দুর্গাপুর, 26 নভেম্বর: "ভুল করে হয়ে গিয়েছে", থানা থেকে আদালতে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বললেন মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল ওরফে মিত্তিল মণ্ডল ৷ দুর্গাপুরের ফরিদপুর বাউরি পাড়ায় যুবক খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে সে ৷ 23 নভেম্বর, বৃহস্পতিবার ছোটন দুবের (25) রক্তাক্ত পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ এই খুনের ঘটনায় 24 নভেম্বর, শুক্রবারই গ্রেফতার হয় তার প্রেমিকা পূজা পাণ্ডে ৷ সে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিল ৷ এরপর শনিবার মালদা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে এই খুনে আরেক অভিযুক্ত পূজার দাদা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলকে ৷ পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে পূজা অবশ্য প্রথমে দাদার নাম মৃত্যুঞ্জয় পাণ্ডে বলেছিল ৷ পরে আধার কার্ড দেখে পুলিশ তার আসল নাম-পরিচয় জানতে পারে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোটন দুবে আর বিবাহিত পূজা পাণ্ডের মধ্যে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল ৷ এই সুযোগে ছোটন পূজার ঘনিষ্ঠ মহূর্তের ছবি দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেল করত বলে জানা গিয়েছে ৷ আর সেই সমস্যার হিল্লে করতেই সুদূর রাজস্থান থেকে দুর্গাপুরে এসেছিল দাদা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল ৷ সে ছোটনের ওই মোবাইলটি নিয়ে নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল ৷ তবে ছোটনকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল না, এমনটাই সে পুলিশকে জানিয়েছে ৷ আদালতে ওঠার আগে ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির প্রশ্নের উত্তরে মিত্তিন মণ্ডল বলে, "আমার ভুল হয়ে গেল ৷ আমি খুন করতে চাইনি ৷ আমি মোবাইলে আমার বোনের আপত্তিকর ছবিগুলি নিয়ে নিতে চেয়েছিলাম ।"
পূজা মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি তার পরিবারের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছিল ছোটন দুবে ৷ স্বভাবতই এতে অশান্তির মুখে পড়তে হয় পূজাকে ৷ সে দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগ এলাকার বাসিন্দা ৷ স্বামী কিশোর পাণ্ডে স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারে ছোটন দুবের মোবাইলে থাকা ছবি দেখে ৷ এই অবস্থায় বিয়ে বাঁচাতে মরিয়া পূজা ছোটনের সঙ্গে পাঁচ বছরের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল ৷
সেই সময় ছোটন দুবে তার মোবাইলে থাকা ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে পূজাকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে বলে অভিযোগ ৷ বহুবার চাপ দিয়ে পূজার কাছ থেকে ছোটন টাকাও নিয়েছিল বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ৷ পূজার দাদা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল রাজস্থানের একটি হোটেলে কাজ করত ৷ সে সর্বসাকুল্যে 16-18 হাজার টাকা বেতন পেত ৷
পূজা ছাড়া মৃত্যুঞ্জয় ওরফে মিত্তিন মণ্ডলের এক দিদিও ছিল ৷ সে তার দিদি ও বোনকে এতটাই ভালবাসে যে তার বেতনের বেশিরভাগ টাকাই তাদের দিয়ে দিত ৷ কয়েক মাস আগে মৃত্যুঞ্জয় ওরফে মিত্তিনের বড় দিদি মারা যায় ৷ এদিকে পূজা প্রায়শই দাদার কাছে টাকা চাইতে শুরু করে ৷ তখন মিত্তিন পূজাকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে ছোটন তাকে টাকা চেয়ে ব্ল্যাকমেল করছে ৷ এর সঙ্গে পূজার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করছে ৷