ETV Bharat / bharat

গন্ধ ঠেকাতে আতরের ব্যবহার, এক বছর ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রাখল দুই মেয়ে

Daughters Stayed with Mother Dead Body: দুই মেয়ে মায়ের দেহ এক বছর বাড়িতেই রেখে দিয়েছিল ৷ আশপাশের লোকজনদের দাবি, ঘটনার কথা কারও কাছে পরিষ্কার ছিল না ৷ এমনকী এই ঘটনা ঘটেছে তাও অজানাই ছিল প্রতিবেশীদের কাছে, এমনটাই দাবি তাদের ৷ গন্ধ ঢাকতে আতর, ধুপকাঠি ব্যবহার করত ৷

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 30, 2023, 10:13 PM IST

বারাণসী, 30 নভেম্বর: প্রায় এক বছর ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রেখেছিল দুই মেয়ে ৷ দেহের সঙ্গে বসবাস করছিল তারা। পুলিশের দাবি, এক বছর আগে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। বুধবার রাতে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর পুলিশ এখন পরবর্তী ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ দেহ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি দুই মেয়েকে পাশের একটি বাড়িতে নিরাপদে রাখা হয়েছে। বুধবার রাতে লঙ্কা থানা এলাকার মাদারওয়া এলাকার এক বাড়ি থেকে উষা ত্রিপাঠির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷

ঘটনার পর পরিবারের অন্য সদস্যরাও এসেছে ৷ যদিও কেউই বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে প্রস্তুত নয় ৷ আশেপাশের লোকজন ছাড়াও দূর থেকেও মানুষ ঘটনার খবর নিতে এখানে ছুটে এসেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, মৃতদেহ এক বছর ধরে বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেশীরা মৃত ব্যক্তিরা আভাস পেলেন না কী করে?

ঘটনার বিষয়ে আশপাশের লোকজনদের দাবি, ঘটনার কথা কারও কাছে পরিষ্কার ছিল না ৷ এমনকী এই ঘটনা ঘটেছে তাও অজানাই ছিল প্রতিবেশীদের কাছে, এমনটাই দাবি তাদের ৷ দুই মেয়ে মায়ের দেহ এক বছর বাড়িতেই রেখে দিয়েছিল ৷ অন্যদিকে, তাদের এখন পাশের বাড়িতে রাখা হলেও সেই বাড়ির লোকেরাও ভীত হয়ে পড়েছেন ৷ কতদিন তাদের রাখতে হবে সে বিষয়েও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না সেই বাড়ির লোকেরা।

তবে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছে, তাদের অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে ৷ অন্যদিকে প্রতিবেশীরা এই দুই মেয়ের কর্মকাণ্ডে রীতিমতো আতঙ্কে ৷ প্রতিবেশীরা জানান, ঊষার দুই মেয়ে পল্লবী ও বৈষ্ণবী গত 20 দিন ধরে স্বাভাবিক কাজকর্মই করছিলেন। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা নিয়মিত বাড়ি থেকেও বের হতেন। প্রতিবেশী পাপ্পু সিং জানান, গত 15 দিন ধরে তার বাড়ির লোক সকাল-সন্ধ্যা খাবার দিয়েছে। তারা মায়ের অবস্থার খোঁজ-খবরও নিত বলে পাপ্পুর দাবি ৷

পাপ্পু জানান, প্রায় দুই-তিন বছর আগে বালিয়ার বাসিন্দা এই পরিবারের দুই সন্তানের বাবা ছেড়ে চলে যান ৷ এরপর থেকে ঊষা তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে এই বাপের বাড়িতেই থাকতেন। ঊষা ছাড়া তার দুই বোনেরও এই বাড়িতে ভাগ ছিল ৷ যদিও তাঁর বাবা পুরো বাড়িটাই ঊষাকে দিয়ে দিয়েছিলেন। প্রায় এক মাস আগে ঊষার ছোট বোন লখনউতে মেয়ের বিয়ের আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন ৷ সেই সময় ঊষার দুই মেয়েই দরজা খোলেনি। প্রায় আধাঘণ্টা অপেক্ষার পর তারা চলে যান। এরপরই পুলিশে খবর দেওয়া হয় ৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে গোটা বিষয়টি জানা যায়। আশপাশের লোকেরা জানিয়েছে, প্রায় ছয় মাস আগেও এ ব্যাপারে থানায় খবর দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু সেসময় পুলিশ আসেনি ৷ বিষয়টি আরও আগেই প্রকাশ হয়ে যেত। মৃতদেহের গন্ধ নিয়ে প্রতিবেশীদের দাবি, বাড়িটি গঙ্গার ধারে হওয়ায় সেভাবে গন্ধ মেলেনি।

প্রতিবেশী অনিতা জানান, মেয়ে দুটিই তাদের বাড়িতে আছে ৷ তাদের মানসিক অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে ভালো না বলেও জানান তিনি। তার আরও দাবি, আতরের বোতল এবং ধূপকাঠির প্যাকেট প্রায়শই তাদের বাড়ির বাইরে পড়ে থাকতে দেখা যেত। গন্ধ ঢাকতেই তারা রুম ফ্রেশনার, পারফিউম এবং ধূপকাঠি ব্যবহার করত।

আরও পড়ুন

  1. সুরাতের শিল্পাঞ্চলে রাসায়নিক কারখানায় বিধ্বংসী আগুন ! অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত 7 শ্রমিক
  2. জন্মের পরই মা'র মৃত্যুতে শেখা হয়নি শিকার, মানুষের উপর আক্রমণে সারাজীবন বন্দি বাঘ ছানারা
  3. নৈবেদ্য-প্রসাদ সবই বই, ঈশ্বর হল জ্ঞান ! পাহাড়ের কোলে এই মন্দিরে সব ধর্মের অবারিত দ্বার

বারাণসী, 30 নভেম্বর: প্রায় এক বছর ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রেখেছিল দুই মেয়ে ৷ দেহের সঙ্গে বসবাস করছিল তারা। পুলিশের দাবি, এক বছর আগে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। বুধবার রাতে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর পুলিশ এখন পরবর্তী ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ দেহ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি দুই মেয়েকে পাশের একটি বাড়িতে নিরাপদে রাখা হয়েছে। বুধবার রাতে লঙ্কা থানা এলাকার মাদারওয়া এলাকার এক বাড়ি থেকে উষা ত্রিপাঠির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷

ঘটনার পর পরিবারের অন্য সদস্যরাও এসেছে ৷ যদিও কেউই বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে প্রস্তুত নয় ৷ আশেপাশের লোকজন ছাড়াও দূর থেকেও মানুষ ঘটনার খবর নিতে এখানে ছুটে এসেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, মৃতদেহ এক বছর ধরে বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেশীরা মৃত ব্যক্তিরা আভাস পেলেন না কী করে?

ঘটনার বিষয়ে আশপাশের লোকজনদের দাবি, ঘটনার কথা কারও কাছে পরিষ্কার ছিল না ৷ এমনকী এই ঘটনা ঘটেছে তাও অজানাই ছিল প্রতিবেশীদের কাছে, এমনটাই দাবি তাদের ৷ দুই মেয়ে মায়ের দেহ এক বছর বাড়িতেই রেখে দিয়েছিল ৷ অন্যদিকে, তাদের এখন পাশের বাড়িতে রাখা হলেও সেই বাড়ির লোকেরাও ভীত হয়ে পড়েছেন ৷ কতদিন তাদের রাখতে হবে সে বিষয়েও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না সেই বাড়ির লোকেরা।

তবে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছে, তাদের অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে ৷ অন্যদিকে প্রতিবেশীরা এই দুই মেয়ের কর্মকাণ্ডে রীতিমতো আতঙ্কে ৷ প্রতিবেশীরা জানান, ঊষার দুই মেয়ে পল্লবী ও বৈষ্ণবী গত 20 দিন ধরে স্বাভাবিক কাজকর্মই করছিলেন। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা নিয়মিত বাড়ি থেকেও বের হতেন। প্রতিবেশী পাপ্পু সিং জানান, গত 15 দিন ধরে তার বাড়ির লোক সকাল-সন্ধ্যা খাবার দিয়েছে। তারা মায়ের অবস্থার খোঁজ-খবরও নিত বলে পাপ্পুর দাবি ৷

পাপ্পু জানান, প্রায় দুই-তিন বছর আগে বালিয়ার বাসিন্দা এই পরিবারের দুই সন্তানের বাবা ছেড়ে চলে যান ৷ এরপর থেকে ঊষা তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে এই বাপের বাড়িতেই থাকতেন। ঊষা ছাড়া তার দুই বোনেরও এই বাড়িতে ভাগ ছিল ৷ যদিও তাঁর বাবা পুরো বাড়িটাই ঊষাকে দিয়ে দিয়েছিলেন। প্রায় এক মাস আগে ঊষার ছোট বোন লখনউতে মেয়ের বিয়ের আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন ৷ সেই সময় ঊষার দুই মেয়েই দরজা খোলেনি। প্রায় আধাঘণ্টা অপেক্ষার পর তারা চলে যান। এরপরই পুলিশে খবর দেওয়া হয় ৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে গোটা বিষয়টি জানা যায়। আশপাশের লোকেরা জানিয়েছে, প্রায় ছয় মাস আগেও এ ব্যাপারে থানায় খবর দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু সেসময় পুলিশ আসেনি ৷ বিষয়টি আরও আগেই প্রকাশ হয়ে যেত। মৃতদেহের গন্ধ নিয়ে প্রতিবেশীদের দাবি, বাড়িটি গঙ্গার ধারে হওয়ায় সেভাবে গন্ধ মেলেনি।

প্রতিবেশী অনিতা জানান, মেয়ে দুটিই তাদের বাড়িতে আছে ৷ তাদের মানসিক অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে ভালো না বলেও জানান তিনি। তার আরও দাবি, আতরের বোতল এবং ধূপকাঠির প্যাকেট প্রায়শই তাদের বাড়ির বাইরে পড়ে থাকতে দেখা যেত। গন্ধ ঢাকতেই তারা রুম ফ্রেশনার, পারফিউম এবং ধূপকাঠি ব্যবহার করত।

আরও পড়ুন

  1. সুরাতের শিল্পাঞ্চলে রাসায়নিক কারখানায় বিধ্বংসী আগুন ! অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত 7 শ্রমিক
  2. জন্মের পরই মা'র মৃত্যুতে শেখা হয়নি শিকার, মানুষের উপর আক্রমণে সারাজীবন বন্দি বাঘ ছানারা
  3. নৈবেদ্য-প্রসাদ সবই বই, ঈশ্বর হল জ্ঞান ! পাহাড়ের কোলে এই মন্দিরে সব ধর্মের অবারিত দ্বার
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.