকারি জায়গার দখলদারি ছেড়ে এবার জায়গা কিনে একটা পাকা বাড়ি করা।