ETV Bharat / bharat

Uttarkashi Tunnel Collapse: আটক শ্রমিকদের উদ্ধারে স্টিলের বিশাল পাইপ, অক্সিজেন-জল সরবরাহের পরামর্শ চিকিৎকদের

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 14, 2023, 10:15 AM IST

Updated : Nov 14, 2023, 10:34 AM IST

রবিবার ভোর 4টে নাগাদ ভূমিধসে ভেঙে পড়ে একটি টানেল ৷ উত্তরকাশীর এই টানেলে আটকে রয়েছেন প্রায় 40 জন শ্রমিক ৷ তাঁদের অক্সিজেন, জল, হালকা খাবার দেওয়া হচ্ছে ৷ এবার উদ্ধারকার্যে পৌঁছল ড্রিল মেশিন, স্টিলের বড় পাইপ ৷

ETV Bharat
উত্তরকাশীতে ভেঙে পড়া টানেলে চলছে উদ্ধাকার্য

উত্তরকাশী, 14 নভেম্বর: টানেলের ভিতরে এখনও আটকে প্রায় 40 জন শ্রমিক ৷ মঙ্গলবার ভোরে উত্তরকাশীর ওই টানেলে পৌঁছল একাধিক যন্ত্রপাতি ৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ড্রিল মেশিনের মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে তার মধ্যে দিয়ে 900 মিমি ব্যাসের বিশাল স্টিল পাইপ প্রবেশ করানো হবে ৷ ওই পাইপের মধ্যে দিয়ে দু'দিন ধরে আটকে থাকা শ্রমিকদের দ্রুত বের করার চেষ্টা করা হবে ৷

রবিবার ভোর 4টে নাগাদ এই সাড়ে 4 কিমি দীর্ঘ উত্তরকাশীর টানেলটির একাংশ ভেঙে পড়ে ৷ সোমবার থেকে সেখানে আটকে থাকা শ্রমিকদের অক্সিজেন, জল এবং হালকা খাবারদাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের আধিকারিক রঞ্জিত কুমার সিনহা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত বা বুধবারের মধ্যে ওই শ্রমিকদের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হবে ৷ আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ৷ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ওই অন্ধকার টানেলের মধ্যে সুস্থ থাকাটা প্রায় অসম্ভব ৷ তাই শ্রমিকদের অনবরত জল, অক্সিজেন, খাবারদাবার দিয়ে যাওয়াটা এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কাজ ৷

উত্তরকাশীর স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তা জানিয়েছেন, টানেলের কাছে ইতিমধ্যে 6 শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে ৷ উদ্ধার হওয়ার পরপরই ওই শ্রমিকদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে 10টি অ্যাম্বুলেন্স । রয়েছে চিকিসকদের বিশেষ দল ৷ ডিস্ট্রিক্ট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই শ্রমিকদের মধ্যে 15 জন ঝাড়খণ্ডের, 8 জন উত্তরপ্রদেশের, 5 জন ওড়িশার, 4 জন বিহার, 3 জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। উত্তরাখণ্ড ও অসমেরও 2 জন করে বাসিন্দা আটকে রয়েছেন । হিমাচলপ্রদেশের 1 জন বাসিন্দাও আটকে রয়েছেন ৷ এই টানেলটি তৈরির দায়িত্বে রয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড বা এনএইচআইডিসিএল ৷

কীভাবে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত ?

ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন ভূতত্ত্ববিদ সুশীল কুমার জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডের মতো একটি পাহাড়ি এলাকায় নির্মাণকার্য চালানোর সময় নির্মাতা সংস্থাটির আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল ৷ তিনি বলেন, "যমুনোত্রী ন্যাশনাল হাইওয়েতে সিল্কইয়ারা এবং পোলগাঁওয়ের মধ্যে 4 হাজার 531 মিটার দীর্ঘ টানেল তৈরি হচ্ছে ৷ এর ফলে যমুনোত্রী এবং গঙ্গোত্রী ধামের মধ্যে দূরত্ব 25 কিলোমিটার কমবে ৷ যদিও এখনও পর্যন্ত সিল্কইয়ারার দিকে 2 হাজার 340 মিটার টানেল তৈরি হয়েছে ৷ আর বারকোটের দিকে 1 হাজার 750 মিটার ৷ সিল্কইয়ারার দিকে টানেলের 270 মিটার বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ সেখানে 30 মিটার এলাকাজুড়ে ইট-বালি-সিমেন্টের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে ৷ আর এর ফলে টানেলে কর্মরত শ্রমিকরা আটকে পড়েছেন ৷"

টানেলের একাংশ ভেঙে পড়ল কেন ?

এর কারণ হিসেবে ভূতত্ত্ববিদ জানান, ভারতে এটাই প্রথম টানেল নয় ৷ মনে রাখতে হবে, উত্তরাখণ্ড নরম পাথর বা সফ্ট রক দিয়ে তৈরি ৷ এই পাহাড়ি এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করার সময় বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত ৷ এক্ষেত্রে একটি পাথর আরেকটি পাথরের উপর ভর করে থাকে ৷ তাই কোনও একটি পাথর আচমকা সরে গেলে আরেকটি পাথর পড়ে যাবে ৷ আর উত্তরকাশীর টানেলে সেটাই হয়েছে ৷

টানেল নির্মাণের সময় একটি পাস ব্লক থাকে ৷ এই ব্লক দিয়ে জরুরিভিত্তিতে শ্রমিকদের উদ্ধার করা যায় ৷ অনেক সময়ই নির্মাতা সংস্থাগুলি এই পাস ব্লকের জায়গা রাখে না ৷ উত্তরকাশীর এই টানেলে পাস ব্লক ছিল কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে ৷

আরও পড়ুন:

1. উত্তরকাশীর টানেল বিপর্যয় ফেরাল সেই নভেম্বরেরই মহাবীর খনি দুর্ঘটনার স্মৃতি

2. টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকরা 'নিরাপদ', উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী

3. উত্তরকাশীতে টানেল দুর্ঘটনায় আটকে অন্তত 40 শ্রমিক! উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী

উত্তরকাশী, 14 নভেম্বর: টানেলের ভিতরে এখনও আটকে প্রায় 40 জন শ্রমিক ৷ মঙ্গলবার ভোরে উত্তরকাশীর ওই টানেলে পৌঁছল একাধিক যন্ত্রপাতি ৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ড্রিল মেশিনের মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে তার মধ্যে দিয়ে 900 মিমি ব্যাসের বিশাল স্টিল পাইপ প্রবেশ করানো হবে ৷ ওই পাইপের মধ্যে দিয়ে দু'দিন ধরে আটকে থাকা শ্রমিকদের দ্রুত বের করার চেষ্টা করা হবে ৷

রবিবার ভোর 4টে নাগাদ এই সাড়ে 4 কিমি দীর্ঘ উত্তরকাশীর টানেলটির একাংশ ভেঙে পড়ে ৷ সোমবার থেকে সেখানে আটকে থাকা শ্রমিকদের অক্সিজেন, জল এবং হালকা খাবারদাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের আধিকারিক রঞ্জিত কুমার সিনহা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত বা বুধবারের মধ্যে ওই শ্রমিকদের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হবে ৷ আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ৷ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ওই অন্ধকার টানেলের মধ্যে সুস্থ থাকাটা প্রায় অসম্ভব ৷ তাই শ্রমিকদের অনবরত জল, অক্সিজেন, খাবারদাবার দিয়ে যাওয়াটা এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কাজ ৷

উত্তরকাশীর স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তা জানিয়েছেন, টানেলের কাছে ইতিমধ্যে 6 শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে ৷ উদ্ধার হওয়ার পরপরই ওই শ্রমিকদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে 10টি অ্যাম্বুলেন্স । রয়েছে চিকিসকদের বিশেষ দল ৷ ডিস্ট্রিক্ট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই শ্রমিকদের মধ্যে 15 জন ঝাড়খণ্ডের, 8 জন উত্তরপ্রদেশের, 5 জন ওড়িশার, 4 জন বিহার, 3 জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। উত্তরাখণ্ড ও অসমেরও 2 জন করে বাসিন্দা আটকে রয়েছেন । হিমাচলপ্রদেশের 1 জন বাসিন্দাও আটকে রয়েছেন ৷ এই টানেলটি তৈরির দায়িত্বে রয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড বা এনএইচআইডিসিএল ৷

কীভাবে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত ?

ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন ভূতত্ত্ববিদ সুশীল কুমার জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডের মতো একটি পাহাড়ি এলাকায় নির্মাণকার্য চালানোর সময় নির্মাতা সংস্থাটির আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল ৷ তিনি বলেন, "যমুনোত্রী ন্যাশনাল হাইওয়েতে সিল্কইয়ারা এবং পোলগাঁওয়ের মধ্যে 4 হাজার 531 মিটার দীর্ঘ টানেল তৈরি হচ্ছে ৷ এর ফলে যমুনোত্রী এবং গঙ্গোত্রী ধামের মধ্যে দূরত্ব 25 কিলোমিটার কমবে ৷ যদিও এখনও পর্যন্ত সিল্কইয়ারার দিকে 2 হাজার 340 মিটার টানেল তৈরি হয়েছে ৷ আর বারকোটের দিকে 1 হাজার 750 মিটার ৷ সিল্কইয়ারার দিকে টানেলের 270 মিটার বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ সেখানে 30 মিটার এলাকাজুড়ে ইট-বালি-সিমেন্টের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে ৷ আর এর ফলে টানেলে কর্মরত শ্রমিকরা আটকে পড়েছেন ৷"

টানেলের একাংশ ভেঙে পড়ল কেন ?

এর কারণ হিসেবে ভূতত্ত্ববিদ জানান, ভারতে এটাই প্রথম টানেল নয় ৷ মনে রাখতে হবে, উত্তরাখণ্ড নরম পাথর বা সফ্ট রক দিয়ে তৈরি ৷ এই পাহাড়ি এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করার সময় বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত ৷ এক্ষেত্রে একটি পাথর আরেকটি পাথরের উপর ভর করে থাকে ৷ তাই কোনও একটি পাথর আচমকা সরে গেলে আরেকটি পাথর পড়ে যাবে ৷ আর উত্তরকাশীর টানেলে সেটাই হয়েছে ৷

টানেল নির্মাণের সময় একটি পাস ব্লক থাকে ৷ এই ব্লক দিয়ে জরুরিভিত্তিতে শ্রমিকদের উদ্ধার করা যায় ৷ অনেক সময়ই নির্মাতা সংস্থাগুলি এই পাস ব্লকের জায়গা রাখে না ৷ উত্তরকাশীর এই টানেলে পাস ব্লক ছিল কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে ৷

আরও পড়ুন:

1. উত্তরকাশীর টানেল বিপর্যয় ফেরাল সেই নভেম্বরেরই মহাবীর খনি দুর্ঘটনার স্মৃতি

2. টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকরা 'নিরাপদ', উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী

3. উত্তরকাশীতে টানেল দুর্ঘটনায় আটকে অন্তত 40 শ্রমিক! উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী

Last Updated : Nov 14, 2023, 10:34 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.