কলকাতা, 17 মে: দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াইয়ের পর সাফল্য পেলেন প্রার্থীরা। 71 জনকে দু'মাসের মধ্যে প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে প্রার্থীদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অন্যায় করেছে বলেও বুধবার নির্দেশে জানান ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷
বুধবার শুনানি শেষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, এই প্রার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এরপরই দু'মাসের মধ্যে এই প্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে বলেও সাফ নির্দেশ দেন বিচারপতি। আদালত সুত্রে খবর, 2009 সালে প্রাথমিকে নিয়োগের তোড়জোড় শুরু হয় হাওড়া জেলায়। এরপর 2010 সালের 22 এপ্রিল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পর বর্তমান রাজ্য সরকার 2012 সালে নিয়োগের সেই প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় বলে অভিযোগ। এমনকী নিয়োগের বিষয়টিকে বেআইনি বলেও ঘোষণা করে বর্তমান রাজ্য সরকার।
এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন চাকরিপ্রার্থীরা ৷ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে ফের পরীক্ষা হয়। 2014 সালে লিখিত পরীক্ষা হয়। এরপর অ্যাপটিটিউড টেস্টও হয়। প্রার্থীরা সকলেই অংশগ্রহণ করে ওই পরীক্ষায়। তথ্য অনুযায়ী, সকলে পাশও করে পরীক্ষায়। আনুমানিক প্রায় এক হাজার 200 শূন্যপদ ছিল। অভিযোগ, সব কিছুর পরও তাদের নিয়োগ করা হয়নি ৷
আরও পড়ুন: এগরায় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে এনআইএ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা শুভেন্দুর
2022 সালে ফের আদালতে মামলা করেন সুব্রত জানা, সুব্রত রক্ষীত-সহ একাধিক বঞ্চিত চাকরি প্রার্থী। তাদের অভিযোগ, যাদের কাট অফ মার্কস নেই, আবেদন করেনি, লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণও করেনি, তাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। অথচ মামলাকারী প্রার্থীরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিয়োগ করেনি হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। যদিও যারা 2014 সাল থেকে শিক্ষক হিসাবে চাকরি করছেন তাদের তরফে আইনজীবী অনিন্দ্য বসু জানান, "তাদের সমস্ত রকম নথিপত্র আছে। তারা পরীক্ষা দিয়েই যোগ্য বিবেচিত হয়ে চাকরি করছেন।" এদিন বিচারপতি অবশ্য কোনও চাকরিরত শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেননি। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিকে 36 হাজার শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে নতুন করে ইন্টারভিউ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও পরে সেই রায় সংশোধন হয়ে সংখ্যাটা 32 হাজারে নামে ৷ 2014 সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন তারা।