বোলপুর, 24 ফেব্রুয়ারি: 'আপনাদের মধ্যে এসে আমার খুব ভালো লাগছে', বক্তৃতার শুরুতে বাংলায় বললেন রাজনাথ সিং ৷ আজ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব ৷ তাতে যোগ দিতে শান্তিনিকেতনে আম্রকুঞ্জে এসেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ৷ অনুষ্ঠানে রয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী সুভাষ সরকার থেকে শুরু করে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ তার আগে ছাতিমতলায় গিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ৷ পরে রবীন্দ্রভবন সংগ্রহশালা ঘুরে দেখে সমাবর্তনে অংশ নেন তিনি ৷ প্রথা অনুযায়ী কয়েকজন পড়ুয়ার হাতে শংসাপত্র ও সপ্তপর্ণী (ছাতিমপাতা) তুলে দেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷ উল্লেখ্য, দু'দিনের সফরে বীরভূমে এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (Visva-Bharati University) ৷
সমাবর্তন উৎসবের মঞ্চে এসে আপ্লুত রাজনাথ ৷ তাঁর এই বাংলা ভাষণের সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে 'সাধু, সাধু' রব ভেসে আসে ৷ তিনি উপস্থিত পড়ুয়াদের 'প্রিয় সন্তান' বলে সম্বোধন করেন ৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি ৷ আজ বিশ্বভারতীতে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি ৷ কাল বিশ্বভারতীর এই ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় আমার মনের মধ্যে যে ধরনের আন্দোলন হয়েছে, আমি তা শব্দে প্রকাশ করতে পারব না ৷"
শান্তিনিকেতনে পড়ুয়াদের কাছে দুনিয়ায় ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থানও স্পষ্ট করেন তিনি ৷ রাজনাথ বলেন, "সেই দিন খুব একটা দূরে নেই, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হবে ৷ আন্তর্জাতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী 4-5 বছরের মধ্যে ভারত দুনিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে (India will become the 3rd largest economy in the world) ৷"
বাংলার ভূমিকে প্রণাম জানিয়ে রাজনাথ বলেন, "মহান দার্শনিক গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকেও আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ৷ গুরুদেবের দার্শনিক ধারাবাহিকতা এবং দেশ ও দুনিয়া সবচেয়ে শ্রদ্ধার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীর প্রতি হৃদয় থেকে সম্মান জানাচ্ছি ৷" সুভাষ সরকারের একটি মন্তব্যকে তুলে ধরে রাজনাথ বলেন, "যখনই আমি কোনও শিক্ষার বিষয়ক ইস্যুতে নিজের বিচারধারার কথা বলতে যাই, তখন সেখানে আমি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে থাকি না ৷ শিক্ষক হিসেবে উপস্থিত হই ৷ কাল যখন আমি শান্তিনিকেতনের মতো মহান প্রতিষ্ঠানে আসছিলাম, তখন ভাবছিলাম এখানকার মেধাবি পড়ুয়াদের কী দিতে পারব, যা তাঁদের কাজে আসবে ?"
তিনি আরও বলেন, "বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় ভারতবর্ষকে পথ দেখিয়ে আসছে । আগামীতেও পথ দেখাবে ৷ গঙ্গা যেমন দূর দূরান্ত পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে, তেমন শান্তিনিকেতনের পড়ুয়ারা জ্ঞান ভাণ্ডার নিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয় ৷ বিশ্বভারতী এমন একটা প্রতিষ্ঠান, যেখানে বিশ্বও আছে, ভারতও আছে ৷ বিশ্ব শিক্ষার আদানপ্রদান করে গুরুদেবের আদর্শের এই প্রতিষ্ঠান ।" সমাবর্তন শেষে বিশ্বভারতীর অন্যতম কলাভবন ঘুরে দেখেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ৷
আরও পড়ুন: পাঁচ ঘণ্টা আলোচনার পরও দ্বিচারিতা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের! অভিযোগ এসএফআইয়ের