প্রয়াগরাজ, 24 অক্টোবর: ভিনধর্মের এক যুগল লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার জন্য পুলিশি নিরাপত্তা চেয়ে এলাহবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৷ কিন্তু তাঁদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত ৷ এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, লিভ-ইন সম্পর্ক সাধারণ সাময়িক সময় কাটানো ও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি মোহ থেকেই তৈরি হয় ৷ এর বাইরে এই ধরনের সম্পর্ক তৈরির কোনও কারণ নেই ৷
উল্লেখ্য, মেয়েটি ও ছেলেটি গত দু’মাস ধরে তাঁরা লিভ-ইন করছেন ৷ মেয়েটির পরিবারের তরফে ছেলেটির বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ ফলে শুরু হয়েছে ফৌজদারি মামলা ৷ সেই মামলা খারিজ ও পুলিশি নিরাপত্তার জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই যুগল ৷ কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি রাহুল চতুর্বেদী ও বিচারপতি মো. আজহার হোসেন ইদ্রিসি সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ৷
তবে আদালত উল্লেখ করেছে যে সুপ্রিম কোর্ট বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে লিভ-ইন সম্পর্কের বৈধতা দিয়েছে ৷ কিন্তু এক্ষেত্রে যেহেতু দু’জনের সম্পর্কের মেয়াদ মাত্র দু’মাস এবং দু’জনের বয়স 20 থেকে 22-এর মধ্যে তাই আদালত মনে করে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক তৈরির মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের তৈরি হয়নি ৷
আদালত মনে করে, এই ধরনের সম্পর্ক স্থিতিশীলতা এবং আন্তরিকতার চেয়ে মোহের পরিমাম বেশি । যতক্ষণ না দম্পতি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং তাদের সম্পর্কের নাম দিচ্ছে বা তারা একে অপরের প্রতি আন্তরিক হচ্ছে, ততক্ষণ আদালত এই ধরনের সম্পর্ক নিয়ে কোনও মতামত দেবে না বলে আদালত জানিয়েছে ৷
মেয়েটির আইনজীবী আদালতে জানান যে তাঁর মক্কেলের বয়স 20 বছরের বেশি, যা আইন অনুসারে সাবালক হিসাবে বিবেচিত এবং ভবিষ্যত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার মেয়েটির রয়েছে । মেয়েটি সংশ্লিষ্ট যুবককে তাঁর প্রেমিক হিসাবে বেছে নিয়েছেন এবং তিনি তাঁর সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্ক রাখতে চান ।
মেয়েটির আত্মীয়ের আইনজীবী মেয়েটির আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন ৷ তাঁর বক্তব্য, মেয়েটির প্রেমিক রোড-সাইড রোমিও এবং একজন ভবঘুরে ৷ ছেলেটি উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার আইনের অধীনে একটি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ৷ ফলে মেয়েটির জীবন ওই ছেলেটি নষ্ট করে দেবে ৷ তাঁদের সম্পর্কের কোনও ভবিষ্যৎ নেই ৷
আদালত যে উভয় পক্ষের দ্বারা উপস্থাপিত তথ্য নোট করে ৷ তার পর নির্দেশ দেওয়ার সময় এই ধরনের লিভ-ইন সম্পর্কের বিষয়ে আপত্তি প্রকাশ করেন বিচারপতিরা । আদালত জানিয়েছে, এই ধরনের সম্পর্ক আন্তরিকতা ছাড়াই মোহ এবং টাইম পাসের জন্য তৈরি হয় ৷ ফলে এই ধরনের সম্পর্ক অস্থায়ী এবং ভঙ্গুর ৷ সেই কারণে আদালত তদন্তের পর্যায়ে আবেদনকারীকে কোনও সুরক্ষা দিতে অস্বীকার করে । পাশাপাশি এই নির্দেশের যাতে ভুল ব্যাখ্যা না হয়, সেই বিষয়টিও আদালত নিশ্চিত করতে বলেছে ৷
আরও পড়ুন: ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় লিভ-ইন পার্টনারকে খুন! বেপাত্তা যুবতীর দেহ