হায়দরাবাদ, 11 মার্চ: দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) তদন্তের মুখে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের (Lalu Prasad Yadav) পুরো পরিবার ৷ তাঁর বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে ৷ লালু-পুত্র তথা বিহারের উপ মুখ্য়মন্ত্রী তেজস্বী যাদবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে ৷ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এই নিয়ে সরব হয়েছে ৷ প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছে ৷ অথচ এখনও এই ইস্যুতে কৌশলী অবস্থান নিয়ে চলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar speaks on Central agencies raids) ৷
এই নিয়ে তাঁকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল ৷ তাঁর কাছে এই নিয়ে বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর সম্পূর্ণ সুযোগ ছিল ৷ কিন্তু তিনি বললেন, "...এটা 2017 সালে হয়েছিল । তারপরে আমরা (জেডিইউ-আরজেডি) আলাদা পথে চলে গেলাম... পাঁচ বছর কেটে গেল এবং যখন আমরা একসঙ্গে এসেছি, আবার অভিযান হয়েছে । কী আর বলব ?..."
প্রসঙ্গত, 2012 সালের পর এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নীতীশ কুমার ৷ 2015 সালে আরজেডি ও কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোটের সরকার তৈরি করেন বিহারে ৷ দু’বছর সেই সরকার ভেঙে দিয়ে বিজেপির সঙ্গে ফের জোট করেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনিই থেকে যান ৷ 2020 সালে ওই জোটই ভোটে জেতে ৷ কিন্তু 2022-এর মাঝামাঝি তিনি আবার বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেন ৷ ফের আরজেডির সঙ্গে জোট করে সরকার গড়েন ৷
রাজনৈতিক মহলের অভিমত ছিল, বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীতীশ ৷ তাঁকে 2024 সালের লোকসভা ভোটে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবেও মনে করেছিলেন কেউ কেউ ৷ গত ক’মাসে তাঁকেও বেশ কয়েকবার বিজেপির সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে ৷ কিন্তু যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে বিজেপি বিরোধীদের হেনস্তা করছে বলে বারবার অভিযোগ করছেন মমতা-কেজরিওয়ালরা, তখন তেজস্বীকে সিবিআই তলব ও লালুর বাড়িতে সিবিআই হানা নিয়ে নীতীশের এই হেঁয়ালি বিহারের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের জল্পনা তৈরি হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, যে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে ৷ তা হয়েছিল 2004-05 সালে ৷ সেই সময় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন লালু প্রসাদ যাদব ৷ ফলে এই নিয়ে সিবিআই কোনও পদক্ষেপ করলে, সেখানে জেডিইউ-এ গাঁয়ে আঁচ আসবে না ৷ প্রশ্ন উঠছে, সেই কারণেই কি তেজস্বীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছেন নীতীশ ?
রাজনৈতিক মহল বলছে, বিহারের মসনদে দীর্ঘদিন রয়েছেন নীতীশ কুমার ৷ তাঁর নামে এখনও পর্যন্ত বড় কোনও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি ৷ ফলে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা তেজস্বীর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদও করতে পারেন ৷ কিন্তু তাহলে কি তিনি আবার বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাবেন ? নাকি সরকার ভেঙে আবার ভোটে যাবেন ? কিংবা তেজস্বীর সঙ্গেই সরকার চালিয়ে যাবেন ? আগামী কয়েকমাসের মধ্য়েই এই বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: গর্ভবতী পুত্রবধূকে 15 ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছে ইডি, অভিযোগ লালুর; পাশে খাড়গে